মিয়ানমারে প্রাণহানি ৫০০ ছাড়ালো

জান্তাবিরোধী বিক্ষোভে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে মিয়ানমারে প্রতিনিয়ত মারা যাচ্ছে গণতন্ত্রকামী জনগণ। দেশটি যেন রীতিমতো মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে। ফেব্রুয়ারির শুরু থেকে এখন পর্যন্ত চলমান এই বিক্ষোভে মারা গেছেন পাঁচ শতাধিক নিরস্ত্র মানুষ। এএফপির খবরে বলা হয়, আজ মঙ্গলবার (৩০ মার্চ) নিহতের এই সংখ্যা জানিয়েছে স্থানীয় একটি পর্যবেক্ষক সংস্থা।

পর্যবেক্ষক সংস্থাটির নাম দ্য অ্যাসিসটেন্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল প্রিজনার্স (এএপিপি)। আজ মঙ্গলবার তারা জানিয়েছে, ১ ফেব্রুয়ারি অভ্যুত্থানের পর থেকে ২৯ মার্চ পর্যন্ত ৫১০ জন নাগরিককে হত্যা করেছে মিয়ানমারের জান্তা সরকার। তারা এও বলেছে, প্রকৃত সংখ্যা আরো অনেক বেশি হবে। অনেক ক্ষেত্রে লাশ গুম করে পরিবারকে ভয় দেখিয়ে মুখ বন্ধ রাখা হয়েছে।

হতাহতের ধারাবাহিকতায় মিয়ানমারে গত শনিবার (২৭ মার্চ) ছিল ভয়াবহ একটি দিন। এদিন এক প্রকার ঘোষণা দিয়েই ১৬৪ বিক্ষোভকারীকে হত্যা করেছে দেশটির সামরিক সরকার। গণতন্ত্রকামী জনগণের ওপর নির্বিচারে গুলি চালিয়ে দেশটির সামরিক বাহিনী সেদিন সশস্ত্র বাহিনী দিবস উদযাপন করেছে।

গত ১ ফেব্রুয়ারি সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে দেশটির নেত্রী অং সান সু চি, প্রেসিডেন্ট এবং ক্ষমতাসীন দল এনএলডির শীর্ষ নেতাদের গ্রেপ্তার করে ক্ষমতা দখল করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। তার পর থেকেই রাস্তায় নেমে জান্তাবিরোধী বিক্ষোভ করে আসছে মিয়ানমারের গণতন্ত্রকামী মানুষ।

চলমান বিক্ষোভের মধ্যেই গত ২৭ মার্চ মিয়ানমারের সেনাপ্রধান তথা বর্তমান জান্তা সরকারের প্রধান মিন অং হ্লাইং রাজধানী নেইপিদোতে সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে আয়োজিত কুচকাওয়াজে অংশ নিয়ে ঘোষণা দিয়েছেন যে, সেনাবাহিনীও গণতন্ত্র চায় এবং একটি সুষ্ঠু গণতান্ত্রিক নির্বাচন আয়োজন করাই তাদের লক্ষ্য। বিক্ষোভকারীরা আন্দোলনের নামে মিয়ানমারের স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তার ক্ষতি করছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

আন্দোলনের কারণে মিয়ানমারের নির্বাচন বিলম্বিত হচ্ছে বলে উল্লেখ করলেও ঠিক কবে দেশটিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে সে সম্পর্কে সুনির্দিশষ্ট কোনো ইঙ্গিত দেননি হ্লাইং। বরং অভ্যুত্থানের পর দেশটিতে এক বছরের জন্য জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে। যা আসলে তাদের দীর্ঘ শাসনেরই ইঙ্গিত দেয়।