তালেবান: জোর করে মাার্কিন সেনাদের বিদায় করব

যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রশাসনের সঙ্গে করা চুক্তি অনুযায়ী এ বছরের ১ মে’র মধ্যে আফগানিস্তান থেকে সব মার্কিন সেনা ফিরিয়ে নেওয়ার কথা। কিন্তু বাইডেন প্রশাসন জানিয়েছে, ১ মে নয়, ১১ সেপ্টেম্বরের মধ্যে সব সেনা প্রত্যাহার করা হবে। এ ঘোষণা মানতে পারেনি তালেবান। তারা বলেছেন, সেনা প্রত্যাহারের বিষয়ে মার্কিন সরকার তাদের সঙ্গে যে চুক্তি করেছিল, ওয়াশিংটন তা লজ্জাজনকভাবে লঙ্ঘন করেছে।

তালেবানের রাজনৈতিক কার্যালয়ের মুখপাত্র মোহাম্মাদ নাঈম ওয়ারদাক

এদিকে, বাইডেনের নতুন ঘোষণার পর আকস্মিকভাবে আফগানিস্তান সফর করেছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন।

কাতারের রাজধানী দোহায় তালেবানের রাজনৈতিক কার্যালয়ের মুখপাত্র মোহাম্মাদ নাঈম ওয়ারদাক বৃহস্পতিবার ইরানের প্রেস টিভিকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে বলেন, ওয়াশিংটন তার ওয়াদা মেনে চলতে ব্যর্থ হয়েছে, ২০২০ সালে তালেবানের সঙ্গে যে চুক্তি হয়েছিল, তার প্রতি তারা সম্মান দেখাননি।

নাঈম ওয়ারদাক বলেন, এখন তালোবানের সামনে অগ্রাধিকার হচ্ছে আফগানিস্তান থেকে জোরপূর্বক মাার্কিন সেনা বহিষ্কার করা। তিনি বলেন, আফগান জনগণ দখলদারদের বিরুদ্ধে জিহাদে লিপ্ত রয়েছে এবং গত বিশ বছর ধরে বিদেশি সামরিক আগ্রাসনের মুখে তারা নিজেদেরকে রক্ষা করে চলেছে।

নাঈম ওয়ারদাক আরও বলেন, ‘আমাদের দেশকে স্বাধীন করার জন্য আমরা লড়াই করছি। জনগণকে রক্ষার জন্য আমরা স্বাধীন একটি সরকার চাই।’

আকস্মিক সফরে কাবুল গেছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন

গত মঙ্গলবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছেন তবে তিনি কোনো সুনির্দিষ্ট সময়সীমা ঘোষণা করেননি। মার্কিন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এ বছরের ১১ সেপ্টেম্বরের আগেই আফগানিস্তান থেকে সমস্ত সেনা প্রত্যাহার করা হবে।

নাঈম ওয়ারদাক বলেন, আফগানিস্তানে সম্প্রতি যে সহিংসতা বেড়েছে, তার জন্য যুক্তরাষ্ট্র দায়ী। তিনি বলেন, ‘মার্কিন বোমাবর্ষণ আমাদেরকে অভিযানের পরিধি বাড়াতে বাধ্য করেছে।’

এদিকে, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন আকস্মিক সফরে আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুল গেছেন। প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন মার্কিন সেনা প্রত্যাহার নিয়ে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে তিনি আফগানিস্তান সফরে গেলেন।

কাবুল সফরে গিয়ে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আফগান নেতাদেরকে এ কথাই বলেছেন যে, সেখান থেকে শিগগিরি সেনা প্রত্যাহার শুরু হবে এবং তা শেষ করতে আমেরিকা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

আফগান প্রেসিডেন্ট আশরাফ গণি ও অন্য নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে ব্লিংকেন বলেন, ‘অংশীদারিত্ব পরিবর্তন হচ্ছে, তবে এ অংশীদারিত্ব ধৈর্যের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ।’

ব্লিংকেনের সঙ্গে বৈঠকে আশরাফ গণি বলেছেন, ‘আমরা আপনাদের নতুন সিদ্ধান্তকে সম্মান জানাই এবং আমাদের অগ্রাধিকারের সঙ্গে সমন্বয় করে নিচ্ছি।’

আফগানিস্তানে মোতায়েন একদল মার্কিন সেনা সদস্যের উদ্দেশ্যে ব্লিংকেন বলেন, ‘আপনারা ও আপনাদের পূর্বসূরীরা গত ২০ বছরে ধরে যা করেছেন, তা সত্যিই অসাধারণ কাজ।’

মার্কিন দূতাবাসে বেশ কয়েকজন আফগান সুশীল সমাজের নেতার সঙ্গেও বৈঠকে করেন ব্লিংকেন। তবে সেই বৈঠক সম্পর্কে সাংবাদিকদের কেউ ব্রিফ করেননি।