কথাসাহিত্যিক রশীদ হায়দার আর নেই

চলে গেলেন একুশে পদকপ্রাপ্ত কথাসাহিত্যিক রশীদ হায়দার। আজ মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে রাজধানীর নিজ বাসায় তিনি ইন্তেকাল করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৯ বছর।

একুশে পদকপ্রাপ্ত কথাসাহিত্যিক রশীদ হায়দার- ফাইল ছবি

বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন তার মেয়ে শাওন্তি হায়দার।

তিনি বলেন, তার বাবা বেশ কিছুদিন ধরে বার্ধক্যজনিত অসুস্থতায় ভুগছিলেন। অবশেষে আজ সকাল ১০টার দিকে তিনি না ফেরার দেশে পাড়ি জমান। সবাই তার আত্মার মাগফিরাত কামনা করবেন।

রশীদ হায়দার ১৯৪১ সালের ১৫ জুলাই পাবনা জেলার দোহারপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন। কীর্তিমান এ লেখক সবার কাছে রশীদ হায়দার নামে পরিচিত হলেও তার আসল নাম শেখ ফয়সাল আবদুর রশীদ মোহাম্মদ জিয়াউদ্দীন হায়দার। ডাকনাম ছিল দুলাল।

মাধ্যমিক পাস করেছেন গোপালগঞ্জ ইনস্টিটিউশন থেকে। উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেন পাবনা এডওয়ার্ড কলেজ থেকে। এরপর বাংলা সাহিত্যের ওপর স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকাকালীন ১৯৬১ সালে জনপ্রিয় পত্রিকা চিত্রালীতে কাজ শুরু করেন। কর্তৃপক্ষ তাকে সেখানে স্থায়ীভাবে নিয়োগ দেয়।

এরপর তিনি পাকিস্তান রাইটার্স গিল্ডের মুখপাত্র পরিক্রম পত্রিকার সহকারী সম্পাদক ও বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের ত্রৈমাসিক কৃষিঋণ পত্রিকার সম্পাদক হিসেবে কিছুদিন কাজ করেন। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭২ সালে তিনি চাকরি পান বাংলা একাডেমিতে। দীর্ঘ বছর কাজ করার পর ১৯৯৯ সালে তিনি সেখান থেকে অবসর নেন। অবসর নেওয়ার সময় তিনি বাংলা একাডেমির পরিচালক ছিলেন। পরে নির্বাহী পরিচালকের দায়িত্ব নেন নজরুল ইনস্টিটিউটের।

জনপ্রিয় এই কথাসাহিত্যিক তার দীর্ঘ কর্মজীবনে ৭০টির বেশি বই প্রকাশ করেছেন। যার মধ্যে রয়েছে গল্প, উপন্যাস, নিবন্ধ, স্মৃতিকথা, নাটক, সম্পাদনা ও অনুবাদ। দেশের কথাসাহিত্যে অবদান রাখার জন্য ১৯৮৪ সালে তিনি বাংলা একাডেমি পুরস্কার পান। ২০১৪ সালে পান সম্মানজনক একুশে পদক। এছাড়াও পাবনা জেলা সমিতি স্বর্ণপদক, হুমায়ূন কাদির পুরস্কার, রাজশাহী সাহিত্য পরিষদ পুরস্কারসহ আরো অনেক পুরস্কার-সম্মাননা পেয়েছেন।