সবজির দামও নির্ধারণ করে দেবে সরকার

চাল ও আলুর পর এবার সাধারণ ক্রেতাদের কথা চিন্তা করে বাজারে সবজির দাম নির্ধারণ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এ জন্য ইতোমধ্যে পাইকারি ও খচরা বাজারে বিভিন্ন সবজির দাম পর্যালোচনা করা হচ্ছে। জানার চেষ্টা করা হচ্ছে কৃষক পর্যায়ে এসব সবজির উৎপাদন খরচ কত।

সবজি- ফাইল ছবি

কৃষি বিপণন অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, পাইকারি, খুচরা ও কৃষক পর্যায়ে উৎপাদন খরচ পর্যালোচনা শেষ হলে অল্প কিছু দিনের মধ্যেই বাজারে সবজির দাম বেঁধে দেওয়া হবে। ফলে সাধারণ ক্রেতাদের আর বাজারে গিয়ে সবজি কিনতে হিমশিম খেতে হবে না।

সরকারি হিসাব অনুযায়ী, ২০১৯-২০ অর্থবছরে দেশে মোট ১ লাখ ৭২ হাজার মেট্রিক টন বিভিন্ন ধরনের সবজি উৎপাদন করা হয়েছে। যেখানে চাহিদা ছিল মাত্র ১ লাখ ৬২ হাজার মেট্রিক টন। অর্থাৎ, চাহিদা মেটানোর পর উদ্বৃত্ত ছিল ১০ লাখ মেট্রিক টন। চাহিদার তুলনায় উৎপাদন বেশি হওয়ায় সবজির ন্যায্য দাম পাননি কৃষকরা। ক্রেতারাও পাননি সস্তি। উচ্চমূল্য দিয়ে বাজার থেকে সবজি কিনতে হয়েছে তাদের।

কৃষি বিপণন অধিদপ্তর

কৃষক ও সাধারণ ক্রেতারা ক্ষতিগ্রস্ত হলেও লাভবান হচ্ছে মধ্যস্বত্বভোগীরা। কৃষকদের কাছ থেকে কম দামে সবজি কিনে এনে নানা অজুহাতে বাজারে বিক্রি করেছে উচ্চ দামে। তাই এসব ফায়দা লুটেরাদের দৌরাত্ম কমাতেই সবজির দাম নির্ধারণ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।

এ বিষয়ে কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) মোহাম্মদ ইউসুফ বলেন, বাজার অস্থিতিশীল করার পেছনে সব সময় মধ্যস্বত্বভোগীদের একটি হাত থাকে। তাদের অধিক মুনাফার লোভেই প্রতিনিয়ত ক্ষতিগ্রস্ত হয় কৃষক এবং সাধারণ ক্রেতা। মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম কমাতে বিভিন্ন সময় অভিযানও পরিচালনা করা হয়। কিন্তু অধিকাংশ সময়ই এভাবে বাজার নিয়ন্ত্রণ করা যায় না। ফলে বার বার সমালোচনার মুখে পড়তে হয় সরকারকে।

তিনি আরো বলেন, এসব কারণেই এবার বাজারে সবজির দাম নির্ধারণ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এর আগে বাজারে আলু ও চালের দাম বেড়ে গেলে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য দুটির দামও নির্ধারণ করে দেয় সরকার। যদিও বাজারে এখনো সরকারের নির্ধারিত দামে পণ্য দুটি বিক্রি হচ্ছে না, তারপর আগের মতো অস্বাভাবিক মূল্য এখন আর নেই। সরকার নির্ধারিত দাম থেকে হয়তো ২-৫ টাকা বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। এতে কিছুটা হলেও উপকৃত হয়েছেন সাধারণ ক্রেতারা।

ডিজি আরো জানান, সবজির দাম নির্ধারণ করে দেওয়ার পর প্রতিনিয়ত বাজার মনিটরিং করা হবে। বাজারে সরকার নির্ধারিত দামে সবজি বিক্রি না হলে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর প্রযোজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।