আপনি পড়ছেন

মার্কিন সৈন্য আফগানিস্তান ছাড়ার ঘোষণার পর থেকেই চীনের সঙ্গে কৌশলগত ভালো সম্পর্ক স্থাপন করেছে তালেবান। তাদের এই সম্পর্কের মধ্যে চীন ঝুঁকি যেমন দেখছে, তেমনি তালেবানের নেতৃত্বাধীন আফগানিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক রাখার ক্ষেত্রে ভালো দিকও দেখছে দেশটি।

afgan release taliban detainee

চীন তাদের সীমান্তবর্তী কোনো শক্তিকে ঘৃণা করে না। পশ্চিমা প্রতিদ্বন্দ্বীদের সঙ্গে দশকের পর দশক স্থিতিশীলতা বজায় রেখে আসছে। তবে প্রতিদ্বন্দ্বী যদি তালেবানের মতো কোনো পক্ষ হয়, তাহলে সেটা চীনের জন্য উদ্বেগের ব্যাপার। কারণ জিনজিয়াংয়ে মুসলিমদের ব্যাপারে সমর্থন তাদের লাগবে।

চায়না কমিউনিস্ট পার্টি ও তালেবানের মধ্যে আদর্শগত কিছুটা মিল রয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যাই হোক না কেন, তালেবান বা চীন দুপক্ষই নিজেদের স্বার্থের বিষয়টিকে গুরুত্ব দেবে। সাংহাই ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজ ইউনিভার্সিটির মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক বিশেষজ্ঞ ফ্যান হোংদা বলছেন, আফগানিস্তানের ক্ষমতায় কারা সেটা চীনের জন্য সমস্যা নয়, কিন্তু সম্পর্কের স্থিতিশীলতা নিয়ে যথেষ্ট ঝুঁকি রয়েছে।

china flag

আফগানিস্তানের সঙ্গে চীনের মাত্র ৭৬ কিলোমিটারের সীমান্ত রয়েছে। এ সীমান্ত পাহাড় দিয়ে ঘেরা এবং কোনো সড়ক বা ক্রসিং পয়েন্ট নেই। কিন্তু সীমান্তটি নিয়ে চীনের বড় উদ্বেগ রয়েছে, কারণ সীমান্ত জিনজিয়াং অঞ্চলের সঙ্গে লাগোয়া। আফগানে তালেবান ক্ষমতায় আসলে জিনজিয়াংয়ের মুসলিম জনগোষ্ঠী তালেবানের সঙ্গে সম্পর্ক সৃষ্টি করতে মরিয়া থাকবে। সেখানেই চীনের উদ্বেগ।

চীন-পাকিস্তান অক্ষশক্তি বইয়ের লেখক অ্যান্ড্রিউ স্মল বলছেন, চীন তালেবানের সঙ্গে চুক্তিতে আসতে পারে। তবে চীন সরকার তালেবানের ধর্মীয় এজেন্ডা পর্যবেক্ষণ করছে এবং তালেবানের ধর্মীয় আবেগের বিষয়টি চীনকে অস্বস্তিতে ফেলে দিয়েছে। তিনি বলছেন, উইঘুর যোদ্ধাদের ব্যাপারে তালেবান চীনের সঙ্গে একমত নাও হতে পারে।

taliban afganistan pakistan

আফগানিস্তান ও মধ্য এশিয়ার দেশগুলোর মধ্য দিয়ে কীভাবে বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ প্রকল্প এগিয়ে নেওয়া যায় সেটাই গুরুত্ব দিচ্ছে চীন। এজন্য কাবুলে তাদের শক্তিশালী ও বন্ধুত্বপূর্ণ প্রশাসন প্রতিষ্ঠা দরকার।

তালেবান চীনকে বিবেচনা করছে বিনিয়োগ ও বাণিজ্যিক উৎস হিসেবে। তাই সরাসরি হোক আর পাকিস্তানের মাধ্যমে হোক, তালেবান সেটা চাচ্ছে। তালেবান মুখপাত্র সোহাইল শাহীন বলছেন, বিশ্বের সকল দেশের সঙ্গে তালেবান সম্পর্ক স্থাপন করতে চায়। যে কোনো দেশ আফগানিস্তানের খনিজ সম্পদে বিনিয়োগ করতে চাইলে তাদের স্বাগত জানাবে তালেবান। আমরা সবাইকে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ভালো সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করব।

বেইজিং ইতোমধ্যে তালেবানের সঙ্গে সংলাপের পথ উন্মুক্ত করেছে। ২০১৯ সালে তালেবানের আয়োজনেই সেটা হয়েছিল। লিব্রে ডি ব্রুজেলেস ইউনিভার্সিটির রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক থিয়েরি কেলনার বলেন, পাকিস্তানের মাধ্যমে তালেবানের সঙ্গে সম্পর্ক গড়তে হবে চীনকে। তাহলে এটা বেশি স্থায়ী হবে এবং যেকোনো প্রকল্পে হামলার সম্ভাবনা অনেক কমে যাবে।

২০০৭ সালে কাবুলের কাছে একটি লাভজনক তামার খনি প্রকল্প হাতে নিয়েছিল চীন। কিন্তু দীর্ঘ সময় যুদ্ধাবস্থার কারণে সেটা টিকিয়ে রাখা সম্ভব হয়নি। কাবুলের রাজনীতি বিজ্ঞানী আতা নূরি বলছেন, আফগান সরকার চীনা প্রকল্পে নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে। কিন্তু তারা যদি তালেবানের সঙ্গে কাজ করে তাহলে তারা বিনিয়োগ করে ক্ষতিগ্রস্ত হবে না।

তালেবান সরকারে এসে যদি তাদের সুযোগ দেয় তাহলে তা নেওয়া উচিত। চীন আফগানে অন্য উদ্দেশ্যে আসতে চায় না। কিন্তু অর্থনৈতিক-বাণিজ্যিক সুবিধা পেলে তারা আফগানিস্তানে কাজ করবে।

Get the latest world news from our trusted sources. Our coverage spans across continents and covers politics, business, science, technology, health, and entertainment. Stay informed with breaking news, insightful analysis, and in-depth reporting on the issues that shape our world.

360-degree view of the world's latest news with our comprehensive coverage. From local stories to global events, we bring you the news you need to stay informed and engaged in today's fast-paced world.

Never miss a beat with our up-to-the-minute coverage of the world's latest news. Our team of expert journalists and analysts provides in-depth reporting and insightful commentary on the issues that matter most.