আপনি পড়ছেন

ইসরায়েলের এনএসও গ্রুপের নজরদারি সফটওয়্যার ‘প্যাগাসাস’ সৌদি আরব এবং আরব আমিরাতের সরকার ব্যাপক হারে ব্যবহার করেছে। ফ্রান্সের একটি এনজিওর তদন্তে জানা যায়, দেশ দুটির সরকার তাদের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ দমন করতে গিয়ে প্যাগাসাসের দ্বারস্থ হয়। দেশে ও বিদেশে থাকা সমালোচনাকারীদের বিরুদ্ধে তারা নজরদারি সফওয়্যারটি ব্যবহার করে ব্যাপক হারে। টিআরটি ওয়ার্ল্ড।

saudi emirate leaders

গত মাসে প্যাগাসাস কেলেঙ্কারি উন্মোচিত হয়। সফটওয়্যারটি বিশ্বব্যাপী শত শত সাংবাদিক, রাজনৈতিক ও মানবাধিকার কর্মী এবং আইনজীবীদের বিরুদ্ধে কিভাবে ব্যবহার করা হয়েছে তা বিশ্ববাসীর কাছে প্রকাশ হয়ে পড়ে। ২০১৬ সাল থেকে বিভিন্ন দেশের সরকার তাদের প্রতিপক্ষ দমন করতে এটি ব্যবহার করে আসছিল। ফ্রান্সের ওই এনজিওর জরিপে প্যাগাসাসের গোয়েন্দা নজরদারি শনাক্ত হয়। ১১টি দেশের ৫০ হাজার ফোনে এই প্যাগাসাস দিয়ে নজরদারি করা হচ্ছিল। এসব দেশের মধ্যে উপসাগরীয় অঞ্চলের তিনটি দেশ বাহরাইন, সৌদি আরব এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত রয়েছে।

তদন্তকারীরা আরও প্রকাশ করেছে, উপসাগরীয় অঞ্চলে আরব আমিরাত ও সৌদি আরব তারা ভয়াবহ আকারে প্যাগাসাসের মাধ্যমে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে নজরদারি কার্যক্রম চালিয়েছে। প্রতিপক্ষ রাজনীতিক, সমালোচক এবং সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে তারা অবৈধভাবে এই প্যাগাসাস ব্যবহার করেছে।

২৮ জুলাই গালফ সেন্টার ফর হিউম্যান রাইটস ইসরায়েলি ওই কোম্পানির বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করে। অভিযোগে বলা হয়, নজরদারি সফটওয়্যার কোম্পানিটি মধ্যপ্রাচ্যে মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং ব্যাপক ক্ষতি সাধন করেছে।

প্যাগাসাসের ভয়ঙ্কর তৎপরতা তখনই প্রকাশ হলো যখন সারাবিশ্বে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ক্ষীণ হয়ে আসছে এবং করোনা মহামারিতে বিশ্ব কাঁপছে। অভিযোগে বলা হয়, এনএসও গ্রুপ সেইসব দেশের সরকারের কাছে প্যাগাসাস বিক্রি করেছে যারা প্রতিপক্ষ দমনে তৎপর।

একটি মামলা দায়ের করা হয় ফ্রান্সে। মামলার বাদী হলেন আইনজীবী উইলিয়া বরডন এবং ভিনসেন্ট ব্রেনগার্থ। মামলা করার পর আইনজীবীরা বলেন, আরব বিশ্বে বিশেষ করে সৌদি আরব ও আরব আমিরাতে ব্যাপক হারে প্রতিপক্ষের ওপর নজরদারি করা হচ্ছে। সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মীদের বিরুদ্ধে এই তৎপরতা চলছে।

আমিরাতের মানবাধিকার কর্মী আহমেদ মনসুর প্যাগাসাসের নজরদারির মধ্যে ছিলেন। তাকে দশ বছরের জেল দিয়েছে দেশটির সরকার। তিনি বিশ্বাস করেন, ২০১৬ সাল থেকেই তার ওপর নজরদারি করা হচ্ছিল। ২০১৭ সালের মার্চে তিনি গ্রেপ্তার হন। তার দাবি, আমিরাতের মানবাধিকার কর্মী আলা আল সিদ্দিক ও সৌদির ইয়াহিয়া আল আশিরিকে প্যাগাসাস দিয়ে নজরদারিতে রাখা হয়েছিল। আল সিদ্দিক ছিলেন গালফ অঞ্চলের একটি মানবাধিকার সংস্থার এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর। যুক্তরাজ্যে তাকে পরিকল্পিত এক সড়ক দুর্ঘটনায় হত্যা করা হয়। আল আশিরিও যুক্তরাজ্যে নির্বাসিত। সৌদি আরবের প্রখ্যাত সাংবাদিক জামাল খাসোগিও প্যাগাসাস সফটওয়্যারের নজরদারিতে ছিলেন।

এভাবেই আবুধাবি এবং রিয়াদ প্যাগাসাসের ব্যবহার করেছে বলে অভিযোগে বলা হয়। দুবাইয়ের প্রিন্সেস লতিফা বিনতে মোহামেদ আল মাকতুম যিনি পরিবার ও দেশ ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছিলেন, তাকেও প্যাগাসাস দিয়েই শনাক্ত করা হয়।

বলা হচ্ছে, গত দুই দশক ধরে উপসাগরীয় রাষ্ট্রগুলো তাদের সমালোচক নাগরিকদের বিরুদ্ধে নজরদারি প্রযুক্তি ও অস্ত্র ব্যবহার করে আসছে। সৌদি আরব, কাতার, আলজেরিয়া, বাহরাইন, ইউএই, লেবানন, মরক্কো, তুরস্ক এবং মিশরের বহু মানুষকে নজরদারির মধ্যে রাখা হচ্ছে বহুবছর ধরে। এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে বহু হয়রানি, নজরদারি, গ্রেপ্তার নির্যাতন এবং হত্যার মতো ভয়ঙ্কর ঘটনা ঘটানো হয়েছে। তবে সৌদি আরব ও আরব আমিরাত সব অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

জামাল খাসোগির মতো বহু ঘটনা যেগুলো প্যাগাসাসের মাধ্যমে করা হয়েছে যা হয়তো প্রকাশ পায়নি। ২০২০ সালের ডিসেম্বরে টরেন্টো ইউনিভার্সিটির সিটিজেন ল্যাব জানতে পারে, প্যাগাসাস সফটওয়্যার ব্যবহার করে সৌদি আরব এবং আমিরাত আল জাজিরার ৩৬ জন সাংবাদিকের ফোন হ্যাক করে।

গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...

খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর

Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.

Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.