শীতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার বিরুদ্ধে অভিভাবক ঐক্য ফোরাম

শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া এবং এইচএসসি পরীক্ষাসহ কোনো পরীক্ষাই নেয়া ঠিক হবে না বলে মনে করছে অভিভাবক ঐক্য ফোরাম। করোনার ভ্যাকসিন বাজারে না আসা কিংবা সহজলভ্য না হওয়া পর্যন্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা বা পরীক্ষা নেওয়ার বিপক্ষে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের এ সংগঠন।

শীতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার বিরুদ্ধে অভিভাবক ঐক্য ফোরাম

ফোরামের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা মো. জিয়াউল কবির দুলু এবং প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা মো. আতিকুর রহমান টুলু মঙ্গলবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ কথা বলেন।

এতে বলা হয়, অভিভাবক ঐক্য ফোরাম মনে করে, করোনার ভ্যাকসিন যতক্ষণ পর্যন্ত বাজারে না আসবে কিংবা তা বাজারে সহজলভ্য না হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত মৃত্যুর ঝুঁকি নিয়ে সন্তানদের কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া উচিত হবে না। সেইসঙ্গে এইচএসসি ও অন্য যেকোনো পরীক্ষা নেয়া ঠিক হবে না।

অভিভাবক ঐক্য ফোরাম

ফোরামের পক্ষ থেকে বলা হয়, শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকদের জীবনের নিরাপত্তার কথা বিবেচনায় নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে গত ১৭ মার্চ থেকে দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হয়েছে। সুতরাং ১৭ মার্চের আগের অবস্থা না ফেরা পর্যন্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা বা পরীক্ষা নেওয়া উচিত হবে না।

বিবৃতিতে প্রশ্ন উত্থাপন করা হয়েছে যে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দিলে কিংবা পরীক্ষা নিলে শিক্ষার্থী, পরীক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকরা যদি ভাইরাসটিতে সংক্রমিত হন অথবা আক্রান্ত হয়ে মারা যান, তাহলে এর দায় কে নেবে? বরং বেঁচে থাকলে পরেও আমাদের সন্তানরা লেখাপড়া ও পরীক্ষা দিতে পারবে বলে উল্লেখ করে অভিভাবক ফোরাম।

এতে আরো বলা হয়, করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে যে স্বাস্থ্যবিধির কথা বলা হয়েছে, বর্তমানে তা কোথাও মেনে চলা হচ্ছে না। মসজিদে জামাতে নামাজ আদায়ের ক্ষেত্রে বয়স্করাই যেখানে শারীরিক দূরত্ব মেনে চলছেন না, সেখানে স্কুল কিংবা মাদ্রাসায় অধ্যয়নরত ছোট ছোট ছেলে-মেয়েরা কীভাবে স্বাস্থ্যবিধি তথা সামাজিক ও শারীরিক দূরত্ব মেনে চলবে?

শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চললে কোনোভাবেই সামাজিক দূরত্ব মেনে চলা সম্ভব নয় উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়, ১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধু ঘোষিত অসহযোগ আন্দোলনের সময় এবং মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কোনো রকম ক্লাস ও পরীক্ষা হয়নি। স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বাধীন সরকার অটোপাসের ব্যবস্থা করে। এ ছাড়া ১৯৭১ ও ১৯৭২ সালের এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা ৩ থেকে ৪ মাস গ্যাপ দিয়ে নেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়।

ফোরামের দুই নেতা বলেন, সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীই আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন যে, আসছে অক্টোবর ও নভেম্বর মাসে শীত পড়লে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বেড়ে যেতে পারে। তিনি এ বিষয়ে প্রস্তুতি নিতেও বলেছেন।

তাই আমরা আশা করব, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিচক্ষণতার সঙ্গে সবদিক বিবেচনা করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা ও পরীক্ষা নেওয়ার ব্যাপারে সময়পোযোগী নির্দেশনা দেবেন।