দেশে হৃদরোগে বছরে পৌনে ৩ লাখ মানুষের মৃত্যু

বিশ্বজুড়ে মানুষের মৃত্যুর একক কারণ হিসেবে সবচেয়ে উপরে রয়েছে হৃদরোগ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) তথ্যমতে, প্রতি বছর পৃথিবী জুড়ে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ১ কোটি ৭৯ লাখ মানুষ প্রাণ হারায়। যা মোট মৃত্যুর ৩১ শতাংশ। আর বাংলাদেশে প্রতিবছর হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যায় ২ লাখ ৭৭ হাজার ৯৯২ জন।

হৃদরোগ- প্রতীকী ছবি

হৃদরোগে আক্রান্তের ঝুঁকি অনেকখানি বাড়িয়ে তোলে উচ্চমাত্রার ট্রান্সফ্যাট গ্রহণ। শতাংশের দিক যা প্রায় ২১ শতাংশ। আর এটি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর ঝুঁকি ২৮ শতাংশ বৃদ্ধি করে। ট্রান্সফ্যাটজনিত কারণে বিশ্বের যেসব দেশ হৃদরোগের সর্বাধিক মৃত্যুঝুঁকিতে রয়েছে এমন ১৫টি দেশের মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ।

বাংলাদেশে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া মানুষের ৪ দশমিক ৪১ শতাংশের জন্য দায়ী ট্রান্সফ্যাট। এই ট্রান্সফ্যাটের প্রধান উৎস হচ্ছে পিএইচও বা পারশিয়ালি হাইড্রোজেনেটেড অয়েল। যা আমাদের দেশে বনস্পতি ঘি বা ডালডা নামে পরিচিত।

হৃদরোগ- প্রতীকী ছবি

সম্প্রতি ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতাল ও রিসার্চ ইন্সটিটিউটের এক গবেষণা দেখা যায়, দেশের বাজারে প্রচলিত যেসব ঘি বা ডালডা রয়েছে সেগুলোর প্রতি ১০০ গ্রামের মধ্যে সর্বোচ্চ ২০ দশমিক ৯ গ্রাম পর্যন্ত ট্রান্সফ্যাট রয়েছে। যা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সুপারিশকৃত মাত্রার তুলনায় প্রায় ১০ গুণ বেশি। আর এসব উচ্চমাত্রার ট্রান্সফ্যাট গ্রহণের ফলে মানুষের হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়া ও মৃত্যুঝুঁকি দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।

এ বিষয়ে ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনের রোগতত্ত্ব ও গবেষণা বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. সোহেল রেজা চৌধুরী বলেন, খাবারের সঙ্গে উচ্চ মাত্রার ট্রান্সফ্যাট শরীরের মধ্যে প্রবেশ করলে সেটি হৃদযন্ত্রের রক্ত নালিতে চর্বির আস্তরণ সৃষ্টি করে। এতে করে ধীরে ধীরে রক্তনালি সরু হয়ে যায়। যা হৃদযন্ত্রের রক্ত চলাচলে বাধা সৃষ্টি করে। আর এর ফলেই মানুষ হৃদরোগে আক্রান্ত হয় এবং মৃত্যু ঝুঁকিতে পড়ে।

আরেক হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. আফজালুর রহমান বলেন, ক্ষতিকর চর্বিজাতীয় খাবার হলো ট্রান্সফ্যাট। এটি রক্তের মধ্যে থাকা ভালো কোলেস্টেরলের মাত্রা কমিয়ে দেয় এবং যেসব কোলেস্টেরেল খারপ সেগুলোর মাত্রা বাড়িয়ে তোলে। এতে মানুষের হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে।