জাসদ: বাবুনগরীর বক্তব্য ‘ভণ্ডামী’ ছাড়া কিছুই নয়

সাম্প্রতিক সময়ে নতুন ও পুরনো মামলায় হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের বেশ কিছু নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এরই প্রেক্ষাপটে গতকাল বৃহস্পতিবার সংগঠনটির আমীর আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী এক বিবৃতিতে সরকারের উদ্দেশে বলেন, কারা কারা অপরাধী তাদের একটি তালিকা পাঠান, আমরা স্বেচ্ছায় শান্তিপূর্ণভাবে জেলে যাব। তবুও চলমান লকডাউন তুলে নেন। কারণ এই লকডাউনে অসহায় ও খেটে খাওয়া মানুষের ব্যাপক সমস্যা হচ্ছে।

জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের লোগো

হেফাজত আমীরের ওই বক্তব্যের প্রেক্ষিতে আজ শুক্রবার গণমাধ্যমে একটি বিবৃতি পাঠিয়েছে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ। এতে বাবুনগরীর বক্তব্যকে ভণ্ডামী, চালাকি, নিম্নমানের চতুরতা, মিথ্যাচার বলে অভিহিত করা হয়েছে।

জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে বলা হয়, লকডাউনকে বাবুনগরী এমনভাবে চিহ্নিত করেছেন যে, এটা যেন বাংলাদেশ সরকারের আবিষ্কার। তাছাড়া দেশের সাধারণ মানুষকে কষ্ট দিতে এবং হেফাজতি নেতাদের গ্রেপ্তার করতে আর মুসলমানদের ইবাদত বন্ধ করতে সরকার লকডাউন দিয়েছে।

আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী

এত আরো বলা হয়, ‘লকডাউন নিয়ে বাবুনগরী যে বক্তব্য দিয়েছেন তা জাজ্বল্যমান মিথ্যাচার ছাড়া আর কিছুই নয়। এটা বাংলাদেশ সরকারের আবিষ্কার নয়। তাছাড়া বাংলাদেশেই শুধু লকডাউন দেওয়া হয়নি। করোনার বৈশ্বিক মহামারি ঠেকিয়ে মানুষের জীবন বাঁচানোর তাগিদে সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্য এবং আফ্রিকার সকল মুসলিম দেশ, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া ও পাকিস্তানসহ গোটা দুনিয়ার দেশে দেশে দফায় দফায় এই লকডাউন আরোপ করা হয়েছে।’

জাসদ নেতৃদ্বয় বিবৃতিতে বলেন, ‘‘লকডাউনের কারণে মসজিদুল হারাম এবং বিশ্বের মুসলিম দেশগুলোতে কখনো পুরোপুরি মসজিদ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। আবার পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত আকারে তা খুলে দেওয়া হয়েছে। মুসলমানরা লকডাউনের কারণে ইবাদত-বন্দেগি তথা নামাজ, রোজা, কুরআন শরীফ পড়া বন্ধ করেননি। বরং স্বাস্থ্যবিধি মেনে ঘরেই তারা নিরবচ্ছিন্নভাবে ইবাদত করছেন।’

জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার

এতে বলা হয়, ‘লকডাউনকে সুনির্দিষ্ট ফৌজদারি মামলায় অভিযুক্ত আসামিকে গ্রেপ্তার করার সঙ্গে মিলিয়ে দেয়াও বাবুনগরীর নিকৃষ্ট চতুরতা, ধূর্ততা, ধড়িবাজি, চালাকিপনা মার্কা কথা। ফৌজদারি মামলায় সুনির্দিষ্টভাবে অভিযুক্ত আসামি লকডাউনে গ্রেপ্তারের ক্ষেত্রে কি রাষ্ট্রীয় আইনে এমনকি ইসলামে কোনো বাধা আছে? দেশের সাধারণ মানুষের দুঃখ-কষ্ট নিয়ে কথা বলা বাবুনগরীর মায়াকান্না ও ভণ্ডামি ছাড়া কিছুই নয়।’

বিবৃতিতে আরো বলা হয়, ‘লকডাউন তুলে নেয়ার বিনিময়ে নিজ থেকে জেলে যাবার কথা বলে একই মুখে সুনির্দিষ্ট ফৌজিদারি মামলায় অভিযুক্ত হয়ে গ্রেপ্তার আসামিদের মামলা প্রত্যাহার ও মুক্তি দাবি করে বাবুনগরী নিজেই তার নিকৃষ্টতা, দ্বৈততা ও ভণ্ডামির প্রমাণ দিয়েছে।”