পেনাল্টি দুঃখ: পুরনো দুর্ভাগ্য নতুন করে বরণ

ফুটবল কখনো কখনো ভাগ্যের খেলা বটে। টাইব্রেকার তাই একটা বেরসিক পদ্ধতি। যেখানে ইতিহাসের দুর্ভাগা কয়েকটা দল আছে। দলগুলোর মধ্যে ইংল্যান্ড অন্যতম। সবশেষ রোববার রাতে ঘরের মাঠ ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামে পুরনো দুর্ভাগ্য নতুন করে বরণ করতে হলো থ্রি লায়নদের। ইউরো চ্যাম্পিয়ন হলো ইতালি।

কাল রাতে এগিয়ে থেকেও ইউরো ফাইনাল জিততে পারেনি স্বাগতিক ইংল্যান্ড। ম্যাচের শুরুতে লিড নিয়েও শেষ পর্যন্ত তা ধরে রাখতে পারেনি তারা। দ্বিতীয়ার্ধে গোল করে সমতায় ফেরে ইতালি। নির্ধারিত সময় শেষে অতিরিক্ত সময়ের পরও ফল থাকল ১-১। ম্যাচ গড়ায় টাইব্রেকারে। যেখানে বাজিমাত অতিথি ইতালির। ২০১২ সালেও এই ইতালির কাছে টাইব্রেকারে ৪-২ গোলে হেরে শেষ আট থেকে বিদায় নিয়েছিলো ইংলিশরা।

কাল এসেছিল প্রতিশোধের সুযোগ। কিন্তু তা কাজে লাগতে পারেনি তারা। টাইব্রেকারে সুবিধাজনক অবস্থায় থেকেও আজ্জুরিদের কাছে ৩-২ গোলে হেরে যায় ইংল্যান্ড। মৌলিক টুর্নামেন্টে ১০ টাইব্রেকারের মধ্যে এটা ইংলিশদের সপ্তম হার। থ্রি লায়নদের ভাগ্য কতটা খারাপ তা বোঝাতে এই তথ্যটাই যথেষ্ঠ। তাতে স্বপ্নের রুপালি ট্রফিটা অধরাই থাকল তাদের কাছে। প্রথমবার ঘরের মাঠে ফাইনালে হার।

ইংল্যান্ডের টাইব্রেকার দুঃখ অনেক পুরনো। এবার সেটা বেশি উচ্চারিত হচ্ছে দলটির প্রধান কোচ গ্যারেথ সাউথগেটের কারণে। ২৫ বছর আগ জার্মানির বিপক্ষে পেনাল্টি মিস করেছিলেন এই কোচ। ইতিহাস তার কাছেই ঘুরে আসল আবার। এবার সাউথগেট কোচের ভূমিকায়। এবারের হতাশা ছাড়িয়ে গেছে তার অতীত দুঃস্বপ্নকে।

২০০৬ বিশ্বকাপ ফাইনালেও একই ‍দুঃখ ইংল্যান্ডের। ৬১ মিনিটে লাল কার্ড দেখেন ওয়েন রুনি। ম্যাচের পরের এক ঘণ্টা খেলেও পর্তুগালকে গোল করতে দেয়নি তারা। অথচ থ্রি লায়নরা টাইব্রেকারে গিয়ে হেরে বসল ৩-১ গোলে। ২০১৬ ইউরোতে আইসল্যান্ডের কাছে টাইব্রেকারে ২-১ গোলে হেরে শেষ ষোলো থেকে ছিটকে যায় ইংললিশরা।

মেজর টুর্নামেন্টে ইংল্যান্ডের একমাত্র সাফল্য ১৯৬৬ সালে বিশ্বকাপ জয়। নিজেদের ফুটবল ইতিহাসে দ্বিতীয় ফাইনাল খেলার জন্য তাদের অপেক্ষা করতে হয় ৫৫ বছর। এবারের ইউরোতে সেই অপেক্ষা ঘুচিয়েছে তারা। কিন্তু স্বপ্নপূরণ হলো না। বরং আরো একটা হৃদয়ভাঙা হারের দুঃখ বয়ে বেরাতে হবে তাদের।