রাশিয়া-জার্মানি গ্যাসলাইনের কাজ প্রায় সম্পন্ন, যুক্তরাষ্ট্রের হুমকি

রাশিয়া-জার্মানি প্রাকৃতিক গ্যাস পাইপলাইন নির্মাণ নিয়ে আবারও তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন বলেছেন, ওয়াশিংটনের বিরোধিতার পরও নর্ড স্ট্রিম-২ গ্যাস পাইপলাইন নির্মাণ করা হবে কিনা, সে সিদ্ধান্ত তারা নিজ দায়িত্বেই নেবে।

নর্ড স্ট্রিম-২ গ্যাস পাইপলাইন

এ পাইপলাইন বন্ধে মার্কিন সরকার কিছু করতে পারে কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে ব্লিংকেন সিএনএনকে বলেন, ‘শেষ পর্যন্ত, পাইপলাইন তৈরির কাজ সম্পন্ন করার চেষ্টা যারা করছে, এটা তাদের ওপর নির্ভর করে। আমরা কেবল নিশ্চিত করতে চেয়েছি যে, আমাদের অবস্থান এ পাইপলাইন নির্মাণের বিরুদ্ধে। এবং, বিষয়টা আমরা পরিষ্কার করেছি।’

ব্লিংকেন বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট বাইডেন স্পষ্ট করে বলেছেন যে, তার বিশ্বাস - পাইপলাইনটি একটি বাজে ধারণা। এটি ইউরোপের পক্ষে খারাপ, যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে খারাপ। মার্কিন কংগ্রেসে অনুমোদন করা আইন অনুযায়ী এ পাইপলাইন সম্পন্ন করার কাজে অংশ নেওয়া সংস্থাগুলির ওপর আমাদের নিষেধাজ্ঞা দিতে হবে।’

প্রসঙ্গত, জার্মানি চেষ্টা করছে কয়লা এবং পরমাণু জ্বালানি শক্তির ব্যবহার কমিয়ে আনতে। এর অংশ হিসেবে বাল্টিক সাগরের তলদেশ দিয়ে নর্ড স্ট্রিম পাইপলাইনের মাধ্যমে রাশিয়া থেকে গ্যাস আনে দেশটি।

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন

নর্ড স্ট্রিম-২ কিন্তু রাশিয়া থেকে জার্মানিতে গ্যাস সরবরাহের প্রথম প্রকল্প নয়। নর্ড স্ট্রিম-১ নামে একটি পাইপলাইন জার্মানিতে গ্যাস সরবরাহ করছে।

নর্ড স্ট্রিম-১-এর নির্মাণকাজ শেষ হয় ২০১১ সালে। দ্বিতীয় প্রকল্পটি চালু হওয়ার কথা রয়েছে ২০২১ সালে। এটির দৈর্ঘ্য ২ হাজার ৪৬০ কিলোমিটার, যার প্রায় পুরোটাই এরইমধ্যে বসানো হয়ে গেছে।

সমালোচকরা বলছেন, নর্ড স্ট্রিম-২ প্রকল্পের মাধ্যমে জার্মানি গ্যাসের জন্য রাশিয়ার ওপর খুব বেশি নির্ভরশীল হয়ে পড়বে। অন্যদিকে বাল্টিক দেশগুলো এ প্রকল্পের বিরোধিতা করছে এই কারণে যে, এ পাইপলাইনকে রক্ষার জন্য রুশ নৌবাহিনী পুরো অঞ্চলজুড়ে টহল দিতে থাকবে। রাশিয়া তার সামরিক অভিযানের জন্য একে ব্যবহারের সুযোগ পাবে। এতে এসব দেশের নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব হুমকির মুখে পড়তে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের দুশ্চিন্তা হলো, এতে এসব দেশে যুক্তরাষ্ট্রের কর্তৃত্ব হুমকির মুখে পড়বে এবং রাশিয়ার কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠিত হবে।