কর্মকর্তাদের বাঁশ দিয়ে পেটান, বললেন মন্ত্রী

এ কেমন মন্ত্রী? ভারতের কট্টর ডানপন্থী সরকারের কোনো কোনো সাংসদ-মন্ত্রীর এমন উদ্ভট আচরণ নতুন কিছু নয়! মাঝেমধ্যে বেসামাল আচরণ দিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হন তারা। এবার সরকারি কর্মকর্তাদের বাঁশের লাঠি দিয়ে পেটাতে বলে আলোচনার কেন্দ্রে এলেন ভারতের পশুপালন মন্ত্রী গিরিরাজ সিং। এর আগে মুসলিমদের পাকিস্তানে পাঠানো উচিত বলে মন্তব্য করে আলোচনায় এসেছিলেন তিনি।

ভারতের পশুপালন মন্ত্রী গিরিরাজ সিং

ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়, ফের বিতর্কে বিহার রাজ্যের বেগুসরাইয়ের বিজেপি সাংসদ ও কেন্দ্রীয় পশুপালন দপ্তরের মন্ত্রী গিরিরাজ সিং। রাজ্যে প্রকাশ্য জনসভায় সরকারি কর্মকর্তাদের বাঁশ দিয়ে মারার পরামর্শ দিলেন তিনি। এরইমধ্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে সেই ভিডিও। এ বক্তব্যে যে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ক্ষুব্ধ হয়েছেন, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। নিন্দায় মুখর হয়েছেন বিরোধী রাজনৈতিক নেতারাও।

বিহারের বেগুসরাইয়ে এ জনসভা অনুষ্ঠিত হয় শনিবার। বক্তব্য রাখতে গিয়ে সরকারি কর্মকর্তাদের সরাসরি হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেন, তারা কাজ না করলে সরাসরি বাঁশ দিয়ে মারুন। সংবাদ সংস্থা এএনআইয়ের পক্ষ থেকে প্রকাশিত একটি ভিডিওতে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী গিরিরাজকে সাধারণ মানুষের উদ্দেশে বলতে শোনা যায়, ‘যদি কোনো সরকারি আধিকারিক (কর্মকর্তা) আপনাদের অভিযোগ না শোনেন, তাহলে তাদের বাঁশের লাঠি দিয়ে মারুন। আমরা তাদের কোনো বেআইনি বা অবৈধ কাজ করতে বলছি না। কিন্তু আমরা কোনো আধিকারিকের বেআইনি কাজকেও সহ্য করব না।’

তার এ বক্তব্যের পর রীতিমতো বিতর্ক তৈরি হয়েছে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর বক্তব্যের সমালোচনায় মুখ খুলেছেন বিরোধী রাজনীতিকরা। নেট দুনিয়ায় অনেকেই আবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে পালটা খোঁচা দিয়েছেন। কেউ লিখেছেন, ‘তাহলে যে রাজনৈতিক নেতারা প্রতিশ্রুতি দিয়েও তা রক্ষা করেন না, তাদের কী বলবেন?’ আরেকজন লেখেন, ‘এই ধরনের লোকজনকে কখনও নেতা বলা যায় না।’

ভারতের পশুপালন মন্ত্রী গিরিরাজ সিং

গত বছর তিনি বলেছিলেন, ‘আমাদের পূর্বসূরীদের একটা বড় ভুল হয়ে গেছে। ১৯৪৭ সালেই মুসলিমদের পাকিস্তানে পাঠিয়ে দেওয়া উচিত ছিল।’

এক জনসভায় গিরিরাজ বলেছিলেন, ‘দেশের জন্য আমাদের প্রতিজ্ঞা করার সময় এসে গেছে। ১৯৪৭-এর আগেই জিন্নাহ একটি ইসলামি রাষ্ট্রের কথা বলেছিলেন। সেই সময় যদি সব মুসলিমদের সেই দেশে পাঠিয়ে, হিন্দুদের এখানে নিয়ে আসা হতো, তাহলে আজকে এই অবস্থা হতো না। আমাদের পূর্বসূরীদের একটা বড় ভুল হয়ে গেছে।’

তার এ বক্তব্য তুমুল বিতর্কের সৃষ্টি করেছিল ভারতের রাজনৈতিক অঙ্গনে। সেবারও তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছিলেন।