তুরস্কের সেই ‘সশস্ত্র ড্রোন’ কিনতে চায় সৌদি

সৌদি আরব সামরিক ড্রোনের জন্য তুরস্কের শরণাপন্ন হয়েছে। দেশটি সশস্ত্র ড্রোন পেতে তুরস্ককে অনুরোধ করেছে বলে জানিয়েছেন তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান।

তুরস্ককের সশস্ত্র ড্রোন

কিন্তু তুরস্কের দীর্ঘদিনের বৈরী গ্রিসের সঙ্গে সৌদি আরবের বিমান মহড়ায় অংশ নেওয়ার সিদ্ধান্তে অসন্তোষ প্রকাশ করতে দেখা গেছে তাকে।

মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে তুর্কি প্রেসিডেন্ট বলেন, গ্রিসের সঙ্গে মহড়ায় অংশ নিতে যাচ্ছে সৌদি। একই সময় তারা আমাদের কাছ থেকে ড্রোন কিনতে চায়। আশা করছি, কোনো ধরনের উত্তাপ ছাড়াই শান্তিপূর্ণভাবে এ ইস্যুর সমাধান হবে।

বিশ্বে সশস্ত্র ড্রোনের প্রথম দিকের নির্মাতা দেশের একটি হলো তুরস্ক। আর্মেনিয়ার বিরুদ্ধে ছয় সপ্তাহের নাগরনো-কারাবাখ যুদ্ধে আজারবাইজানকে এগিয়ে রেখেছিল এই ড্রোন।

তুরস্কের ভেস্টেল কোম্পানির সঙ্গে এরইমধ্যে প্রযুক্তি হস্তান্তরের চুক্তি হয়েছে রিয়াদের। এতে সৌদি আরব তাদের নিজেদের জন্য সামরিক ড্রোন তৈরি করতে পারবে।

সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের আঞ্চলিক বৈরীদের সঙ্গে সম্পর্ক মেরামতের চেষ্টা করছেন এরদোয়ান।

তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান

২০১৭ সালে কাতারের পাশে দাঁড়ানোর কারণে তুরস্কের সঙ্গে সৌদির জোটের দেশগুলোর দ্বন্দ্ব বেড়ে যায়। কিন্তু ২০১৩ সালের পর প্রথমবারের মতো মিসরের সঙ্গে কূটনৈতিক যোগাযোগের কথা জানিয়েছে তুরস্ক। রিয়াদের সঙ্গেও বিরোধ দূর করার পদক্ষেপ নিতে দেখা গেছে আঙ্কারাকে।

২০১৮ সালে ইস্তাম্বুলের সৌদি কনস্যুলেটে সাংবাদিক জামাল খাশোগির নৃশংস হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সৌদি ও তুরস্কের সম্পর্কের অবনতি ঘটে।

এক পর্যায়ে সৌদি আরবে তুর্কি পণ্য বর্জনের ডাক দেওয়া হয়। ২০২০ সালের অক্টোবরে সৌদি চেম্বার অব কমার্সের প্রধান বলেন, আমদানি, বিনিয়োগ ও পর্যটনসহ তুরস্কের সবকিছু বর্জন করা প্রত্যেক সৌদি নাগরিকের দায়িত্ব। এর কিছু দিনের মাথায় সৌদি দোকানপাট থেকে উধাও হয়ে যেতে থাকে তুর্কি পণ্য। পণ্য বর্জনের পেছনে সৌদি কর্তৃপক্ষের প্রত্যক্ষ সমর্থন ছিল বলে খবরে বলা হয়। এর মধ্যেই তুর্কি সামরিক ড্রোন কেনার ব্যাপারে রিয়াদের আগ্রহের কথা জানা গেল।

বিশ্বের পরাশক্তিগুলোর কাছ থেকে প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম কিনতে গিয়ে বিভিন্ন সমস্যায় পড়ে আঙ্কারা নিজেই সামরিক সরঞ্জাম উৎপাদন শুরু করে। ২০২০ সালের আগস্টে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ডিফেন্স নিউজ ম্যাগাজিন তাদের টপ গ্লোবাল ফার্মের তালিকায় স্থান দিয়েছিল তুরস্কের সাতটি প্রতিরক্ষাসামগ্রী উৎপাদক প্রতিষ্ঠানকে। দেশটির চারটি কোম্পানি ড্রোন উৎপাদন করে থাকে। এগুলোর মধ্যে মেশিনগান এবং গ্রেনেড বহনকারী ড্রোনও রয়েছে।