মিয়ানমারে সেনা-গ্রামবাসী সংঘর্ষে নিহত ২০

মিয়ানমারের ক্ষমতা দখল করা জান্তা সরকারের সেনাবাহিনীর সঙ্গে দেশটির একদল গ্রামবাসীর ভয়াবহ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। আজ শনিবার ভোররাতের এই সংঘাতে নিহত হয়েছে কমপক্ষে ২০ জন, আহত হয়েছে অনেক মানুষ।

মিয়ানমারে সেনা-গ্রামবাসী সংঘর্ষ, ফাইল ছবি

স্থানীয় গণমাধ্যম ও বাসিন্দারা জানান, সেনাবাহিনীর সদস্যরা শেষ রাতে অস্ত্র উদ্ধারে অভিযান শুরু করে হালায়াসওয়ে এলাকায়। একের পর এক বাড়িতে তল্লাশি চালালে পাল্টা প্রতিরোধ গড়ে তোলেন গ্রামবাসীরা।

এতে উভয় পক্ষের মধ্যে বড় ধরনের সংঘর্ষ বাঁধলে মুহুর্মুহু গুলি ছুড়তে থাকে সেনা সদস্যরা। জবাবে গুলতি ও তীর-ধনুক নিয়ে তাদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে স্থানীয় বাসিন্দারা। এতে হতাহতের এই ঘটনা ঘটে।

মিয়ানমারে সেনা-গ্রামবাসী সংঘর্ষ, ফাইল ছবি

বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, ঘটনাস্থলটি মিয়ানমারের প্রধান শহর ইয়াংগুন থেকে ১৫০ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে অবস্থিত। হালায়াসওয়ে আজ ভোরের আলো ফোঁটার আগে থেকেই দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়, চলে দীর্ঘ সময় ধরে।

এদিকে, বার্তা সংস্থা ডেল্টা জানিয়েছে, সংঘর্ষের পর ২০ জনের মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে। বহু মানুষ আহত হয়েছেন, সেই সংখ্যাটা জানা যায়নি। স্থানীয়দের অভিযোগ, কথিত অস্ত্র উদ্ধারের নামে নিরীহ গ্রামবাসীর ওপর হামলা চালায় সেনা সদস্যরা, নারীদের লাঞ্ছিত করা হয়। এক পর্যায়ে সৈন্যদের প্রতিরোধ গড়ে তোলার চেষ্টা করে তারা।

বিদ্রোহীদের হামলার পর মিয়ানমারের স্থাপনা, ফাইল ছবি

এর আগে গত সোমবার দেশটির কায়াহ রাজ্যের দেমোসো শহরে ‘কারেন বিদ্রোহী’দের সঙ্গে ভয়াবহ সংঘর্ষ হয় সেনাদের। ওই সংঘাতে অন্তত ৮০ সেনা নিহত ও আরো কিছু সংখ্যক আহত হয়।

বিদ্রোহী গোষ্ঠীর বরাত দিয়ে মিয়ানমার নাউ জানায়, সেনাদের সঙ্গে কারেন জাতীয় প্রতিরক্ষা বাহিনীর (কেএনডিএফ) সংঘর্ষটি হয় কায়াহ রাজ্যের দেমোসো শহরে। ওই দিন বেলা দেড়টায় ১৫০ সদস্যের একটি সেনা দলের ওপর হামলা চালায় বিদ্রোহী গোষ্ঠীটি।

সু চির সঙ্গে মিন অং হ্লাইং, ফাইল ছবি

এক বিবৃতিতে তারা জানায়, তাদের দৃঢ় প্রতিরোধের মুখে পড়ে জান্তা বাহিনীর সেনারা পিছু হটতে বাধ্য হয়। এর ফলে ৬০ মিলিমিটার মর্টার লঞ্চার এবং ২০টি হালকা অস্ত্র জব্দ করে তারা। পরে বিদ্রোহীদের ওপর হেলিকপ্টার, জঙ্গি বিমান ও কামানের গোলা নিক্ষেপ করে সেনাবাহিনী। এতে এক কারেন যোদ্ধা নিহত ও ৬ জন আহত হয়েছে।

গত ১ ফেব্রুয়ারি অভ্যুত্থান ঘটিয়ে সেনাবাহিনী ক্ষমতা দখল করার পর বিদ্রোহীদের সঙ্গে সেনাদের বেশ কয়েকটি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এসব হামলার সময় স্থানীয় জনগণের সমর্থন ও সাহায্য পাওয়ার কথা জানিয়েছে বিদ্রোহীরা।