সোশ্যাল মিডিয়ায় ক্রিকেটারদের প্রতিবাদের ঝড়

সম্প্রতি সিলেট এমসি কলেজে ধর্ষণ-কাণ্ডে তোলপাড় হয়েছে দেশজুড়ে। ন্যাক্কারজনক ওই ঘটনার দুঃস্বপ্ন কাটিয়ে উঠতে না উঠতে নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে ঘটল লোমহর্ষক আরেকটি ঘটনা প্রকাশ পায়। এক নারীকে বিবস্ত্র করে নির্যাতনের ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়া হয়। দুই ঘটনায় কার্যত উত্তাল বাংলাদেশ।

দেশের সর্বস্তরের মানুষ ধর্ষণের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে উঠেছেন। রাজপথ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সোশ্যাল মিডিয়া তথা সর্বস্তরে ধর্ষকদের বিরুদ্ধে ধীক্কার জানাচ্ছেন প্রতিবাদী মানুষেরা।নারী নির্যাতনের প্রতিবাদ হিসেবে ফেসবুকে অনেকেই ব্ল্যাকআউট উদ্যোগে অংশ নিয়েছেন। পাল্টে ফেলেছেন প্রোফাইল ছবি। নারী সুরক্ষার এই লড়াইয়ে যোগ দিলেন জাতীয় দলের ক্রিকেটাররাও।

দুদিন ধরে ধারাবাহিকভাবে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রতিবাদের ঝড় তুলছেন সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদরা। নারীর প্রতি সম্মান এবং ধর্ষকের প্রতি ঘৃণা এবং সর্বোপরি ধর্ষণের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ গড়ে তুলেছেন ক্রিকেটাররা। উল্লেখযোগ্য কয়েকজন ক্রিকেটারের বিবৃতির সার কথা তুলে ধরা হলো:

সৌম্য সরকার: আর কোনো নারী-ই শারীরিকভাবে নির্যাতিত হবে না। নারীদের মনে করতে হবে তারা একা নন। ধর্ষকের কোনো ক্ষমা নেই।

রুবেল হোসেন: কিছু মানুষরূপি পশুদের কি দুর্ভাগ্য, নারীর পেটে জন্ম নিয়েও নারীকে সম্মান করতে শিখলো না। মা বোনেরা তোমরা সাবধানে থেকো, এই শহরে মানুষ নামের কিছু পশু আছে। কি লিখবো ভাষা হারিয়ে ফেলেছি, We want Rape - Free বাংলাদেশ।

সাব্বির রহমান: আমাদের সমাজে ধর্ষকের কোনো জায়গা নেই। ধর্ষণকে না বলুন এবং নারীদের সম্মান করুন।

মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ: আওয়াজ তুলুন; ধর্ষণকে না বলুন।

তাসকিন আহমেদ: ধর্ষণের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান। ধর্ষণকে না বলুন।

মুশফিকুর রহিম: আমরা আর চুপ করে থাকতে পারি না। ধর্ষণ কিংবা যে কোনো যৌন নির্যাতন কখনো সহ্য করা হবে না। সমাজে এর কোনো জায়গা নেই। জেগে ওঠো বাংলাদেশ, ধর্ষণকে না বলার বিপক্ষে অবস্থান নাও। এখনই ধর্ষণ থামাও। না মানে না।

সাকিব আল হাসান: এক শ্রেণির বর্বর মানুষ বয়স, ধর্ম ও বর্ণ নির্বিশেষে নারী ও শিশুদের প্রতি প্রতিদিনই যে জঘন্য অন্যায় করছে, তারপর আর আমি চুপ করে থাকতে পারি না। আমার অবস্থান তাই সব ধরনের ঘৃণা আর সহিংসতার বিরুদ্ধে।

আসুন আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে এই নৈতিক অবক্ষয়ের বিরুদ্ধে লড়াই করি এবং আমাদের নারী ও শিশুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করি যাতে তারা স্বপ্ন দেখতে পারে এবং নির্ভয়ে তাদের জীবনযাপন করতে পারে। মনে রাখবেন, আজকে আমরা যদি এই বর্বর আচরণ ও মানসিকতার বিরুদ্ধে রুখে না দাঁড়াই, তবে একদিন আমাদের প্রিয়জনদের কেউ হতে পারে এই নির্মমতার শিকার।