‘অভিনব কায়দায়’ ৮ কোটি টাকা আত্মসাৎ

ভুয়া কাগজপত্র বানিয়ে স্ত্রী ও শ্যালকের নামে প্রায় ৮ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে কক্সবাজার পৌরসভার মেয়র মুজিবুর রহমানের বিরুদ্ধে। জেলা ভূমি অধিগ্রহণ অফিসের কয়েকজন কর্মকর্তা-কর্মচারীর সহায়তায় এমন দুর্নীতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

অধিগ্রহণ করা ভূমি, ইনসেটে পৌর মেয়র মুজিবুর রহমান

অভিযোগ রয়েছে, কক্সবাজার সদরের ঝিলংজা ইউনিয়নের রাবার ড্যাম এলাকায় পৌরসভার পানি শোধনাগার প্রকল্পে ভূমি অধিগ্রহণের জন্য ৩৬ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। এর মধ্যে জমি ক্রয় বাবদ মেয়রের স্ত্রী ফারহানা ও শ্যালক মিজানের নামে প্রায় ৮ কোটি টাকার চেক হস্তান্তর করেছে জেলা প্রশাসন।

জানা গেছে, সম্প্রতি শ্যালক মিজানের একটি অ্যাকাউন্ট থেকে ৪ কোটি টাকা জব্দ করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। বিষয়টি তদন্তাধীন থাকায় বিস্তারিত কিছু জানা যায়নি।

গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়, মূল মালিকদের বাদ দিয়ে ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করে দুজনকে ভূমি অধিগ্রহণের টাকার চেক হস্তান্তর করা হয়েছে। এ অনিয়মের সঙ্গে জেলা ভূমি অধিগ্রহণ অফিসের কয়েকজন কর্মকর্তা-কর্মচারী জড়িত।

পৌরসভার জন্য ১৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে পানি শোধনাগার প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর। এ জন্য ২ দশমিক ১৭৫ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়। ওই জায়গা নিয়ে আইনি বিবাদ থাকলেও নিয়ম ভেঙ্গে তা অধিগ্রহণ এবং দলিল ও নামজারি সম্পন্ন করা হয়।

কক্সবাজার সদর উপজেলা

ভূমির মালিকরা বলছেন, এত সব ঘটনার কিছুই জানেন না তারা, জমিতে সরকারি কর্মকর্তাদের দেখে বিষয়টি জানতে পারেন। জায়গাটা নিয়ে মামলা চলমান থাকায় এমন অধিগ্রহণের কথা ভাবতেও পারেননি তারা।

বিষয়টি নিয়ে উচ্চ আদালতে মামলা চলছে জানিয়ে একজন ভূমি মালিক জানান, মামলা করা হলে অধিগ্রহণের শেষ পর্যায়ে এসে তাদের অন্তর্ভুক্ত করে ভূমি অধিগ্রহণ অফিস। বেশ কয়েকবার শুনানি হলেও ভূমির ভুয়া ক্রেতা দাবি করা দুজন কোনো কাগজপত্র দেখাতে ব্যর্থ হয়েছেন। এরপরেও তাদের নামে চেক হস্তান্তর করা হয়।

এ বিষয়ে কিছু জানেন না, কাগজপত্র না দেখে কিছু বলতে পারবেন না বলে জানান কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন। তিনি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার মোবাইল নম্বর দেয়ার কথা বললেও কয়েকবার চেষ্টা করেও নম্বরটি পাওয়া যায়নি।

ওই ভূমি নিয়ে আইনি জটিলতা থাকার বিষয়টি জানতেন না উল্লেখ করে সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোহাম্মদ শাহরিয়ার মুক্তার জানান, বিষয়টি দুদক তদন্ত করায় কিছু বলতে পারছি না।

বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া কথা বলতে পারবেন না বলে জানান ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা শামিম হাসান। আপত্তি থাকলে চেক হস্তান্তর করার কথা না উল্লেখ করে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) আশরাফুল আফছার বলেন, তদন্ত করে জানাতে পারবো।