তুরস্ককে ‘রেড লাইন’ দিয়ে নিষেধাজ্ঞার হুমকি

পূর্ব ভূমধ্যসাগরে গ্যাস অনুসন্ধান ও সমুদ্রসীমা নিয়ে গ্রিসের সঙ্গে উত্তেজনা চলছে তুরস্কের। এটি প্রশমিত হতে না হতেই আর্মেনিয়া-আজারবাইজানের সংঘাতে পরোক্ষভাবে জড়িয়েছে দেশটি। উভয় ইস্যুতেই চড়া গলায় একের পর এক শক্ত বক্তব্য দিচ্ছেন তুর্কি প্রিসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান।

তুর্কি প্রিসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান

এভাবে ইউরোপ ও এশিয়ার বিভিন্ন দেশে নিজেদের প্রভাব বাড়িয়ে তোলার তুর্কি নীতির রাশ টানতে দেশটিকে চাপে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। এ জন্য ‘ভালো ব্যবহারে পুরস্কার আর উস্কানি-চাপ বাড়ালে তিরস্কার’ হিসেবে নিষেধাজ্ঞা আরোপের হুমকি দিয়েছে সংস্থাটি।

গতকাল বৃহস্পতিবার ইউরোপীয় নেতাদের একটি শীর্ষ সম্মেলন হয় ব্রাসেলসে। এতে তুরস্কের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেয়ার দাবি জানায় ২৭টি দেশ। তাদের একটি অস্ট্রিয়া আঙ্কারার বিরুদ্ধে রেড লাইন তৈরি করে নিষেধাজ্ঞা জারির দাবি করে।

এরপর আজ শুক্রবার জার্মানভিত্তিক গণমাধ্যম ডয়চে ভেলে জানায়, তুরস্ক উস্কানি ও চাপের নীতি বন্ধ না করলে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হবে। দেশটি বিভিন্ন আঞ্চলিক বিরোধে জড়িয়ে পড়ায় এ হুমকি দেয়া হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের পতাকা

তুরস্কের সঙ্গে ইইউ ইতিবাচক ও গঠনমূলক সম্পর্ক চায় উল্লেখ করে সংস্থাটির প্রধান উরসুলা ফন ডেয়ার লাইয়েন বলেন, এতে আঙ্কারার স্বার্থও বজায় থাকবে। তারপরও তারা অতীতের মতোই উস্কানি ও চাপের নীতিতে থাকলে আমাদের হাতে থাকা সব ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ ক্ষেত্রে সব ধরনের বিকল্প পথ খোলা থাকবে।

আর তুরস্ক নীতি বদল করলে তাদের ইনসেনটিভ দেয়া হবে জানিয়ে ইইউ কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট আরো বলেন, আঙ্কারার সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি করবে ইইউ। অভিবাসন নীতিরও উন্নয়ন করা হবে।

এদিকে, বেলারুশের ঘটনায় দেশটির ৪০ জন সরকারি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে ইইউ। যদিও সেই তালিকায় নাম নেই বেলারুশ প্রেসিডেন্ট লুকাশেঙ্কোর।

এ নিষেধাজ্ঞাও তুরস্ককে পরোক্ষভাবে চাপে রাখবে বলে মনে করে ইইউ। সেদিকেই ইঙ্গিত করে সংস্থাটির প্রেসিডেন্ট বলেন, সপ্তাহখানেক আগে বেলারুশের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞার কথা বলেছিলাম। সেটি করার মধ্য দিয়ে আমাদের কথার বিশ্বাসযোগ্যতা প্রমাণ হলো।

এই যখন অবস্থা, তখন বৈঠকে ইইউর তীব্র সমালোচনা করে এরদোয়ান বলেছেন, এ সংস্থাটির কাঠামো অকার্যকর, দিগন্তহীন এবং অগভীর। এ জন্যই তারা গ্রিস ও সাইপ্রাসের অহংকারের কাছে দাসে পরিণত হয়েছে। তবে আলোচনা ও বিরোধ মেটানোর ক্ষেত্রে নিজের দায়বদ্ধতার কথাও উল্লেখ করেছেন তিনি।