ঈদের পর যেসব শর্তে ‘কঠোর লকডাউন’

করোনার সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে চলমান ‘কঠোর লকডাউন’ আগামীকাল বুধবার থেকে শিথিল হচ্ছে, যা বহাল থাকবে ২২ জুলাই পর্যন্ত। পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে ৮ দিনের জন্য এমন পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। আজ মঙ্গলবার এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করেছে সরকারের মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। একইসাথে সেখানে ঈদের পরের কঠোর লকডাউনের কথাও বলা হয়েছে।

লকডাউন, ফাইল ছবি

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ২৩ জুলাই থেকে ১৪ দিনের জন্য যে কঠোর লকডাউন কার্যকর হবে, সেখানে ২৩টি শর্ত আরোপ করা হয়েছে। 

উল্লেখযোগ্য শর্তগুলো হলো- সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি অফিস বন্ধ রাখতে হবে। চলবে না সড়ক, রেল ও নৌ পথে গণপরিবহন, অভ্যন্তরীণ বিমান ও সব ধরনের যানবাহন। শপিংমল-মার্কেটসহ সব ধরনের দোকানপাট বন্ধ থাকবে। খুলবে না পর্যটন কেন্দ্র, রিসোর্ট, কমিউনিটি সেন্টার ও বিনোদন কেন্দ্র। বন্ধ থাকবে সব শিল্প-কলকারখানা; জনসমাবেশ হওয়ার মতো সামাজিক অনুষ্ঠান, রাজনৈতিক ও ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান।

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, ফাইল ছবি

প্রাতিষ্ঠানিক পরিচয় দেখিয়ে আইনশৃঙ্খলা, জরুরি সেবা, খাদ্যদ্রব্য পরিবহণ, ত্রাণ বিতরণ, রাজস্ব আদায়, টেলিফোন ও ইন্টারনেট সেবার প্রতিষ্ঠান, গণমাধ্যম সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও যানবাহন চলবে। ওষুধ ও নিত্যপণ্য কেনা, চিকিৎসা সেবা, মরদেহ দাফন বা সৎকারের মতো অতি জরুরি কাজ ছাড়া বাইরে যাওয়া যাবে না। নির্দেশনা অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

কাঁচা বাজার ও নিত্যপণ্যের দোকান সকাল ৯টা-বিকাল ৩টা পর্যন্ত; খাবারের দোকান ও রেস্তোরাঁ সকাল ৮টা-রাত ৮টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। বিধিনিষেধের আওতামুক্ত থাকবে পণ্য পরিবহনের ট্রাক, লরি, কাভার্ড ভ্যান, কার্গো ভেসেল; বিমান, নৌ ও স্থল বন্দর এবং সংশ্লিষ্ট অফিস। কার্ড দেখিয়ে নেয়া যাবে করোনার টিকা। চালু থাকবে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট, টিকেট দেখিয়ে বিদেশগামী যাত্রীরা গাড়িতে যেতে-আসতে পারবে।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, ফাইল ছবি

বিধিনিষেধ বাস্তবায়নে বেসামরিক প্রশাসনের সহায়তায় করতে মাঠ পর্যায়ে প্রয়োজনীয় সংখ্যক সেনা সদস্য মোতায়েন করবে সেনাবাহিনী। প্রয়োজনীয় সংখ্যক নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটকে দায়িত্ব দেবে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।

প্রত্যেক জেলার সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নিয়ে সমন্বয় সভা করে টহলের অধিক্ষেত্র, সময় ও এলাকা নির্ধারণ করবেন জেলার ম্যাজিস্ট্রেট। তবে আদালতসমূহের ব্যাপারে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা জারি করবে সুপ্রিম কোর্ট। বাংলাদেশ ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ নির্দেশনা দেবে ব্যাংক, বীমা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের বিষয়ে।

লকডাউনে ফাঁকা ঢাকা, ফাইল ছবি

বিভাগ, জেলা ও উপজেলায় হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তার কার্যালয়ের ব্যাপারে নির্দেশনা দেবে অর্থ বিভাগ। তবে সরকারি কর্মচারিদের নিজ কর্মস্থলে থাকতে হবে এবং দাপ্তরিক কাজ করতে হবে ভার্চুয়ালি।

শর্তাবলী পালনে জেলা প্রশাসন ও পুলিশকে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে প্রয়োজনীয় ক্ষমতা দিতে পারবেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক। ‘সংক্রামক রোগ প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূল আইন-২০১৮’ এর অধীনে তাকে এই ক্ষমতা দেয়ার কথা উল্লেখ করা হয়েছে প্রজ্ঞাপনে।