ভারতে পরিবারের সম্মতি ছাড়াই ধর্ষিতার শেষকৃত্য

দলবদ্ধ নির্যাতনের শিকার হওয়া এক দলিত নারীর শেষকৃত্য সম্পন্ন করেছে ভারতের পুলিশ, এমন অভিযোগ করেছে ওই নির্যাতিত নারীর পরিবার। আইনজ্ঞরা বলছেন, এই ঘটনা কেবল অনৈতিক নয়, বরং আইনিভাবেও এটি জঘন্য অপরাধ।

উত্তর ভারতের হাথরাস জেলায় এই ঘটনাটি ঘটেছে। নির্যাতিত নারীর বয়স ছিলো ১৯ বছর। তিনি উচ্চ-বর্ণের হিন্দুদের দ্বারা ভয়াবহ যৌন নির্যাতনের শিকার হন এবং মারাত্মকভাবে আহত হন। দুই সপ্তাহ দিল্লির একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার পর তার মৃত্যু হয়।

এই ঘটনার বিরুদ্ধে বিক্ষোভকারিরা বলছেন, পুলিশকে অবশ্যই এই রকম অমানবিক ঘটনার ব্যাখ্যা দিতে হবে। এরই মধ্যে ওই নারীকে নির্যাতন করা ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

অভিষেক মাথুর নামে একজন স্থানীয় সাংবাদিক জানিয়েছেন, তিনি দূর থেকে শেষকৃত্য দেখেছেন। তার দাবি, পুলিশ নির্যাতিতের পরিবার ও সংবাদ মাধ্যমকে শেষকৃত্যের বিষয়ে কোনো তথ্য জানায়নি, বরং তারা চেয়েছে পরিবার ও সংবাদ মাধ্যম দূরে থাকুক।

তার মৃতদেহ একদিন মধ্যরাতে উত্তর প্রদেশে তাদের গ্রামের বাড়িতে নেওয়া হয় এবং পুলিশ তার পরিবারকে দ্রুত মৃতদেহের শেষকৃত্য করার জন্য জোর করে। এক পর্যায়ে পরিবারের পক্ষ থেকে দ্রুত শেষকৃত্য সম্পন্ন করার বিষয়ে অস্বীকৃতি জানানো হয়।

নির্যাতিতের ভাই বলেন, “আমরা শেষকৃত্য করতে অস্বীকৃতি জানানোর পর পুলিশ তার মৃতদেহ নিয়ে যায় এবং শেষকৃত্য করে ফেলে।”

ওই অঞ্চলের একজন সরকারি জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা অবশ্য পরিবারের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বরং বলেছেন যে, পরিবারের সম্মতি নেওয়া হয়েছিলো।

স্থানীয় সাংবাদিকটি জানান যে, নির্যাতিতের মা শেষকৃত্যের আগে মৃতদেহ বাড়িতে নিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তার চাওয়াকে পুলিশ গুরুত্ব দেয়নি।

তিনি বলেন, “পরিবার বা সংবাদ মাধ্যম যাতে শেষকৃত্যের কাছাকাছি না যেতে পারে, তা নিশ্চিত করতে পুলিশ একটি মানব-চেইন তৈরি করে এবং তাদেরকে বাধা দেয়।”

নির্যাতিতের ভাই দাবি করেছেন যে, কয়েকজন পুলিশ সদস্য তাদের পরিবারের সাথে অভদ্র আচরণ করেন। তিনি বলেন, “আমাদের সম্মতি ছাড়াই পুলিশ মৃতদেহ দূরে নিয়ে যায়। এই শেষকৃত্যে আমাদের বাবা-মায়ের কোনো সম্মতি ছিলো না। আমরা এমন কি শেষবারের মতো তাকে দেখতেও পারিনি।”

তিনি আরো বলেছেন, মৃতদেহ দেখতে চাওয়ায় পুলিশ নির্যাতিতের পরিবারের সদস্যদের পিটিয়েছে, এমন কি তাদের পেটানো থেকে পরিবারের নারী সদস্যরাও বাদ যাননি।