ভারতীয় রাজ্যসভায় কাশ্মিরের প্রতিনিধিত্ব থাকছে না

ইতিহাসে তৃতীয়বারের মতো ভারতীয় পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ রাজ্যসভায় জম্মু ও কাশ্মির রাজ্যের কোনো রাজনৈতিক প্রতিনিধিত্ব থাকছে না।বিরোধী নেতা গোলাম নবি আজাদসহ এ অঞ্চলের চার পার্লামেন্ট সদস্য এ সপ্তাহের মধ্যে অবসর নিতে যাচ্ছেন। ফলে তাদের আসন খালি হয়ে যাচ্ছে।

ভারতীয় পার্লামেন্ট ভবন

এ রাজ্য থেকে সরাসরি নির্বাচনের মাধ্যমে ছয়জন এমপি নিম্নকক্ষ লোকসভায় যান। চারজন বিধানসভার মাধ্যমে নির্বাচিত হয়ে রাজ্যসভায় প্রতিনিধিত্ব করেন।

২০১৯ সালের ৫ আগস্ট ভারত যখন রাজ্যটির স্বায়ত্তশাসন বিলুপ্ত করে দুটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে পরিণত করে, লোকসভা আসন নতুন করে বিভাজন করা হয়। পাঁচ আসন যায় জম্মু ও কাশ্মিরে এবং এক আসন যায় লাদাখ অঞ্চলে।

২০১৮ সালে যখন নির্বাচিত বিধানসভা ভেঙে দেওয়া হয়, তখন রাজ্যসভায় প্রতিনিধি নির্বাচনের পদ্ধতি আর অবশিষ্ট থাকেনি। আঞ্চলিক দল ন্যাশনাল কনফারেন্স এবং পিডিপি যখন কোয়ালিশন সরকারের পরিকল্পনা করছে বলে জল্পনা চলছিল, তখন গভর্নর বিধানসভা ভেঙে দেন।

জম্মু ও কাশ্মিরের মানচিত্র

এর আগে, ১৯৯১ থেকে ১৯৯৬ পর্যন্ত নির্বাচিত বিধানসভা না থাকায় ১৯৯৪ সালের এপ্রিল থেকে ১৯৯৬ সালের অক্টোবর পর্যন্ত এ বিতর্কিত অঞ্চল থেকে উচ্চকক্ষে কোনো প্রতিনিধিত্ব ছিল না।

রাজ্যটি গভর্নরের শাসনাধীনে চলে এলে ২০০৮ সালের নভেম্বর থেকে ২০০৯ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত তিন মাস আসনগুলো খালি ছিল।

১৯৯১ সালে অস্থিতিশীল নিরাপত্তা পরিস্থিতির কারণে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে না পারায় ১৯৯১ থেকে ১৯৯৬ পর্যন্ত লোকসভায় কোনো প্রতিনিধি পাঠাতে পারেনি রাজ্যটি।

প্রসঙ্গত, ভারতীয় সংসদের উচ্চকক্ষ রাজ্যসভার সদস্যসংখ্যা ২৪৫। ভারতের রাষ্ট্রপতি শিল্প, সাহিত্য, বিজ্ঞান ও সমাজসেবার ক্ষেত্র থেকে ১২ জন সদস্যকে রাজ্যসভায় নির্বাচিত করেন; তারা মনোনীত সদস্য নামে পরিচিত। অন্যান্য সদস্যরা রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলির বিধানসভা কর্তৃক নির্বাচিত হন। রাজ্যসভার সদস্যদের কার্যকালের মেয়াদ ছয় বছর এবং প্রতি দুই বছর অন্তর সদস্যদের এক-তৃতীয়াংশ অবসর নেন। রাজ্যসভা স্থায়ী কক্ষ। নির্দিষ্ট সময় অন্তর লোকসভার অবলুপ্তি ও পুনর্নির্বাচন ঘটে। কিন্তু রাজ্যসভা ভেঙে দেওয়া যায় না।