ভারতে দিনে ৮৭টি, ১৬ মিনিটে একটি ধর্ষণ!

বিশ্বের প্রতিটি দেশেই ধর্ষণের মতো জঘন্য অপরাধ ক্রামগত বেড়েই চলেছে। এ ক্ষেত্রে রীতিমতো ভয়াবহ ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে ভারতের অবস্থা। দেশটির একটি সরকারি সংস্থার প্রতিবেদনে উঠে এসেছে যে, প্রতি ১৬ মিনিটে গড়ে একটি করে ধর্ষণের ঘটনা ঘটছে।

নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে নারীদের প্রতিবাদ

ডয়চে ভেলের খবরে বলা হয়েছে, ভারতের ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরো (এনসিআরবি) ধর্ষণসহ সব ধরনের অপরাধের তথ্য নথিভুক্ত করে থাকে। এ সংস্থার সম্প্রতি প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে ধর্ষণ ও অপরাধের ভয়াবহ চিত্র উঠে এসেছে।

দেশটিতে হিন্দুত্ববাদী বিজেপি টানা দ্বিতীয় দফায় ক্ষমতায় রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিরও দ্বিতীয় মেয়াদের শাসন চলছে। এ আমলের গেলো বছর সেদেশে প্রতিদিন গড়ে ৮৭টি ধর্ষণের ঘটনা ঘটছে।

এনসিআরবির প্রতিবেদন বলছে, ভারতজুড়ে ২০১৯ সালে সরকারি হিসেবেই ৩২ হাজার ৩৩ জন নারী ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। নথিভুক্ত এই হিসেবের বাইরেও এ ধরনের অনেক ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে, যা গণমাধ্যমে প্রকাশ পায়নি বা সামাজিক কারণে গোপন করা হয়েছে।

কেবল ধর্ষণই নয়, এর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে ভারতে নারী নির্যাতনের ঘটনাও। সরকারি নথিতে বলা হয়েছে, গেলো বছরে ৪ লাখ ৫ হাজার ৮৬১ জন নারী নানাভাবে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। তার আগের বছর অর্থাৎ ২০১৮ সালে এ সংখ্যা ছিল ৩ লাখ ৭৮ হাজার ২৩৬। বাস্তবে এই সংখ্যা যে আরো অনেক বেশি, তা সহজেই অনুমেয়।

২৮টি রাজ্য ও ৮টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল নিয়ে চলা ভারতে ধর্ষণের দিক দিয়ে শীর্ষে রয়েছে রাজস্থান। রাজ্যটিতে ২০১৯ সালে ৫ হাজার ৯৯৭টি ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। আর দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা উত্তর প্রদেশে ৩ হাজার ৬৫টি এবং মধ্যপ্রদেশে ২ হাজার ৪৮৫ জন নারী ধর্ষিতা হওয়ায় তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে। তবে নারীর শ্লীলতাহানির ঘটনায় এক নম্বরে রয়েছে উত্তর প্রদেশ।

এ ছাড়া দেশটির রাজধানী নয়া দিল্লিতে প্রতিদিন গড়ে ৩ জন নারী ধর্ষণের শিকার হচ্ছে। দিল্লি রাজ্যে ২০১৯ সালে ২ হাজার ৩৫৫ জন শ্লীলতাহানি ও ৪৫৬ জন যৌন নিগৃহীত হয়েছেন। পরিবারের সদস্য কর্তৃক ১২৫ জন নারী ধর্ষিতা ও ধর্ষণের পর খুন হয়েছের ৮ জন নারী। সব মিলিয়ে দিল্লিতে গেলো বছরের চেয়ে অপরাধ বেড়েছে ২০ শতাংশ।

বিভিন্ন সময় ধর্ষণের যে ঘটনাগুলো আলোড়ন সৃষ্টি করেছে, তার বিরুদ্ধে বিরোধী রাজনৈতিক দল, সামাজিক ও নারী সংগঠনগুলো প্রতিবাদ করলে গেলে বাধা দেয়া হয়। এমন অভিযোগ তুলে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কেবল প্রতিবাদে বাধাই নয়, গ্রেপ্তারের ঘটনাও অহরহ ঘটে থাকে।