ইউরো ২০২০: অঘটন ঘটাতে প্রস্তুত মেসিডোনিয়া

এবারের ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপের আন্ডারডগ দলগুলোর একটি উত্তর মেসিডোনিয়া। টুর্নামেন্টের মূলপর্বে জায়গা পেতে যথেষ্ঠ বেগ পেতে হয়েছে তাদের। সরাসরি ইউরোর টিকিট কাটতে ব্যর্থ হয়েছে তারা। ১৪ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপের তৃতীয় হয়েছে দলটি। পরে প্লে-অফ পর্বে কসোভো ও জর্জিয়াকে হারিয়ে চমক দেখায় দলটি; প্রথমবারের মতো টিকিট কাটে স্বপ্নের মঞ্চের।

এরপর আরো বড় চমক দেখায় মেসিডোনিয়া। গেল মার্চে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের ম্যাচে চারবারের চ্যাম্পিয়ন জার্মানিকে হারিয়ে মহাঅঘটনের জন্ম দেয় দলটি। জাতীয় দলের এমন অভূতপূর্ব সাফল্যে রাষ্ট্রটিতে উৎসবের ঢল নামে। ওই একটা জয় স্বপ্ন দেখাচ্ছে মেসিডোনিয়াকে। চলমান ইউরোতে আরো অঘটন ঘটাতে মরিয়া তারা।

প্রধান কোচ - ইগর অ্যাঙ্গেলোভস্কি: নিজ দেশ উত্তর মেসিডোনিয়ার বাইরে কখনো কাজ করেননি অ্যাঙ্গেলোভস্কি। এ কারণে ২০১৫ সালে যখন জাতীয় দলের দায়িত্ব নিয়েছিলেন তখন অনেকেই ভ্রু কুঁচকে তাকায়। জবাবটা মাঠেই দিয়েছেন অ্যাঙ্গেলোভস্কি। এই কোচ এখন দেশের জাতীয় নায়ক হয়ে উঠেছেন। তার প্রতি অগাধ আস্থা আছে মেসিডোনিয়ানদের।

প্রধান অস্ত্র - গোরান পানডেভ: উত্তর মেসিডোনিয়ার ফুটবল ইতিহাসে সবচেয়ে বড় তারকা পানডেভ। তার দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে ইউরোর মূলপর্বে জায়গা পেয়েছে দল। মূলত স্ট্রাইকার তিনি। তবে জাতীয় দলে আজকাল মিডফিল্ডার ভূমিকায় খেলছেন পানডেভ। সদ্য বিদায়ী মৌসুম বাদ দিলে সবশেষ ১১ বছর আগে ইন্টার মিলন যখন সিরি’এ লিগ জিতেছিল তাতে পানডেভের অবদান ছিল মূখ্য।

মেসিডোনিয়ান এই কিংবদন্তি আলো ছড়িয়েছেন ইতালিয়ান অন্য দুই ক্লাব লাৎসিও এবং নাপোলিতেও। সিরি’এ লিগে একশ’র বেশি গোল আছে তার। ৩৭ বছর বয়সী এই তারকা অবসরের কথা ভেবেছিলেন একবার। কিন্তু সিদ্ধান্ত পাল্টে ফেলেন তিনি। মেসিডোনিয়া রাষ্ট্রটিতে এই মুহূর্তে তিনিই সবচেয়ে বড় সেলিব্রেটি। প্লে-অফ ম্যাচে জর্জিয়ার বিপক্ষে গোল করেন তিনি।

তরুণ তুর্কি - এলজিফ এলমাস: বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের ম্যাচে জার্মানির বিপক্ষে গোল করে ইতিহাসের পাতায় নাম লেখান এলমাস। ২১ বছর বয়সী এই তরুণ তুর্কি এবারের ইউরোতে অন্যতম ভরসার নাম। দুই বছর আগে তুর্কি ক্লাব ফেনারব্যাচ থেকে নাপোলিতে নাম লেখান এলমাস। মূলত পরিবর্তিত খেলোয়াড় হিসেবেই তাকে বেশি ব্যবহার করে থাকেন কোচরা।

গ্রুপপর্ব: ‘সি’ গ্রুপের সবচেয়ে দুর্বল দল ভাবা হয় উত্তর মেসিডোনিয়াকে। তাই বলে দলটিকে হালকা করে দেখলে চলবে না। তাহলে জার্মানির পরিণতি হতে পারে। তবে ফুটবলে রূপকথা প্রতিদিন হয় না এটাও মনে রাখতে হবে। সেই হিসেবে গ্রুপপর্বের তিনটি ম্যাচেই অগ্নিপরীক্ষা দিতে হবে মেসিডোনিয়াকে। গ্রুপে তাদের তিন প্রতিদ্বন্দ্বীর দুটিই এই টুর্নামেন্টের স্বাগতিক (অস্ট্রিয়া ও নেদারল্যান্ডস)। ইউক্রেনের সঙ্গে তারা খেলবে দ্বিতীয় ম্যাচ।

সম্ভাব্য একাদশ - গোলরক্ষক: দিমিট্রেভস্কি; ডিফেন্ডার: নিকোলভ, রিস্টোভস্কি, ভেলকোভস্কি, মুসলিউ, অলিয়স্কি; মিডফিল্ডার: আদেমি, বার্ধি, এলমাস, পানডেভ; ফরওয়ার্ড: ত্রাজকোভস্কি।

সেরা সাফল্য: ৬২

ফিফা র্যাঙ্কিং: নেই (প্রথম অংশগ্রহণ)

উত্তর মেসিডোনিয়া ম্যাচসূচি:

১৩ জুন: অস্ট্রিয়া-উত্তর মেসিডোনিয়া (এরিনা ন্যাশনালা; বুখারেস্ট)
১৭ জুন: ইউক্রেন-উত্তর মেসিডোনিয়া (এরিনা ন্যাশনালা; বুখারেস্ট)
২১ জুন: নেদারল্যান্ডস-উত্তর মেসিডোনিয়া (ইয়োহান ক্রুইফ স্টেডিয়াম; অ্যামস্টারডাম)