মাদক মামলার বিচারে থাকছে না ট্রাইব্যুনাল

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন থেকে এ সংক্রান্ত মামলার বিচারকার্যে ট্রাইব্যুনাল গঠনের বিধান বাদ দিয়ে সংশোধিত বিল পাস করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে কণ্ঠভোটের মাধ্যমে ‘মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ (সংশোধন) বিল-২০২০’ পাস হয়।

জাতীয় সংসদের অধিবেশন- ফাইল ছবি

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের পক্ষে সংশোধিত বিলটি পাসের জন্য জাতীয় সংসদে প্রস্তাব করেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। পরে কণ্ঠভোটের মাধ্যমে তা পাশ হয়। এর আগে সংশোধনী প্রস্তাবটির নিষ্পত্তির জন্য যাচাই-বাছাই কমিটিতে পাঠানো হয়। সেখানে বিলটির ওপর দেওয়া জনমত যাচাই-বাছাই করা হয় এবং সংশোধনী নিষ্পত্তি করা হয়।

২০১৮ সালে ‘মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন-১৯৯০’ সংশোধন করে ‘মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ বিল-২০১৮’ পাস করা হয়। সংশোধিত বিলে ভয়ঙ্কর মাদক ইয়াবা উৎপাদন, বিপণন ও পরিবহনের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড ও এ সংক্রান্ত মামলার বিচারের জন্য মাদকদ্রব্য অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনাল স্থাপনের বিধান রাখা হয়। বিলটি গত ২০১৯ সালের ২৭ ডিসেম্বর কার্যকর হয়।

মরণনেশা ইয়াবা- প্রতীকী ছবি

বিদ্যমান মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে বলা আছে, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত মামলার বিচারের জন্য সরকার গেজেটের মাধ্যমে প্রজ্ঞাপন দিয়ে যতগুলো প্রয়োজন ততগুলো মাদকদ্রব্য অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনাল গঠন করবে। এসব ট্রাইব্যুনাল পরিচালনার জন্য প্রত্যেকটিতে একজন করে অতিরিক্ত জেলা জজ পদমর্যাদার বিচারক নিয়োগ দেওয়া হবে। কোনো জেলায় অতিরিক্ত জেলা জজ না থাকলে ওই ট্রাইব্যুনাল পরিচালনার দায়িত্ব নিজ দায়িত্বের অতিরিক্ত হিসেবে পালন করবেন দায়রা জজ।

কিন্তু প্রশাসনিক জটিলতার কারণে এখন পর্যন্ত মাদকদ্রব্য অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনাল স্থাপন করা সম্ভব হয়নি। জেলা বা দায়রা জজকেও অতিরিক্ত হিসেবে এই ট্রাইব্যুনালের দায়িত্ব দেওয়া হয়নি।

এ বিষয়ে সরকার বলছে, এভাবে ট্রাইব্যুনাল গঠন করে আসামির বিচার করতে গেলে প্রতিটি মামলায় দীর্ঘ সময় লেগে যায়। মামলা নিষ্পতি ও আপিলের ক্ষেত্রের সৃষ্টি হয় জটিলতা। তাই আইনটি সংশোধন করা হচ্ছে।

সংশোধিত বিলে বলা হয়, মাদকদ্রব্য অপরাধ দমন মামলা পাওয়ার ৯০ কার্যদিবসের মধ্যে এখতিয়ারসম্পন্ন আদলতকে সেটির বিচার শেষ করতে হবে। এরপর কেউ আদলতের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করতে চাইলে তাকে রায় ঘোষণার ৩০ দিনের মধ্যে সেটি করতে হবে।