সাইবার অপরাধ দমনের নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জানিয়েছেন, দেশের সাইবার ক্রাইম ব্যাপকভাবে বাড়ছে, এই অপরাধ দমন করতে হবে। এ জন্য তিনি সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন। রাজশাহীর সারদায় বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমিতে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে যুক্ত হয়ে আজ রোববার এ কথা বলেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে আধুনিক প্রযুক্তির যুগ। প্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহারের কারণে সাইবার ক্রাইম ব্যাপকভাবে বেড়ে গেছে। আমাদের এটাকে দমন করতে হবে। ৯৯৯ নম্বরে ফোন করলেই তাৎক্ষণিকভাবে সাহায্য করে যাচ্ছে পুলিশ। তারা মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, ‘প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে নানা ধরনের অপরাধ সংগঠিত হয়। সেগুলো আমাদের দমন করতে হবে।’

৩৭তম বিসিএস (পুলিশ) ব্যাচের শিক্ষানবিশ সহকারী পুলিশ সুপারদের এক বছর মেয়াদী মৌলিক প্রশিক্ষণ উপলক্ষে এই সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সিংযের মাধ্যমে অনুষ্ঠানে যুক্ত হন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সময় তিনি ভার্চুয়ালি প্যারেড পরিদর্শন এবং অভিবাদন গ্রহণ করেন। সেইসঙ্গে বিভিন্ন বিষয়ে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জনকারী সহকারী পুলিশ সুপারদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করেন।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান

এ সময় গুজব বন্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনাও দেন সরকার প্রধান। বলেন, ফেসবুকে বিভিন্ন ধরনের অ্যাপস ব্যবহারের মাধ্যমে অনেক ধরনের অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে। বিশেষ করে, এই ধরনের অপরাধের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ছে কিশোর বা উঠতি বয়সের ছেলেমেয়েরা। সেখান থেকে তাদের সুস্থ জীবনে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করতে হবে। এ ছাড়া গুজব রটানো বা এ ধরনের কাজ যাতে না হয়, সেদিকে দৃষ্টি রাখতে হবে।

এ ছাড়া অন্য অপরাধ দমনের বিষয়েও তাগিদ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বলেন, যে সহিংসতা নারী ও শিশুর প্রতি চলছে, তার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। সামাজিক অপরাধ বা অন্য নানা ধরনের পারিপারিক অপরাধেও কিন্তু পুলিশ অনবদ্য ভূমিকা রেখে যাচ্ছে। এগুলোকে আরো দক্ষতার সঙ্গে দমন করতে হবে।

সরকার প্রধান বলেন, সাইবার ক্রাইম, মানি লন্ডারিং ও মানবপাচার ইত্যাদি অপরাধগুলো শুধু বাংলাদেশ নয়, বরং এগুলো বৈশ্বিক ক্রাইম। দেশকে রক্ষা করতে হবে এই ধরনের ক্রাইম থেকে। সেইসঙ্গে দমন করতে হবে সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ।

মাদকের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রতিটি পরিবারকে মাদকের হাত থেকে রক্ষা করতে হবে। আমাদের সমাজকে কুরে কুরে খাচ্ছে মাদক। প্রতিটি পরিবারকে এই মাদকের হাত থেকে রক্ষা করতে হবে।

পুলিশ সদস্যদের উন্নত প্রশিক্ষণ ও কর্মদক্ষতা বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জরুরি সেবা দেওয়ায় পুলিশ ভূয়সী প্রশংসা পাচ্ছে এবং ভালো কাজ করে যাচ্ছে।

শেখ হাসিনা সন্ত্রাস-জঙ্গি দমনে পুলিশের ভূমিকার প্রশংসা করে বলেন, পুলিশ সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ দমনে যথেষ্ট শক্তিশালী ভূমিকা রেখেছে। এ কাজ করতে গিয়ে অনেকে জীবন পর্যন্ত দিয়েছে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান অনুষ্ঠানে সভাপতি হিসেবে বক্তব্য রাখেন। অন্যদিকে, স্বাগত বক্তব্য রাখেন ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ। এ ছাড়া স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মোস্তাফা কামাল উদ্দীন বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন।

অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম, রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন এবং পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও পদস্থ সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তা প্রমুখ।