বাংলাদেশ ও নেপালের প্রশংসায় ভারতীয় সেনাপ্রধান

চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ (বিআরআই) নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ এবং একই সঙ্গে অপর দুই প্রতিবেশী বাংলাদেশ ও নেপালের সঙ্গে সম্পর্কের প্রশংসা করেছেন ভারতের সেনাপ্রধান জেনারেল এমএম নারাভানে। আসাম রাইফেল-ইউনাইটেড সার্ভিসেস ইনস্টিটিউশনের যৌথ বার্ষিক সেমিনারে বক্তব্য দেয়ার সময় তিনি এ প্রসঙ্গে কথা বলেন।

ভারতের সেনাপ্রধান জেনারেল এমএম নারাভানে

ভারতীয় সেনাপ্রধান বলেন, বিআরআই প্রকল্পের মতো মেগা সংযুক্তি বিষয়ক পরিকল্পনার লক্ষ্য হলো আঞ্চলিক নির্ভরতা সৃষ্টি করা। ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে চীনের যুদ্ধমান অবস্থার মাধ্যমে আঞ্চলিক নিরাপত্তা পরিবেশ চিহ্নিত হচ্ছে এবং তারা এর মাধ্যমে দুর্বল দেশগুলোর দিকে বৈরিতা দেখাচ্ছে। এতে করে আঞ্চলিক ভারসাম্যহীনতা এবং অস্থিতিশীলতাও সৃষ্টি হচ্ছে।

ভারতীয় গণমাধ্যম ডিএনএর প্রতিবেদনে বলা হয়, বিআরআই হলো চীনের বৈশ্বিক একটি অবকাঠামোগত প্রকল্প। পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মিরের ভেতর দিয়ে এটির গুরুত্বপূর্ণ অংশ অতিক্রম করেছে। সেখানে এটিকে বলা হয়, সিপিইসি (চায়না পাকিস্তান ইকোনমিক করিডোর)।

জেনারেল এমএম নারাভানে বলেন, আঞ্চলিক এবং আভ্যন্তরীণ কানেকটিভিটি প্রকৃতপক্ষে নিরাপত্তার সঙ্গে যুক্ত এবং চীনের প্রভাবের সঙ্গে এর ভারসাম্য আনা উচিত। বিশেষ করে পশ্চিমে ভারতের আছে ইরানের চাবাহার বন্দর প্রকল্প এবং এর সঙ্গে যুক্ত আছে আফগানিস্তান ও মধ্য এশিয়া। আর পূর্বদিকে মালাদান বহুমাত্রিক প্রকল্পে মিয়ানমারের সিতওয়ে বন্দরের দিকে।

প্রতিবেশী দেশগুলোতে চীনের ক্রমবর্ধমান উপস্থিতি এবং একতরফাভাবে ভারতের বিরোধীপূর্ণ সীমান্তে তাদের অবস্থান একটি সংঘাতময় এবং পারস্পরিক অবিশ্বাসের পরিবেশ সৃষ্টি করেছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, ২০২০ সালে চীন আগ্রাসী ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়। তারা ভারতসহ জাপান, তাইওয়ান, আসিয়ানভুক্ত দক্ষিণ চীন সাগরে এমনকি কানাডা ও অস্ট্রেলিয়ার মতো দেশের বিরুদ্ধে নানাভাবে অবস্থান নিয়েছে।

নেপাল প্রসঙ্গে বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ এই সামরিক কর্মকর্তা বলেন, তারা ভারতের দীর্ঘদিনের অংশীদার। দেশটিতে সাম্প্রতিক সময়ে বিপুল পরিমাণ চীনা বিনিয়োগ হয়েছে। রাজনৈতিকভাবে অস্থির এক সময়ে নেপালে চীনারা এভাবে এগিয়ে আসে।

''গত ডিসেম্বরে নেপালের প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ বিলুপ্ত করায় এ বছরে সেখানে নতুন নির্বাচন হওয়ার কথা। তার এই পদক্ষেপের ফলে নেপাল কমিউনিস্ট পার্টিতে ফাটল ধরেছে। যা বেইজিংয়ের জন্য হতাশার। তাই তারা ফাটল বন্ধ করার অভিপ্রায়ে শীর্ষস্থানীয় এক মন্ত্রীকে নেপালে পাঠায়।''

বাংলাদেশ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বাংলাদেশের সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ উভয় দেশের সম্পর্কের উত্থান নিয়ে প্রশংসা করেছেন। ভারতের প্রজাতন্ত্র দিবসে রাজপথে বাংলাদেশের তিন বাহিনীর কন্টিনজেন্টের মার্চ এ সম্পর্ককে আরো মজবুত করেছে।