কারাবাখ চুক্তি: আর্মেনিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রীর পদত্যাগ

নাগর্নো-কারাবাখ অঞ্চলকে কেন্দ্র করে আজারবাইজান ও আর্মেনিয়ার মধ্যকার বিরোধের অবসান ঘটাতে রাশিয়ার মধ্যস্থতায় হওয়া শান্তিচুক্তি মেনে নেয়নি আর্মেনীয়রা। তারা এটিকে নিজেদের পরাজয় হিসেবে ভাবছেন। সেজন্য এর প্রতিবাদে ও প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবিতে তীব্র আন্দোলন করে যাচ্ছে। এর মধ্যেই পদত্যাগ করলেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী জোহরাব মাতসাকানিয়ান

আর্মেনিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেয়া এক পোস্টে তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন। সেখানে তিনি জানান, স্বেচ্ছায় পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জোহরাব মাতসাকানিয়ান। আল জাজিরাসহ বেশ কয়েকটি গণমাধ্যমেও খবরটি প্রকাশ করা হয়েছে।

এদিকে, শান্তিচুক্তির প্রতিবাদে প্রধানমন্ত্রী নিকোল প্যাসিনিয়ানের পদত্যাগের দাবিতে রাজধানী ইয়েরেভেনের রাস্তায় হাজার হাজার আর্মেনীয় বিক্ষোভ করছেন। গত ১১ নভেম্বর থেকে শুরু হওয়া এ বিক্ষোভ এখনো চলছে। তাদের সকলের একটাই স্লোগান, ‘নিকোল বিশ্বাসঘাতক’।

বিক্ষোভকারীরা বলছেন, দেশের জনগণের সঙ্গে পরামর্শ না করে কোনো চুক্তি স্বাক্ষরের অধিকার নিকোল প্যাসিনিয়ানের নেই। এটি গণতন্ত্র নয়। তিনি আমাদের জমি বিক্রি করে দিয়েছেন।

প্রধানমন্ত্রী নিকোল প্যাসিনিয়ানের পদত্যাগের দাবিতে আর্মেনিয়ায় বিক্ষোভ অব্যাহত

এর আগে চুক্তি স্বাক্ষরে সম্মতি দেয়ার পর আর্মেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী নিকোল প্যাসিনিয়ান ফেসবুক পোস্টে জানান, তার সরকার যুদ্ধ বন্ধের জন্য আজারবাইজান ও রাশিয়ার সঙ্গে একটি চুক্তি করেছে। চুক্তিটি ব্যক্তিগতভাবে এবং আমাদের জনগণের জন্য অবর্ণনীয় বেদনাদায়ক। আমি সামরিক পরিস্থিতি গভীরভাবে বিশ্লেষণ এবং পরিস্থিতি সবচেয়ে ভালো জানেন এমন লোকদের মূল্যায়নের ফলস্বরূপ এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তাছাড়া চলমান পরিস্থিতির সর্বোত্তম সম্ভাব্য সমাধান এটিই।

এই চুক্তি কারো বিজয় নয়। যতক্ষণ না আপনি নিজেকে পরাজিত হিসেবে স্বীকৃতি দেন, ততক্ষণ পর্যন্ত কোনো পরাজয় হয় না। আমরা কখনোই নিজেদের পরাজিত হিসেবে স্বীকৃতি দেবো না এবং এটি আমাদের জাতীয় ঐক্য ও পুনর্জন্মের যুগের সূচনা হওয়া উচিত। আমাদের স্বাধীন ভবিষ্যতের পরিকল্পনা এবং অতীতের ভুলের পুনরাবৃত্তি না করার জন্য আসছে সময়গুলো বিশ্লেষণ করতে হবে, যোগ করেন তিনি।

এই চুক্তি অনুযায়ী, অঞ্চলটিতে যে যেখানে অবস্থান করছে, ওই এলাকা তাদের। অর্থাৎ কার্যত লাভ হলো আজারবাইজানের। কারণ নাগর্নো-কারাবাখের অধিকাংশ এলাকাই আর্মেনিয়ার কাছ থেকে দখলমুক্ত করেছে আজারি সেনারা। যার মধ্যে আছে অঞ্চলের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর শুশা। এ ছাড়া অঞ্চলটিতে শান্তিরক্ষী নিয়োগ দিয়েছে তুরস্ক ও রাশিয়া।