বাংলাদেশি ‘অনুপ্রবেশকারীদের’ বিরুদ্ধে ফের অমিতের ক্ষোভ

‘অনুপ্রবেশকারীরাই আপনার ভোটব্যাঙ্ক’, পশ্চিমবঙ্গের জনসভা থেকে এভাবেই তৃণমূল সুপ্রিমো ও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়কে আক্রমণ করলেন অমিত শাহ।

অমিত শাহ বলেন, আমরা এমন একটি সরকার গড়ব, যেখানে মানুষ তো দূরের কথা, পতঙ্গও সীমান্তে পা ফেলতে পারবে না

‘বাংলাদেশিরা খেতে পায় না বলে ভারতে অনুপ্রবেশ করে’- এমন মন্তব্য করে সম্প্রতি বিতর্কের কেন্দ্রে আসেন বিজেপির সাবেক সভাপতি ও ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। এবার সেই ‘অনুপ্রবেশকারীদের’ মমতার ভোটব্যাঙ্ক বললেন তিনি। এনআরসির মাধ্যমে আসাম থেকে ‘বাংলাদেশিদের’ বের করে দিতে মরিয়া বিজেপি। পশ্চিমবঙ্গে ভোটের প্রচারণায়ও তিনি সেই ‘অনুপ্রবেশকারীদের’ বিরুদ্ধে আবার ক্ষোভ ঝাড়লেন।

প্রায় আড়াই বছর আগে ভারতে পা রাখা অবৈধ বাংলাদেশি অভিবাসীদের ‘উইপোকা’ বলেছিলেন বিজেপির তৎকালীন সভাপতি অমিত শাহ। তিনি এ কথাও বলেছিলেন, প্রত্যেক অবৈধ অভিবাসীকে খুঁজে খুঁজে বের করে তাদের এ দেশ থেকে তাড়ানো হবে। শাহের এ মন্তব্যের কড়া প্রতিবাদ জানিয়েছিল ঢাকা।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ‘সংবাদ প্রতিদিন’ জানিয়েছে, দক্ষিণ দিনাজপুরের ৬টি বিধানসভা আসনের নির্বাচনকে সামনে রেখে বৃহস্পতিবার হরিরামপুরে জনসভা করেন অমিত শাহ। করোনার কারণে শাহের এ সভায় যোগ দেওয়ার অনুমতি পেয়েছিলেন মাত্র ৫০০ জন। শিলিগুড়িতে বৃষ্টির কারণে নিদিষ্ট সময়ের অনেকটা পরেই সভায় যান অমিত শাহ। সেখানে তিনি বলেন, ‘দিদির কাজের খতিয়ান বলে কিছু নেই। ওনার ভাষণ শুনুন। ভাষণের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী ও আমাকে গালিগালাজ করেন। বলেন বহিরাগত, বহিরাগত আর বহিরাগত।’

বাংলাদেশ নিয়ে অমিত শাহের সাম্প্রতিক মন্তব্যের প্রতিবাদ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুল মোমেন

শাহের কথায়, ‘আমি এদেশে জন্মেছি, পালিত ও বড় হয়েছি। আমার মৃত্যু যেন এ পবিত্র ভূমিতে হয় এবং আমি এখানেই চিতায় ভস্ম হতে চাই। আমি বহিরাগত নই।’

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আক্রমণ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আপনার যে ভোট ব্যাংক তা পুরোটাই অনুপ্রবেশকারী। এ অনুপ্রবেশকারীরা বহিরাগত। আপনি তাদের ওপর নির্ভর করেই বাংলায় শাসন করতে চাইছেন।’

অমিত শাহের কথায়, ‘অনুপ্রবেশকারীদের তৃণমূল আটকাতে পারবে না, কমিউনিস্ট-কংগ্রেসও পারবে না। কারণ, এ অনুপ্রবেশকারীরা তিনটি দলের ভোটব্যাঙ্ক।’ এরপরই শাহ বলেন, ‘২ মে বিজেপির সরকার বানান। আমরা এমন একটি সরকার গড়ব, যেখানে ব্যক্তি বা মানুষ তো দূরের কথা, পতঙ্গও সীমান্তে পা ফেলতে পারবে না। বিজেপির সংকল্প বাংলায় অনুপ্রবেশকারীদের আটকানো, যা সুনিশ্চিত।’

অমিত বলেন, মতুয়া, নমশূদ্রদের নাগরিকত্ব পাওয়া উচিত। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কটাক্ষ করে বলেন, ‘মমতা দিদি আপনার সময় সমাপ্ত। বিজেপি সরকার আসবে। আমি কথা দিয়ে যাচ্ছি, ওই সম্প্রদায়দের নাগরিকত্ব দেওয়ার পাশাপাশি তাদের যথাযথ সম্মান দেব।’