ইয়েমেনে যুদ্ধ বন্ধে আমরণ অনশনে আমেরিকান নারী

ইমরান সালেহ, ১৭ দিন কোনো কিছু মুখে দেননি। ২৬ বছর বয়সী ইয়েমেন বংশোদ্ভুত এ আমেরিকান নাগরিক তার ছোট বোনকে নিয়ে ওয়াশিংটন ডিসির সামনে আমরণ অনশন করছেন। দীর্ঘ ৬ বছর ধরে ইয়েমেনের ওপর চাপিয়ে দেওয়া যুদ্ধে দেশটিতে যে মানবিক বিপর্যয় চলছে, তার প্রতি বিশ্বের দৃষ্টি ফেরাতে মিশিগান রাজ্য থেকে এসে এ অনশন করছেন ইমরান সালেহ।

ইয়েমেনে যুদ্ধ বন্ধে আমরণ অনশনে আমেরিকান নারী

আলজাজিরাকে ইমরান সালেহ বলেন, চলমান সংঘাতে লাখ লাখ ইয়েমেনি চরম দুর্ভিক্ষের মধ্যে দিন অতিবাহিত করছে। তাদের প্রতি সহানুভূতি জানাতে অনশনকেই বেছে নিয়েছি। আমরা মনে করি, ইয়েমেনে প্রকৃত পক্ষে যা ঘটছে, বিশ্ব তার কিছুই জানতে পারছে না।

ইয়েমেনি লিবারেশন মুভমেন্টের এই সাধারণ সমন্বয়ক জানান, তার সাথে ছয়জন অনশন শুরু করেন। তবে এখন তারা দুই বোন রয়েছেন। শুধু পানি খেয়ে আছেন।

‘অনাহারে থাকলে শরীরের অবস্থান কেমন হয়, তা আমরা বিশ্বকে দেখাতে চাই। আমরা জানি আমাদের এ প্রচেষ্টায় কারও মনোযোগ ইয়েমেনের মানুষের প্রতি পড়বে না। কিন্তু ইয়েমিনেরা বছরের পর বছর যে পরিস্থিতি মোকাবেলা করছে, তা বুঝতে মানুষকে সহায়তা করবে’, যোগ করেন ইমরান সালেহ।

ইয়েমেনে যুদ্ধ বন্ধে আমরণ অনশনে আমেরিকান নারী

২০১৪ সালে হুথি বিদ্রোহীরা রাজধানী সানাসহ ইয়েমেনের বিরাট অংশের দখল নেয়। এরপর থেকে সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের নেতৃত্বাধীন জোট রিয়াদে আশ্রয় নেওয়া দেশটির প্রেসিডেন্ট আবেদ-রাব্বু মনসুর হাদিকে ক্ষমতায় বসানোর জন্য হামলা চালিয়ে আসছে। তাদের নৌ ও বিমান হামলায় ইয়েমেনের যুদ্ধ পরিস্থিতিতে মানবিক বিপর্যয় দেখা দেয়। আন্তর্জাতিক দাতা সংস্থা, মানবাধিকারকর্মী ও জাতিসংঘের তথ্য অনুসারে, ইয়েমেনে এ বছর দেড় কোটি মানুষকে না খেয়ে দিন পার করতে হতে পারে। এর মধ্যে ৫ বছর পর্যন্ত বয়সী ৪ লাখ শিশুকেও না খেয়ে থাকতে হবে।

ইমরান সালেহ বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র সৌদি জোটকে ইয়েমেন হামলায় সহায়তা করে আসছে। বাইডেন প্রশাসন এ সমর্থন বন্ধ না করা পর্যন্ত আমরা অনশন চালিয়ে যাব।’

গত ফেব্রুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ইয়েমেনে সৌদি জোটের আগ্রাসন বন্ধ ও তাদের কাছে আর অস্ত্র বিক্রি না করার পরিকল্পনা ঘোষণা করেন। এ ঘোষণার এক মাস পার হলেও এ বিষয়ে স্পষ্ট কিছু জানায়নি তারা। উল্টো হুথিদের হামলা থেকে রক্ষায় সৌদি আরবকে সব ধরনের সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে বাইডেন প্রশাসন।