পেট-ক্ষুদ্রান্তেও হানা দিচ্ছে ব্ল্যাক ফাঙ্গাস

প্রাণঘাতী করোনার তাণ্ডবে বিপর্যস্ত ভারতে ব্ল্যাক ফাঙ্গাসকেও (কালো ছত্রাক) মহামারি ঘোষণা করা হয়েছে। দেশটির ৯ হাজার মানুষের দেহে এই ছত্রাকের উপস্থিতি শনাক্ত হয়েছে এরইমধ্যে, যা ‘মরার ওপর খাঁড়ার ঘা’ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

ভারতে ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের হানা

নয়াদিল্লির চিকিৎসকেরা বলছেন, ছত্রাকটি সাধারণত ত্বক, ফুসফুস, চোখ ও মস্তিষ্কে হানা দিয়ে থাকে। কিন্তু এবার কোলনের মধ্যে, পেটে হানা ও ক্ষুদ্রান্তে ক্ষত দেখা দিচ্ছে, যা বিরল ঘটনা।

স্যার গঙ্গা রাম হাসপাতালের চিকিৎসকেরা জানান, ব্ল্যাক ফাঙ্গাসকে ‘মিউকরমাইকোসিস’ বলা হয় চিকিৎসা বিজ্ঞানে। ছত্রাকঘটিত বিরল এই রোগের অন্ত্রে প্রবেশ নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।

হাসপাতালটির এক বিবৃতিতে শনিবার বলা হয়, করোনা থেকে সেরে ওঠা দুই রোগীর ক্ষুদ্রান্তে ছত্রাকের আক্রমণ নিশ্চিত হওয়া গেছে। ডায়াবেটিক থাকা ওই রোগীদের বায়োপসি রিপোর্টে বিষয়টি ধরা পড়ে।

ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের চিত্র

জিনিউজের খবরে বলা হয়, ৫৬ বছর বয়সী প্রথম রোগী সংক্রমণ থেকে সুস্থ হওয়ার পরেও পেটে ব্যথায় ভুগছিলেন, তার স্ত্রীরও একই অবস্থা। প্রথমে অম্বলের ওষুধ দেয়া হলে তাতে কাজ না হওয়ায় সিটি স্ক্যান করা হয়। সে অনুযায়ী পরে রোগীর ক্ষুদ্রান্ত অপারেশন করতে গিয়ে ছত্রাকের হানায় ছিন্নবিচ্ছিন্ন অন্ত্রের দেয়াল দেখতে পান চিকিৎসকরা।

জানা যায়, রোগীর জেজুনাম অংশে ক্ষত তৈরি হওয়ায় অ্যান্টি ফাঙ্গাল ট্রিটমেন্ট শুরু করা হয়। পরে ক্ষয়ে যাওয়া অংশটি পাঠানো হয় বায়োপসিতে, তাতেই ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের অস্তিত্ব মেলে।

চিকিৎসকদের বরাত দিয়ে আনন্দবাজার পত্রিকা জানিয়েছে, করোনায় আক্রান্তরাই এই ছত্রাকের আক্রমণের শিকার হচ্ছেন। ভাইরাসটি থেকে সেরে ওঠার পরে অনেককেই সংক্রমিত হতে দেখা যাচ্ছে ছত্রাকে।

ভারতে করোনার চিত্র

মূলত, করোনার কারণে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা যখন তলানিতে গিয়ে ঠেকে, সেই সুযোগে এটি মানুষকে আক্রমণ করে। মারাত্মকভাবে ছড়িয়ে পড়া এই ছত্রাকে এরইমধ্যে মারা গেছেন বেশ কয়েকজন।

ভারতের গুজরাট, তামিলনাড়ু, তেলঙ্গানা, রাজস্থান ও পশ্চিমবঙ্গে ব্ল্যাক ফাঙ্গাস বিস্তার লাভ করেছে। এতে করোনার সঙ্কটের মধ্যেই নতুন উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে ভারতজুড়ে।

খবরে বলা হয়, সীমান্তবর্তী পশ্চিমবঙ্গে অনেকের দেহে ছড়িয়ে পড়ায় এই ছত্রাক নিয়ে ভয়ের কারণ আছে বাংলাদেশের জন্যও। ছত্রাকে সংক্রমিত হয়ে রাজ্যটিতে এক নারীর মৃত্যু হয়েছে।