জিপিএ-৫ বদলে দেয়া ‘সাবজেক্ট ম্যাপিং’ যেভাবে হয়েছে

করোনার কারণে পরীক্ষা না হওয়ায় এবারের এইচএসসি ও সমমানের ফলাফল মূল্যায়নে বিশেষ একটি পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়েছে। এক্ষেত্রে জেএসসি ও সমমান এবং এসএসসি ও সমমানের ফলের ভিত্তিতে করা হলেও ‘সাবজেক্ট ম্যাপিং’ করা হয়।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের লোগো

এ কারণে জেএসসি-এসএসসিতে জিপিএ-৫ না পেলেও এইচএসসিতে ১৭ হাজার ৪৩ জন নতুন করে এই ‘সোনার হরিণের’ দেখা পান। আবার আগের দুটি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেলেও এবার তা পাননি ৩৯৬ জন।

মূলত প্রয়োজনীয় নম্বর না থাকায় জিপিএ-৫ থেকে বঞ্চিত হয়েছেন তারা। এদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি রয়েছেন বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা।

এবার জিপিএ-৫ পাওয়া না পাওয়ার পেছনে সাবজেক্ট ম্যাপিং কাজ করেছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। এবার জেনে নেয়া যাক, নতুন এই পদ্ধতি কীভাবে ফল বদলে দিয়েছে।

ফল প্রকাশের অনুষ্ঠান

যেভাবে হয়েছে সাবজেক্ট ম্যাপিং

সাবজেক্ট ম্যাপিং ব্যববারের বিষয়টি ব্যাখ্যা করেছেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি ও আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় সাব-কমিটি। তাতে বলা হয়, জেএসসির ২৫ শতাংশ এবং এসএসসির ৭৫ শতাংশ বিষয়ভিত্তিক নম্বরের ওপর এইচএসসির ফল করা হয়েছে। একই নিয়ন অনুসরণ করা হয়েছে সমমানের ফলের ক্ষেত্রেও।

জেএসসি-জেডিসি এবং এসএসসি ও সমমানের বিষয় নির্বাচনের ক্ষেত্রে বিবেচনায় নেয়া হয়েছে আবশ্যিক বাংলা, ইংরেজি ও আইসিটি বিষয়। এসব বিষয়ের নম্বরের ভিত্তিতে এইচএসসির আবশ্যিক বাংলা, ইংরেজি ও আইসিটি বিষয়ের নম্বর ঠিক করা হয়।

বিজ্ঞান বিভাগের ক্ষেত্রে

বিজ্ঞান বিভাগের পরীক্ষার্থীদের জেএসসির গণিত ও বিজ্ঞানের গড় নম্বরের ২৫ শতাংশ এবং এসএসসির পদার্থ বিজ্ঞান, রসায়ন ও উচ্চতর গণিত বা জীববিজ্ঞানের ৭৫ শতাংশ নম্বর বিবেচনায় নেয়া হয়। এসব বিষয়ে এইচএসসির পদার্থ বিজ্ঞান, রসায়ন ও উচ্চতর গণিত বা জীববিজ্ঞানের নম্বর ঠিক করা হয়।

একইভাবে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে সমমানের পরীক্ষায় অংশ নেয়া শিক্ষার্থীদের ফলাফলও নির্ধারণ করা হয়েছে।

গোলোবারের এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের উল্লাস

ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের ক্ষেত্রে

জেএসসি ও সমমানের গণিত এবং বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয়ের গড় নম্বরের ২৫ শতাংশ আর এসএসসি ও সমমানের সমগোত্রীয় ৩টি বিষয়ের ৭৫ শতাংশ নম্বর নেয়া হয়েছে। এইচএসসির ব্যবসায় শিক্ষার পরীক্ষার্থীদের স্ব স্ব বিষয়ে এভাবে নম্বর নির্ধারণ করা হয়।

মানবিক ও অন্যান্য বিভাগের ক্ষেত্রে

এ ক্ষেত্রে জেএসসি-সমমানের গণিত এবং বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয়ের নম্বরের ২৫ শতাংশের সঙ্গে এসএসসি-সমমানের গ্রুপভিত্তিক ৩ বিষয়ের ৭৫ শতাংশ নম্বর আমলে নেয়া হয়েছে। এভাবে এইচএসসি ও সমমানের তিনটি বিষয়ে নম্বর নির্ধারণ করা হয়।

গ্রুপ পরিবর্তনের ক্ষেত্রে

এ ছাড়া গ্রুপ পরিবর্তন করা শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে জেএসসি ও সমমানের গণিত এবং বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয়ের ২৫ শতাংশ এবং এসএসসি ও সমমানের গ্রুপভিত্তিক ৩ বিষয়ের ৭৫ শতাংশ নম্বর নেয়া হয়েছে। এইচএসসি ও সমমানের মানবিক ও অন্যান্য গ্রুপে এভাবেই নম্বর নির্ধারণের কথা জানায় আন্তঃশিক্ষা বোর্ড।

এই পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়েছে জিপিএ উন্নয়ন এবং আংশিক বিষয়ে পরীক্ষা দেয়া অকৃতকার্য বিষয়ের ক্ষেত্রেও। এতে আগের দুই পরীক্ষায় চতুর্থ বিষয় নিয়ে জিপিএ-৫ পাওয়া কেউ কেউ এবার তা পাননি।