ফখরুল: আন্দোলনের কোনো বিকল্প নেই

আজকের দিনটি বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে কলঙ্কজনক একটি দিন বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আজ বুধবার দুপুরে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে দলের পক্ষ থেকে আয়োজিত এক বিক্ষোভ সমাবেশে এমন মন্তব্য করেন তিনি।

বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য দিচ্ছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর

একাদশ জাতীয় নির্বাচনের দুই বছর পূর্তির দিন (৩০ ডিসেম্বর) গণতন্ত্র হত্যা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত ওই বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপি মহাসচিব বলেন, যখন দেখি- এই সমাবেশে আসতে আমাদের নেতাকর্মীদের বাধা দেওয়া হয়, তখন আমাদের খুব দুঃখ হয়, লজ্জা হয়।

প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত নির্বাচনের দিনকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার দিবস হিসেবে পালন করে থাকে। অন্যদিকে, নির্বাচনের আগের রাতে ‘ভোট ডাকাতি’ হয়েছে দাবি করে দিনটিকে গণতন্ত্র হত্যা দিবস হিসেবে পালন করে আসছে বিএনপি। এরই অংশ হিসেবে আজ বুধবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করে দলটি।

মির্জা ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগ এই দিনে রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে ভোট চুরি করে ক্ষমতা পাকাপোক্ত করেছে। যার লক্ষ্য হলো একদলীয় শাসন প্রতিষ্ঠা করা। সেই কলঙ্কময় দিন আজ। যেদিন বাংলাদেশের মানুষের ভোটাধিকার হত্যা করা হয়েছে।

জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিএনপির বিক্ষোভ সমাবেশ

তিনি বলেন, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের এই সংগ্রাম শুধু বিএনপির একার নয়, বরং সকল দল ও মতের সংগ্রাম। এ জন্য গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হলে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। আসছে নতুন বছরে ঐক্যবদ্ধ হয়ে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠার সেই শপথ নিতে হবে।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, গোটা দেশকে কারাগারে পরিণত করেছে এই সরকার। এক শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতি তৈরি করা হয়েছে সবকিছু জিম্মি করার মাধ্যমে। নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য তাদের বাধ্য করতে হবে।

ইসি প্রসঙ্গে ফখরুল বলেন, এই নির্বাচন কমিশন মিথ্যাচার করেই যাচ্ছে। তারা হাসি-ঠাট্টা করে বলে, নির্বাচন নাকি নিরপেক্ষ হয়েছে। তাই সব গণতান্ত্রিক শক্তিকে এদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হতে হয়ে লড়াই করতে হবে। যাতে বাংলাদেশের মানুষ জনগণের সরকার দেখতে পায়।

বিএনপি মহাসচিব আরো বলেন, দেশে আজ লুটপাটের রাজত্ব কায়েম করা হয়েছে। ব্যাংক লুট করার মাধ্যমে দেশের ব্যাংক ব্যবস্থা ধ্বংস করা হয়েছে।

তিনি বলেন, গণতান্ত্রিক সরকার দেখতে চায় বাংলাদেশের মানুষ। গণতান্ত্রিক ও দুর্নীতিমুক্ত রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য এবং মানুষের স্বাধীন মতপ্রকাশের জন্য আমরা যুদ্ধ করেছি। কিন্তু আজ সাংবাদিকরা স্বাধীনভাবে কথা বলতে পারে না। অনেক সংবাদপত্র বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। আওয়ামী লীগ আজ সবকিছু ধ্বংস করে দিয়েছে। এই অবস্থা থেকে দেশকে রক্ষা করতে হলে আন্দোলনের কোনো বিকল্প নেই।

বিক্ষোভ সমাবেশে বিএনপির কেন্দ্রীয় ও ঢাকা মহানগরের নেতারা বক্তব্য রাখেন। এ সময় দলের অনেক সিনিয়র নেতা এবং দলটির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।