সৌদি কারাগারে আলোড়ন সৃষ্টিকারী ১০ আলেম

রাজতান্ত্রিক সৌদি শাসন ব্যবস্থায় ইসলাম ও রাসুল (সা.) এর খিলাফতের অনেক কিছুই এখন আর অবশিষ্ট নেই। বিশেষ করে মত প্রকাশের স্বাধীনতা অনেক আগেই নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। অথচ এখানেই একদিন অর্ধপৃথিবীর শাসক হযরত ওমরের (রা.) ভুল আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছিলেন একজন সাধারণ নারী। ওমরের গায়ে নতুন জামা কেনো প্রশ্ন করেছিলেন দুর্বল এক বৃদ্ধ।

আজ আর সৌদিতে সে দৃশ্য নেই। শাসকের ভুলের বিষয়ে কথা বললেই গ্রেপ্তার করে আটকে রাখা হয় অন্ধকার কারাগারে। বিশ্বে আলোড়ন সৃষ্টিকারী অনেক আলেমই সৌদি সরকারের নির্যাতনের স্বীকার হয়ে কারাগারের অন্ধকারে দিন কাটাচ্ছেন। এমনই কয়েকজন সম্পর্কে আজকের এ লেখা।

১. শায়েখ সালমান আল আওদাহ

২০১৭ সালের ১০ মে এ আলেমকে গ্রেপ্তার করে সৌদি সরকার। কাতার ও সৌদি ইস্যুতে শায়েখ আওদাহ নিরপেক্ষ অবস্থানে ছিলেন, এটাই ছিলো তার অপরাধ। শুধু সৌদি নয় বিশ্বজুড়েই খ্যাতি কুড়িয়েছেন এ ইসলামি চিন্তাবিদ। গত রমজানে তার ফাসি কার্যকর করার কথা ছিলো। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে টুইটারে প্রতিবাদের ঝড় ওঠায় এখনো ফাসির হুকুম মাথায় নিয়েই কারাভোগ করছেন তিনি।

২. শায়েখ সালেহ আল মুনাজ্জিদ

কোরআন-সুন্নাহর ওপর তার মত অগাধ পান্ডিত্য বর্তমান সময়ে খুব কম স্কলারেরই আছে। তিনি সৌদির সুপ্রসিদ্ধ দায়ি ছিলেন। ইসলামের জটিল বিষয়গুলো সহজ করে তুলে ধরতেন মানুষের সামনে। ২০১৭ সালের ২৭ সেপ্টম্বর তাকে গ্রেফতার করা হয়। এই সন্দেহে যে, তিনি ক্রাউন প্রিন্স মুহাম্মদ বিন সালমানের সিংহাসনে আরোহনের পথে বাধা হতে পারেন।

৩. শায়েখ সালে আলী তালেব

সাম্প্রতিক সময়ে পবিত্র বাইতুল্লাহ শরিফের সবচেয়ে জনপ্রিয় খতিব ছিলেন তিনি। সত্য উচ্চারণ করতে ভয় পেতেন না কোনো লাল চোখকে। ২০১৮ সালের ২২ আগস্ট আচমকাই সৌদি সরকার তাকে গ্রেপ্তার করে।

৪. শায়েখ সাফার আল হাওয়ালি

বিখ্যাত মুসলিম দায়ি ও লেখক। তার অনেক বই পাশ্চাত্যে বেশ সাড়া ফেলেছে। বিখ্যাত এ আলেমকেও ২০১৮ সালের জুলাই মাসে আটক করে সৌদি প্রশাসন।

৫. শায়েক মুহাম্মাদ আল শরিফ

উগ্রবাদী আখ্যা দিয়ে ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বর মাসে গ্রেফতার করা হয় তাকে।

৬. শায়েখ আবদুর রহমান আল মাহমুদ

বিখ্যাত এ ইসলামি স্কলারকেও উগ্রবাদী আখ্যা দিয়ে ২০১৯ সালের অক্টোবর মাসে আটক করা হয়।

৭. শায়েখ সুলায়মান আল উল-ওয়ান

এ শায়েখের কাছে কয়েক হাজার মানুষ ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। ২০০৪ সাল থেকে সৌদির কারাগারে আটক আছেন তিনি।

৮. শায়েখ সাউদ আল হাশিমি

২০০৭ সাল থেকে তিনি সৌদি সরকারের কারাগারে আছেন।

৯. শায়েখ আবদুল আজিজ আত-তারিফি

প্রখ্যাত এ দায়ি ২০১৬ সালে গ্রেপ্তার হন।

১০. শায়েখ সুলাইমান আল রাশেদি

এ নিয়ে তাকে পাঁচবার গ্রেপ্তার হয়েছেন তিনি। সর্বশেষ ২০১৬ সালে তিনি সৌদির সেনাবহিনীর হাতে আটক হন। এখনো তিনি কারাগারেই আছেন।