সেন্টমার্টিনে আটকা দুই শতাধিক পর্যটক

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপটি গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে দেশের সকল সমুদ্র বন্দরসমূহকে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। বৈরী আবহাওয়া ও সাগর উত্তাল থাকার কারণে বন্ধ রয়েছে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন জাহাজ চলাচল। ফলে দেশের অন্যতম শীর্ষ পর্যটন স্থান সেন্টমার্টিন দ্বীপে আটকে পড়েছেন প্রায় দুই শতাধিক পর্যটক।

সেন্টমার্টিন দ্বীপ- ফাইল ছবি

জানা যায়, গতকাল বুধবার ও তার আগের দিন মঙ্গলবার বহু পর্যটক কক্সবাজারের টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিন বেড়াতে যান। যাদের অনেকেই সেখানে রাত্রিযাপনের জন্য থেকে যান। এসব পর্যটকের মধ্যে অনেকের আজ বৃহস্পতিবার ফিরে আসার কথা থাকলেও জাহাজ বন্ধ থাকায় তারা সেখানে আটকা পড়েছেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করে সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান নুর আহমদ জানান, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপের কারণে গতকাল বুধবার আবহাওয়া অধিদপ্তর সমুদ্র বন্দরসমূহ ও উপকূলীয় এলাকায় ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখাতে বলে। তাই বৈরী আবহাওয়ার কারণে গতকালই সেন্টমার্টিন দ্বীপে মাইকিং করে পর্যটকদের কক্সবাজার ফিরে যেতে বলা হয়। কিন্তু প্রায় দুই শতাধিক পর্যটক তা না শুনে দ্বীপে থেকে যান।

সেন্টমার্টিনে আটকা দুই শতাধিক পর্যটক- প্রতীকী ছবি

তিনি আরো বলেন, লঘুচাপটি ধীরে ধীরে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকল সমুদ্র বন্দর ও উপকূলীয় এলাকায় ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত নামিয়ে ৪ নম্বর হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। সাগর উত্তাল থাকায় সেন্টমার্টিন-টেকনাফ জাহাজ চলাচলও বন্ধ রয়েছে। ফলে দ্বীপে থেকে যাওয়া পর্যটকরা এখন আর কক্সবাজার ফিরে যেতে পারছেন না।

তবে আটকে পড়া পর্যটকরা বিভিন্ন রিসোর্ট ও হোটেলে নিরাপদে আছে জানিয়ে ইউপি চেয়ারম্যান আরো বলেন, সাগরের উত্তাল পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে জাহাজ চলাচল শুরু হবে। তখন পর্যটকরা নিরাপদে ফিরে যেতে পারবেন। আপাতত তাদের এখানে কোনো সমস্যা হচ্ছে না।

টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাইফুল ইসলাম জানান, বৈরী আবহাওয়ার কারণে যেসব পর্যটক সেন্টমার্টিনে আটকে পড়েছেন তাদের যাতে সেখানে থাকতে কোনো সমস্যা না হয় সেজন্য স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও পুলিশ প্রশাসনকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। পর্যটকরা যাতে সাশ্রয়ী মূল্যে সেখানে খেতে ও থাকতে পারে সেজন্য প্রয়োজনীয় সকল ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।

এদিকে, আজ বৃহস্পতিবার এক বিশেষ সতর্কবার্তায় আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত নিম্নচাপটি আরো ঘণীভূত হয়ে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। এটি আরো ঘণীভূত হয়ে উত্তরের দিকে অগ্রসর হতে পারে।

আবহাওয়া অফিস আরো জানায়, গভীর নিম্নচাপটির কেন্দ্রের ৪৮ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৫০ কিলোমিটার। যা ঝড়ো ও দমকা হাওয়া হিসেবে ৬০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। নিম্নচাপটির কেন্দ্রে সাগর উত্তাল রয়েছে।

এ জন্য কক্সবাজার, মোংলা, চট্টগ্রাম ও পায়রা সমুদ্র বন্দরসমূহকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত নামিয়ে তার পরিবর্তে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সকল মাছ ধরার ট্রলার ও নৌকাগুলোকে গভীর সাগরে বিচরণ না করে নিরাপদ আশ্রয় থাকতে বলা হয়েছে।