‘কাশ্মিরে ইসরায়েলি মডেল ব্যবহার করছে ভারত’

ফিলিস্তিনে যেভাবে দখলদারিত্ব ও অবৈধ বসতি স্থাপন করছে ইসরায়েল, সেই একই মডেল ভারত অধিকৃত জম্মু-কাশ্মিরে ব্যবহার করা হচ্ছে। সেই লক্ষ্যে ভারতীয় কর্মকর্তাদের ইসরায়েলি দখলদার বাহিনীর মাধ্যমে প্রশিক্ষণ দিয়ে তাদের কাশ্মিরে পাঠানো হচ্ছে। এমন অভিযোগ করেছেন পাকিস্তান পার্লামেন্টের কাশ্মির বিষয়ক কমিটির চেয়ারম্যান শেহরিয়ার খান আফ্রিদি।

কাশ্মিরে ইসরায়েলি মডেল ব্যবহার করছে ভারত

দেশটির রাজধানী ইসলামাবাদে আয়োজিত এক সেমিনারে বৃহস্পতিবার তিনি বলেন, বিশ্ব সম্প্রদায়ের উচিত অধিকৃত কাশ্মির উপত্যকায় ভারতীয় নৃশংসতার বিরুদ্ধে দাঁড়ানো।

শেহরিয়ার খান আফ্রিদি বলেন, ‘২০১৯ সালের ৫ আগস্টের আগে (৩৭০ ধারা বাতিল) ভারত সরকার তাদের শীর্ষ পুলিশ কর্মকর্তা ও বেসরকারি আমলাদের শিক্ষণ-প্রশিক্ষণের জন্য ইসরায়েলে পাঠায়। এর পর তাদের ফিরিয়ে এনে ইসরায়েলি মডেল অনুসরণের জন্য জম্মু ও কাশ্মিরে বদলি করা হয়।’

তিনি আরো বলেন, ‘এর মধ্যে রয়েছেন কুখ্যাত পুলিশ অফিসার ইমতিয়াজ হুসেইন, যার বিরুদ্ধে ২০০ কাশ্মিরি মুসলিম হত্যার অভিযোগ রয়েছে। ২০১৯ সালের ৫ আগস্টের আগে ইমতিয়াজ হুসেইনকে ইসরায়েলের নিরাপত্তা ব্যবস্থা (সিস্টেম) বোঝার জন্য সেখানে পাঠানো হয়। এর পর তাকে ফিরিয়ে এনে জম্মু-কাশ্মিরে বিক্ষোভ দমনের জন্য নিরাপত্তা প্রধান হিসেবে শ্রীনগরে বদলি করা হয়।’

তুরস্কের বার্তা সংস্থা আনাদুলু জানিয়েছে, আফ্রিদি বলেছেন, ইসরায়েলের দখলদারিত্ব ও অবৈধ বসতি স্থাপনের পুরো অনুকরণ করা হচ্ছে জম্মু-কাশ্মিরে, যা জাতিসংঘ রেজ্যুলেশনের চরম লঙ্ঘন।

পাকিস্তান পার্লামেন্টের কাশ্মির বিষয়ক কমিটির চেয়ারম্যান শেহরিয়ার খান আফ্রিদি

তিনি বলেন, ‘নতুন করে ৪০ লাখ লোকের বসতি স্থাপনের জন্য সার্টিফিকেট দেওয়া হয়েছে।’ ‘এদের মধ্যে মূল ভারতের ৫ লাখ এমন আছে, যাদের কখনো কাশ্মির ভ্রমণের অভিজ্ঞতাও নেই।’

পাকিস্তানি এই রাজনীতিবিদ আরো অভিযোগ করেন যে, স্থানীয় (জম্মু-কাশ্মির) নয়, এমন ভারতীয়দের সেখানে পর্যটনের সুযোগ সুবিধা এবং বন্যভূমি লিজ (ভাড়া) দেওয়া হচ্ছে, অথচ কাশ্মিরীদের এগুলো থেকে দূরে রাখা হচ্ছে।

‘ভারত সরকার কাশ্মিরীদের অর্থনৈতিকভাবে টুঁটি চেপে ধরছে এবং জাতিসংঘ রেজ্যুলেশনের ঘৃণ্য লঙ্ঘনের মাধ্যমে তাদের অধিকার কেড়ে নিচ্ছে’, বলেন আফ্রিদি।

সেমিনারে পাকিস্তান-শাসিত জম্মু-কাশ্মিরের প্রেসিডেন্ট মাসুদ খান, তুরস্কের রাষ্ট্রদূত মুস্তাফা ইয়ারদাকুল, ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রদূত আহমাদ রাবায়ি ও আজারবাইজানের রাষ্ট্রদূত আলি ফিকরাত ওগ্লু আলিজাদা এবং পাকিস্তান সরকারের কর্মকর্তারাও সেমিনারে বক্তব্য রাখেন।

বক্তারা বলেন, আধুনিক বিশ্বে মানবাধিকার লঙ্ঘনের সবচেয়ে নিকৃষ্ট উদাহরণ কাশ্মির ও ফিলিস্তিন। একই সঙ্গে উভয় ইস্যুই জাতিসংঘের বয়সের মতোই পুরনো, কিন্তু আজ পর্যন্ত তার কোনো সমাধান হয়নি।