হলো না ‘এল ক্লাসিকো’

গত মৌসুমে নতুন মোড়কে হাজির হয়েছিল স্প্যানিশ সুপার কাপ। যেখানে শিরোপা জিতেছে ফেভারিট রিয়াল মাদ্রিদ। এই মৌসুমে শ্রেষ্ঠত্ব ধরে রাখার প্রথম ম্যাচেই স্বপ্নের সমাধী হলো লস ব্ল্যাঙ্কোসদের। বৃহস্পতিবার রাতে সুপার কাপের দ্বিতীয় সেমিফাইনালে অ্যাথলেটিক বিলবাওর কাছে হেরে গেছে জিনেদিন জিদানের দল।

মালাগায় অঘটনের ম্যাচে বিলবাও জিতেছে ২-১ গোলে। প্রথমার্ধেই দুই গোল হজম করে হারের শঙ্কায় পড়ে রিয়াল মাদ্রিদ। বিরতির পর দাঁতে দাঁত চেপে লড়াই করলেও শেষ রক্ষা হয়নি। টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে যায় রিয়াল। তাতে হতাশ ফুটবলপ্রেমীরা। আশা জাগিয়েও ‘এল ক্লাসিকো’র মঞ্চ তৈরি হলো না। রোববার ফাইনালে রিয়ালের বদলে বিলবাওকে পেল বার্সেলোনা।

প্রথম সেমিফাইনালে কাতালান জায়ান্টদেরও অগ্নিপরীক্ষা দিতে হয়েছে। দুই ঘণ্টা লড়াই করার পর রিয়াল সোসিয়েদাদের সঙ্গে ১-১ গোলে ড্র করে বার্সা। পরে টাইব্রেকারে ৩-২ গোলে জিতে ফাইনালের টিকিট কাটে লিওনেল মেসিবিহীন দলটি। আশাবাদী সমর্থকরা রিয়ালের জয়ের অপেক্ষায় ছিলেন। কিন্তু তাদের নিরাশ করলেন জিদানের শিষ্যরা।

ম্যাচের শুরুতেই পা হড়কায় রিয়াল মাদ্রিদ। ১৮ মিনিটে গোল হজম করে তারা। কুড়ি মিনিট পর দ্বিতীয় ধাক্কা। বিলবাওর দুটো গোলই করেছেন রাউল গার্সিয়া। দ্বিতীয়ার্ধে ম্যাচে ফিরতে আপ্রাণ চেষ্টা করে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নরা। ফল হিসেবে ৭৩ মিনিটে ব্যবধান কমায় রিয়াল; গোল করেন ‘সেক্সটেপ‘ কেলেঙ্কারিতে অভিযুক্ত করিম বেনজেমা।

তবে সম্ভাবনা জাগিয়েও দ্বিতীয় গোলটা করতে পারেনি রিয়াল মাদ্রিদ। অথচ অগ্নিপরীক্ষার ম্যাচে দুই তৃতীাংশ বল নিজেদের দখলে রেখে খেলেছে লস ব্ল্যাঙ্কোসরা। কিন্তু কিইবা লাভ তা যদি জয়ের রূপরেখা না হয়। রিয়ালকে ম্যাচে ডুবিয়েছেন লুকাস ভাসকুয়েজ। দল দুটি গোলই হজম করেছে স্প্যানিশ এই তারকার ভুলে।

ম্যাচে প্রথম ‍ভুলটা ভাসকুয়েজ করেছেন প্রতিপক্ষ ড্যানি গার্সিয়ার পায়ে বল তুলে দিয়ে। পরে রাউল গার্সিয়া খুঁজে নেন জালের ঠিকানা। স্প্যানিশ তারকা দ্বিতীয় ভুলটা করেছেন ডি-বক্সে মার্টিনেজকে পেছন থেকে ফেলে দিয়ে। উপহারস্বরূপ পেনাল্টি পায় বিলবাও। সুযোগ কাজে লাগাতে কোনো ভুল করেননি গার্সিয়া; স্পট কিক থেকে নিজের দ্বিতীয় গোল।

দুই গোল হজমের পর বিলবাওর ওপর আহত বাঘের মতো ঝাঁপিয়ে পড়ে রিয়াল। কিন্তু ভাগ্য সহায় হয়নি তাদের। ৬১ মিনিটে মার্কো অ্যাসেনসিওর শট ফিরে আসে বিলবাওর পোস্টে লেগে। একটু পর ফের হতাশ হন তিনি। এবার অ্যাসেনসিওর দূরপাল্লার শট ক্রসবারে আঘাত হানে। অবশেষে ৭৩ মিনিটে স্বস্তির গোলটি করেন বেনজেমা।

রিয়াল সমতায় প্রায় ফিরেই গিয়েছিল। দ্বিতীয়বার জালের ঠিকানা খুঁজে নেন ফরাসি স্ট্রাইকার। যদিও অফসাইডের সংকেত দেন লাইন্সম্যান। সতীর্থের সিদ্ধান্ত সঠিক কিনা নিশ্চিত হতে ভিএআরের আশ্রয় নেন রেফারি। ম্যাচের শেষ মুহূর্তে সেই ভিএআরের কারণেই চূড়ান্ত স্নায়ুচাপ। ইনজুরি টাইমে হেড করতে গিয়ে পড়ে যান সার্জিও রামোস। হট্টগোলের মধ্যে বেশকিছু সময় নিয়ে রিয়ালের পেনাল্টি দাবি নাকচ করে দেন ম্যাচকর্তা। উৎসবে মেতে ওঠে অ্যাথলেটিক বিলবাও।