বাংলাদেশের অবস্থান ‘দখল’ করলো ভিয়েতনাম, নেপথ্যে ৫ কারণ

তৈরি পোশাক খাতে বরাবরই প্রথম স্থানে রয়েছে চীন, দ্বিতীয় অবস্থানে ছিল বাংলাদেশ। এবার এ দেশকে পেছনে ফেলে দ্বিতীয় স্থানটি দখল করেছে ভিয়েতনাম। ফলে পোশাক রপ্তানিতে এখন আর ঢাকা নয়, বেইজিংয়ের পরেই হ্যানয়। গত ৩০ জুলাই এমনটাই জানিয়েছে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা।

বাংলাদেশ ও ভিয়েতনামের পতাকা, ফাইল ছবি

ভয়েস অব আমেরিকা জানায়, করোনাকালে মাত্র ৯ কোটি ৬৪ লাখ ৬০ হাজার জনসংখ্যার ভিয়েতনাম গত বছরে পণ্য রপ্তানি করেছে ২ হাজার ৯০০ কোটি ডলারের। এর বিপরীতে ২ হাজার ৮০০ কোটি ডলারের পণ্য ছেড়েছে ১৬ কোটি মানুষের বাংলাদেশ। ২০১৯ সালেও ঢাকা ৩ হাজার ৪০০ কোটি ডলারের পোশাক বিদেশে পাঠিয়েছে, যা থেকে ৩০০ কোটি ডলার পিছিয়ে ছিল হ্যানয়। মহামারির মধ্যেও দেশটি কীভাবে এত ব্যবধান কাটিয়ে উঠলো, তা নিয়ে রীতিমতো আলোচনা চলছে জোরেশোরে।

পোশাক রপ্তানিতে ভিয়েতনামের চেয়ে বাংলাদেশের শেয়ারের দ্রুত পতন হয়েছে গত বছর, ৬ দশমিক ৮ থেকে ৬ দশমিক ৩-এ নেমে এসেছে। এ জন্য দেশীয় পোশাক কারখানার মালিকরা দায়ী করছেন, একক লকডাউন ও নানা বিধিনিষেধকে। তবে ভিয়েতনামের ইর্ষণীয় অগ্রগতির কারণ বলতে নারাজ তারা।

বাংলাদেশের পোশাক কারখানা, ফাইল ছবি

অবশ্য বিশেষজ্ঞরা এ ক্ষেত্রে ৫টি প্রধান কারণের কথা সামনে এনেছেন। সেগুলো হলো- ১. বাংলাদেশের চেয়ে ভিয়েতনামের পণ্য অনেক উন্নত। সস্তা পণ্য কম তৈরি করা দেশটি শ্রমিকদের অনেক বেশি সুযোগ-সুবিধা দেয়, কারখানার পরিবেশও বেশ আধুনিক। ২. মুক্তবাণিজ্য চুক্তি করায় ইউরোপের বাজারে একচেটিয়া প্রবেশাধিকার পেয়েছে ভিয়েতনাম, যা এখনো পারেনি বাংলাদেশ।

৩. ভৌগলিকভাবে এক নম্বরে থাকা চীনের প্রতিবেশী হওয়ায় দেশটির কাছ থেকে অনেক বেশি সুবিধা পেয়েছে ভিয়েতনাম। এর মধ্যে রয়েছে- কারিগরি সুযোগ-সুবিধা, সস্তায় কাঁচামাল আমদানি, বিশাল অঙ্কের চীনা বিনিয়োগ ইত্যাদি। ৪. ঢাকার মতো সস্তার পণ্য নয়, বেশ দামী পোশাক তৈরি করে থাকে হ্যানয়। এর মধ্যে হাসপাতাল সামগ্রী, সশস্ত্র বাহিনীর পোশাক ও স্কুল ইউনিফর্মসহ বিভিন্ন সামগ্রী রয়েছে। ৫. যথাযথভাবে করোনা সংকট মোকাবেলা করায় কপাল খুলে গেছে ভিয়েতনামের।

তবে আরো একটি কারণের কথা উল্লেখ করেছেন বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার মহাপরিচালক এনগোজি ওকোনজো ইওয়েলা। তিনি মনে করেন, করোনার শুরুর দিকে চীন থেকে পণ্য আমদানি বন্ধ হয়ে যাওয়ার সুযোগ নিয়েছে ভিয়েতনাম।