জরুরি অবস্থা শেষে মিয়ানমারে নির্বাচন

মিয়ানমারে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি) সরকারের রাষ্ট্রীয় উপদেষ্টা অং সান সু চিকে আজ সোমবার ভোরে আটক করেছে দেশটির সেনাবাহিনী। এর পর পরই আগামী এক বছরের জন্য দেশটিতে জরুরি অবস্থা জারি করেছে বার্মিজ আর্মি। পাশাপাশি প্রেসিডেন্টসহ সরকারি দলের আরো কয়েকজন শীর্ষ নেতাকে আটক করা হয়েছে।

অং সান সু চি

পরবর্তীতে এক বিবৃতিতে মিয়ানমার সেনাবাহিনী জানিয়েছে, দীর্ঘ এক বছরের জরুরি অবস্থা শেষ হলে আবারও গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সেই নির্বাচনে বিজয়ী দলের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করা হবে।

সেখানে আরো বলা হয়েছে, আমরা সম্পূর্ণ ভারসাম্য ও ন্যায্যতার সহিত বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করবো। কাজেই একটি অবাধ ও নিরপেক্ষ সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার পরই ক্ষমতা হস্তান্তর করা হবে।

সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট জানিয়েছে, মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী কর্তৃক পরিচালিত টেলিভিশন থেকে একটি বার্তা প্রচার করা হচ্ছে। সেখানে বলা হয়েছে, গত নির্বাচনে জালিয়াতির অভিযোগ থাকায় সরকার ভেঙে দিয়ে সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান সিনিয়র জেনারেল মিং অং হ্লাইংয়ের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করা হয়েছে। তিনিই এখন দেশের ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট। বিস্তারিত না বলা হলেও এই বিবৃতি থেকে স্পষ্ট, আবারও সামরিক শাসনে চলে গেলো মিয়ানমার।

জেনারেল মিং অং হ্লাইং

সু চিকে আটক করার পর থেকেই মিয়ানমারে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন তাদের সম্প্রচার বন্ধ করে দিয়েছে। প্রধান প্রধান শহরগুলোর রাস্তায় টহল দিচ্ছে সেনাবাহিনী। শহরগুলোতে মোবাইল ও ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়া হয়েছে।

গত বছরের শেষদিকে অনুষ্ঠিত নির্বাচনের পর থেকেই এমন একটি অভ্যুত্থানের আশঙ্কা করে আসছিলেন বিশ্লেষকরা। কারণ ওই নির্বাচনের ফলাফল বাতিলের দাবি জানিয়ে আসছে সেনা সমর্থিত বিরোধী দল। যাতে প্রচ্ছন্ন সায় ছিল সেনাবাহিনীর।

প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের ৮ নভেম্বর মিয়ানমারে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়, যাতে দ্বিতীয় বারের মতো জয় পায় সু চির দল ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি)। তবে বিরোধী দলের অভিযোগ, নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দলকে সুবিধা পাইয়ে দেয়া হয়েছে। দীর্ঘ সামরিক শাসনের বিলুপ্তির পর এটা ছিল দেশটির দ্বিতীয় গণতান্ত্রিক নির্বাচন। প্রথমটি হয় ২০১৫ সালে। সেবারও এনএলডি জয় পেয়েছিল।