ইরানের তেল বিক্রি করে দিলো আমেরিকা

এক মিলিয়ন ব্যারেলের বেশি ইরানি জ্বালানি তেল বিক্রি করে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। তেহরানের ওপর সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের নতুন নিষেধাজ্ঞার আওতায় গত বছর ওই তেল জব্দ করা হয়। যা ইরান থেকে ভেনিজুয়েলায় যাচ্ছিল বলে দাবি করা হয়। অন্যদিকে, জব্দ করা ইরানের আরেকটি তেলের কার্গো মার্কিন বন্দরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।

জব্দ করা ইরানের ওয়েল ট্যাঙ্কার

মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের এক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ট্রাম্প প্রশাসন বেসামরিক বাজেয়াপ্তকরণ পদ্ধতি ব্যবহার করে গত বছর একটি নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে ইরানের ওপর। দাবি করা হয়, চারটি ট্যাঙ্কারে করে ইরান থেকে ভেনিজুয়েলায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল জ্বালানি তেল। এ সময় প্রায় ১২.২ মিলিয়ন ব্যারেল জ্বালানি জব্দ করা হয়।

রয়টার্স বলছে, ইরানের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞার আওতায় ট্রাম্প প্রশাসনের জব্দের তালিকায় এটিই সবচেয়ে বড় ঘটনা। জব্দ করা তেল পরবর্তীতে যুক্তরাষ্ট্রের বন্দরে নিয়ে যাওয়া হয়। ইরানি তেল বিক্রির এই অর্থ রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের শিকার মার্কিনিদের সহায়তা হিসেবে দেওয়া হবে বলে জানা গেছে। ২০১৫ সালে মার্কিন সরকার এই ফান্ড গঠন করে।

মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্ট

মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্র মার্ক রাইমন্ডি রয়টার্সকে বলেছেন যে, ইরানি তেলের কার্গো বিক্রি সম্পন্ন হয়েছে। তবে এই অর্থ ‘এখনও চূড়ান্ত ব্যয় নির্বাহের প্রক্রিয়া চলছে’। এ ছাড়া বিক্রিত তেলের সঠিক মূল্যও জানাতে পারেননি তিনি। ইউরোপীয় বেঞ্চমার্কের পেট্রোলের দামের ভিত্তিতে এর মূল্য কয়েক লাখ ডলার হবে বলে মনে করা হচ্ছে।

রাইমন্ডি এও জানিয়েছেন যে, জব্দ করার এই আদেশ কার্যকরের জন্য সরকারকে ওয়াশিংটন ডিসির জেলা আদালতের অনুমতি নিতে হবে। সেখান থেকে অনুমতি পেলে ওই অর্থ যুক্তরাষ্ট্রের ভিকটিমস অফ স্টেট স্পনসরড টেররিজম ফান্ডে স্থানান্তর করা হবে।

এদিকে, গত সপ্তাহে মার্কিন বাহিনী আরেকটি তেলের ট্যাঙ্কার জব্দ করেছে, যা ইরাক ও ইরান থেকে এসেছে বলে দাবি করা হয়েছে। লাইবেরিয়ান পতাকাযুক্ত অপরিশোধিত তেলের অ্যাকিলিয়াস ট্যাঙ্কারটি শেষবারের মতো ক্যারিবিয়ান সমুদ্রসীমায় দেখা যায়। জব্দ করার পর সেটি এখন মার্কিন বন্দরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।

ইরানের একটি তেল শোধনাগার

অবশ্য ইরান এখনও ট্যাঙ্কার জব্দ নিয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।

ইরানের পরমাণু কর্মসূচি নিয়ন্ত্রণে দেশটির সঙ্গে ২০১৫ সালে বিশ্বের ছয় জাতি-গোষ্ঠীর চুক্তি হয়। কিন্তু ২০১৮ সালে ডোনাল্ড ট্রাম্প একতরফাভাবে চুক্তি থেকে বেরিয়ে গিয়ে তেহরানের ওপর একের পর এক নিষেধাজ্ঞা দিতে থাকেন। সেইসঙ্গে ইরানের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসীদের মদদ দেওয়ার অভিযোগ তোলা হয়। তবে তেহরান বরাবরই এসব অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে।