কাদের: প্রমাণ হলে সেই নেত্রীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রতীক নৌকা মার্কায় ভোট না দিলে ভোটের আগের দিন এলাকা ছাড়তে হবে। গত বৃহস্পতিবার এক সভায় প্রকাশ্যে এমন হুমকি দিয়েছেন মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহমুদা বেগম।

মাহমুদা বেগম ও ওবায়দুল কাদের -ফাইল ছবি

গণমাধ্যমের এ খবরের বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের জানান, তার বক্তব্যের অডিও-ভিডিও পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে। আজ শনিবার নিজ বাসায় ভার্চুয়াল এক ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা বলেন।

বিষয়টি নিয়ে প্রকৃত তথ্য জানতে মাহমুদা বেগমের সঙ্গে কথা হয়েছে জানিয়ে কাদের বলেন, তিনি অরাজনৈতিক বক্তব্য দিয়ে থাকলে, অভিযোগ সত্য প্রমাণিত হলে যথাযথ সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে তার বিরুদ্ধে।

নেতাকর্মীদের সতর্ক করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, যে যার ইচ্ছামতো বক্তব্য দিতে পারে না। এটি কোনোভাবেই প্রশ্রয় দেয়া হবে না।

গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়, গত বৃহস্পতিবার ঠাকুরগাঁও পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের এক নির্বাচনী সভায় সবাইকে নৌকায় ভোট দেয়ার কথা বলেন মাহমুদা বেগম। এ সময় তিনি বলেন, ধানের শীষে (বিএনপির প্রতীক) যাদের প্রেম, তারা ১৩ তারিখ (১৪ ফেব্রুয়ারি ভোট) ঠাকুরগাঁও ছেড়ে যাবেন।

ওই দিন সন্ধ্যার পর থেকে ধানের শীষের ভোটারদের দেখতে চান না উল্লেখ করে মাহমুদা বলেন, ভোটকেন্দ্রে তাদের আসার দরকার নেই। ভোটকেন্দ্রে যাবে শুধু নৌকা, নৌকা আর নৌকা।

আওয়ামী লীগের নৌকা, বিএনপির ধানের শীষ ও নির্বাচন কমিশনের লোগো

আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি ঠাকুরগাঁও সদর পৌরসভায় ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এখানে মেয়র পদে নৌকার প্রার্থী হয়েছেন আঞ্জুমান আরা বেগম। তিনি মহিলা আওয়ামী লীগের সদস্য। গত কয়েকদিন ধরে আঞ্জুমানের পক্ষে প্রচারণায় চালাচ্ছেন সংগঠনটির সভাপতি সাফিয়া খাতুন ও সম্পাদক মাহমুদা বেগম।

গত বুধবারের এক নির্বাচনী পথসভায়ও মাহমুদা বেগম বলেন, নৌকায় যারা ভোট দিতে না চান, তাদের চেহারা ১৩ তারিখ সন্ধ্যা থেকে ঠাকুরগাঁওয়ে দেখতে চাই না। নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, রাস্তায় ধানের শীষের কোনো পোস্টার থাকতে পারবে না। থাকবে শুধু নৌকা আর নৌকা।

এসব বক্তব্যের বিষয়ে জানতে মাহমুদা বেগমের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তা সম্ভব হয়নি। তবে এ ধরনের বক্তব্য আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা কোথাও দিচ্ছেন না বলে দাবি করেন নৌকার প্রার্থী আঞ্জুমান আরা বেগম।

প্রসঙ্গত, গত বুধবার সবাইকে নৌকায় দেয়ার কথা বলেন লক্ষ্মীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নুর উদ্দিন চৌধুরী নয়ন। এ সময় তিনি বলেন, চট্টগ্রামের (সিটি নির্বাচন) এক ভোটকেন্দ্রে ইভিএমে নৌকা মার্কায় ভোট পড়েছে ২ হাজার ৩০০টি। একটি ভোট পড়ে ধানের শীষে। ভোটের পরদিন ওই ভোট দেয়া ব্যক্তিকে ধরে ফেলেন ওয়ার্ড নেতারা। কোন ভোটটি নৌকার বাহিরে গেছে, তা ধরে ফেলা যায়।

নুর উদ্দিন চৌধুরী নয়ন -ফাইল ছবি

ইভিএমে একুলে কে কোথায় টিপ দেয়, ওকুলে তা বুঝা যায় উল্লেখ করে নুর উদ্দিন চোধুরী বলেন, উল্টাপাল্টা টিপ দিয়ে কেউ রাজাকার-খন্দকার মোশতাক হবেন না। উল্টাপাল্টা টিপলে ভোটের পরদিন যন্ত্রটি পরীক্ষা করলে সব কিছু সিসি ক্যামেরার মতো বেরিয়ে আসবে।

স্থানীয় সরকার নির্বাচনের বিষয়ে তিনি আরো বলেন, মেয়র পদে উন্নয়নের জন্য ভোট হবে, এটা দলের (আওয়ামী লীগ) সিদ্ধান্ত। তবে কাউন্সিলর পদে তাদের মতো সোজা নিরপেক্ষ ভোট হবে।

এর আগে একই ধরনের বক্তব্য দিয়েছেন কুষ্টিয়া ও রাজশাহীর একাধিক আওমায়ী লীগ নেতা। এ নিয়ে নানা সমলোচনাও হয়েছে।