রাষ্ট্রপতি: বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশকে আলাদাকারীরা ব্যর্থ

বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশকে আলাদা করে দেখার সুযোগ নেই উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেছেন, এই দুই সত্তাকে যারা আলাদা করার চেষ্টা করেছে, তারা ব্যর্থ হয়েছে, আজকের বাস্তবতাই তার সবচেয়ে বড় প্রমাণ। বাংলাদেশকে জানতে হলে মুক্তিযুদ্ধকে, বঙ্গবন্ধুকে জানতে হবে।

সংসদে স্মারক বক্তৃতা দিচ্ছেন রাষ্ট্রপতি

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশত বার্ষিকী উপলক্ষে সংসদের বিশেষ অধিবেশনের স্মারক বক্তৃতায় আজ সোমবার এসব কথা বলেন রাষ্ট্রপতি। চলতি একাদশ সংসদের এ দশম অধিবেশন গতকাল রোববার সন্ধ্যা ৬টায় শুরু হয়, প্রথম কার্যদিবস চলে সাধারণ অধিবেশনের মতোই।

রাষ্ট্রপতি বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কেবল একটি নাম নয়, একটি প্রতিষ্ঠান, একটি সত্তা, একটি ইতিহাস। জীবিত বঙ্গবন্ধুর মতোই অন্তরালের বঙ্গবন্ধু শক্তিশালী। যতদিন বাংলাদেশ, বাঙালি, জনগণ থাকবে, ততদিন বঙ্গবন্ধু সবার অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে থাকবেন।

নিপীড়িত-নির্যাতিতদের ‘মুক্তির আলোকবর্তিকা’ বঙ্গবন্ধু বিশ্বকে ‘আলোকময়’ করেছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে বঙ্গবন্ধুর নীতি, আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত করে গড়ে তুলতে সকলকে উদ্যোগী হতে হবে।

প্রতিটি ঘরে স্বাধীনতার সুফল পৌঁছে দেয়ার আহ্বান জানিয়ে রাষ্ট্রপতি বলেন, বঙ্গবন্ধুর ‘সোনার বাংলা’ গড়তে বড় প্রয়োজন ঐক্যের। জনগণের ঐক্য, মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের শক্তির ঐক্য। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের মতোই সাম্প্রদায়িকতা, অগণতান্ত্রিকতা, অসহিষ্ণুতা ও সহিংসতার বিরুদ্ধে ঐক্য গড়ে তুলতে হবে।

রাষ্ট্রপতিকে স্মারক উপহার দেন স্পিকার

দেশের গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেয়ার ওপর গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোকে পরমত সহিষ্ণু হতে হবে, গড়ে তুলতে হবে পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধের সংস্কৃতি। যারা সরল মানুষকে বিভ্রান্ত ও বিপথগামী করে দেশের শান্তি ও অগ্রগতিকে ব্যাহত করতে চায়, একাত্তরের চেতনায় তাদের প্রতিরোধ করতে হবে। তবেই বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠিত হবে, বঙ্গবন্ধুর জন্মশত বার্ষিকী উদযাপন সার্থক হবে।

এ সময় সরকারিভাবে ‘মুজিববর্ষ’ পালন করায় প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানান রাষ্ট্রপতি। এই বিশেষ অধিবেশন আয়োজন করায় স্পিকার ও জাতীয় সংসদের সবাইকে ধন্যবাদ জানান তিনি।

আজ সন্ধ্যায় শুরু হওয়া এ অধিবেশনে স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্ব করেন। এর আগে ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি দেয়া বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের ভাষণ দেখানো হয়। করোনার সংক্রমণ রোধে অধিবেশনে কঠোর স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা হচ্ছে, সংবাদ সংগ্রহেও সংশ্লিষ্ট সাংবাদিকদের করোনা টেস্ট করাতে হয়েছে। করোনাকালে এর আগে পর পর তিনটি অধিবেশনে সাংবাদিকদের প্রবেশের সুযোগ ছিল না।

দেশের ইতিহাসে ‘বিশেষ অধিবেশন’ আয়োজনের ঘটনা এটিই প্রথম। এর আগে ১৯৭৪ সালের ৩১ জানুয়ারি ও ১৮ জুন সংসদে বিশেষ বৈঠক হয়েছিল, তাতে যুগোস্লাভিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট মার্শাল টিটো ও ভারতের রাষ্ট্রপতি বরাহগিরি ভেঙ্কটগিরি ভাষণ দেন।