লন্ডন ডার্বিতে আর্সেনালের দাপুটে ফেরা

হোঁচট খেতে খেতে পিঠ দেয়ালে ঠেকে গিয়েছিল আর্সেনালের। দলটির প্রধান কোচ মিকেল আর্তেতার ভবিষ্যত নিয়েই রীতিমতো সংশয় দেখা দিয়েছিল। সেই দলটাই কী দুর্দান্তভাবেই না ফিরে এলো। ফেরার মঞ্চ হিসেবে মহাগুরুত্বপূর্ণ লন্ডন ডার্বিকেই বেছে নিল আর্সেনাল।

শনিবার রাতে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের মহারণটিতে চেলসিকে ৩-১ গোলে উড়িয়ে দিয়েছে উত্তর লন্ডনের ক্লাবটি। গানারদের হয়ে গোল তিনটি করেছেন আলেক্সান্ডার লাকাজেত্তে, গ্রানিত জাকা ও বুকায়ো সাকা। ম্যাচের শেষ দিকে চেলসির হয়ে সান্ত্বনার গোলটি করেন টামি আব্রাহাম।

টানা সাত ম্যাচে পয়েন্ট খোয়ানোর পর লিগে জয়ে ফিরল আর্সেনাল। তন্মধ্যে হারই পাঁচটিতে। একমাত্র জয়টি ছিল গেল নভেম্বরে; ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের বিরুদ্ধে। এবার তারা হারাল পশ্চিম লন্ডনের ক্লাব চেলসিকে। অনেকটা গত মৌসুমের মতোই, ‘ছোট’ দলগুলোর বিরুদ্ধে পয়েন্ট হারালেও ‘বড়’র বিপক্ষে চেনারূপে হাজির হচ্ছে তারা।

ঘরের মাঠ এমিরেটস স্টেডিয়ামে শুরুতেই প্রতিবেশী চেলসিকে চেপে ধরে আর্সেনাল। এর সুফল পেতে ৩৪ মিনিট পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয় তাদের। ডি-বক্সে কাইরেন টিয়ারনিরকে ফাউল করেন চেলসি ডিফেন্ডার রিস জেমস। পেনাল্টি পায় গানাররা। স্পট কিক থেকে আর্সেনালকে লিড এনে দেন লাকাজেত্তে।

দীর্ঘ সাড়ে ১৩ বছর পর ইংলিশ লিগে চেলসির বিপক্ষে পেনাল্টি থেকে গোল পেল উত্তর লন্ডনের ক্লাবটি। বিরতিতে যাওয়ার আগেই দুর্দান্ত এক ফ্রি-কিক থেকে ব্যবধান বাড়ান জাকা। আর্সেনালের হয়ে এটাই প্রথম গোল সুইস মিডফিল্ডারের। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুর দিকে ফের উৎসবে মেতে ওঠে আর্সেনাল।

উপলক্ষ্য এনে দেন সাকা। ৫৬ মিনিটে স্কোর লাইন ৩-০ করেন ইংলিশ মিডফিল্ডার। তিন গোল করেও ক্ষান্ত হননি আর্তেতার শিষ্যরা। মুহুর্মুহু আক্রমণে চেলসি ডিফেন্ডারদের পরীক্ষায় রাখেন তারা। ৮৪ মিনিটে ভাগ্য বাঁচিয়ে দিয়েছে পশ্চিম লন্ডনের ক্লাবটি। মোহাম্মাদ এলনেনির শট ফিরে আসে চেলসির পোস্টে লেগে।

ম্যাচজুড়ে চাপে থাকা চেলসি একটু পরই ব্যবধান কমায়। আর্সেনালকে একটি গোল ফিরিয়ে দেন আব্রহাম। দ্বিতীয়ার্ধের ইনজুরি টাইমে গানারদের ডি-বক্সে ফাউলের শিকার হন মাউন্ট। যদিও পেনাল্টি থেকে ব্যবধান আরো কমাতে ব্যর্থ হন জর্জিনহো। তার শট ঠেকিয় দেন আর্সেনালের শেষ প্রহরী বার্নাড লেনো।

এমন দুর্দান্ত একটা জয়ের পরও পয়েন্ট তালিকার ১৪ নম্বরে থাকল আর্সেনাল। ১৫ ম্যাচে পাঁচ জয় ও দুই ড্রয়ে ১৭ পয়েন্ট তাদের। সমান ম্যাচে ২৫ পয়েন্ট নিয়ে তালিকার সাতে নেমে গেছে চেলসি। ১৪ ম্যাচে ৩১ পয়েন্ট নিয়ে যথারীতি শীর্ষে আছে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন লিভারপুল। দুইয়ে থাকা লেস্টার সিটির পয়েন্ট ২৮।

প্রাক্তন চ্যাম্পিয়নরা অবশ্য এক ম্যাচ কম খেলেছে। তিন ও চারে থাকা ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ও এভারটনের পয়েন্ট সমান ২৭। ১৪ ম্যাচ খেলা ম্যানইউ গোলগড়ে এগিয়ে আছে। দুই দলের পেছনে থাকা ম্যানচেস্টার সিটির সংগ্রহ ২৬ পয়েন্ট। এরপর সমান ২৫ পয়েন্ট নিয়ে পর্যায়ক্রমিক অবস্থান অ্যাস্টন ভিলা, চেলসি, টটেনহাম ও সাউদ্যাম্পটনের।