৩ ঘণ্টার ব্যবধানে ‘ভোল পাল্টালেন’ একরাম চৌধুরী

একই বলে রাজনীতি, যার শেষ কথা বলে কিছু নেই! যেমনটা দেখালেন নোয়াখালী-৪ আসনের সংসদ সদস্য এবং জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক একরামুল করিম চৌধুরী। মাত্র ৩ ঘণ্টার ব্যবধানে নিজের দেওয়া বক্তব্য থেকে সরে আসলেন তিনি।

একরামুল করিম চৌধুরী

বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ ক্যাপ্টেন শেখ কামালের ৭২তম জন্মদিন উপলক্ষে জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত অনুষ্ঠানে রাজনীতি ছাড়ার ঘোষণা দেন এ আওয়ামী লীগ নেতা। এর পরই তার বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। একই সঙ্গে গণমাধ্যমগুলোও এ নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করে।

একরামুল করিম চৌধুরী বলেন, ‘আমি ও আমার ছেলে সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে, আর আমরা রাজনীতি করব না। রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকব না আমরা। সেটা জেলা হোক আর বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ হোক বা অন্য কোথাও।’

অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখছেন একরামুল হক চৌধুরী

কিন্তু একই দিন বিকাল ৩টার দিকে নিজের ফেসবুক আইডিতে লাইভে এসে একরামুল করিম চৌধুরী বলেন, রাজনীতি ছাড়ার ঘোষণা নিয়ে ভুল ব্যাখ্যা করা হচ্ছে। আজকে (বৃহস্পতিবার) শেখ কামালের জন্মদিনের অনুষ্ঠান ছিল, সেখানে আমি কিছু বক্তব্য দিয়েছি। আমার সেই বক্তব্যের ভুল ব্যাখ্যা হয়েছে।

বলা হয়েছে আমি নাকি রাজনীতি ছাড়ার ঘোষণা দিয়েছি। আমি সেখানে বলেছিলাম, বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুর পর ১৯৭৫ সালে হিথরো বিমানবন্দরে বঙ্গবন্ধুকে যারা ফেরাউন বলেছে, তারা চায় আমি যেন রাজনীতিতে না থাকি। আমি কিছু কথা বলেছি তাদের বিরুদ্ধে, যারা গত সম্মেলনে আমার ছাত্রলীগ ও যুবলীগের পিঠের চামড়া তুলে দিয়েছে, বলেন একরামুল করিম চৌধুরী।

তিনি বলেন, আমার প্রাণ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। তবে হ্যাঁ, কিছু নোংরামির কারণে আমার পরিবারের অনেকে চায় যেন, আমি আওয়ামী লীগ না করি। কিন্তু একবার যারা আওয়ামী লীগ করে, এটি তাদের রক্তের নেশা হয়ে যায়। অর্থাৎ একবার যারা আওয়ামী লীগ করে, আর তারা ছাড়তে পারে না।

ফেসবুক লাইভে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি অনুরোধ জানিয়ে এই সংসদ সদস্য বলেন, বঙ্গবন্ধুকে যারা ফেরাউন বলেছে, আপনি তাদের বিচারের আওতায় আনুন। একই সঙ্গে গত সম্মেলনে যারা আমার ছাত্রলীগ ও যুবলীগের ওপর হামলা করেছে তাদেরকেও বিচারের আওতায় আনুন।

নোংরা রাজনীতি করেন না দাবি করে একরামুল করিম চৌধুরী আরো বলেন, আবারো আমি বলছি, আওয়ামী লীগকে আমি ভালবাসি। আমি নোয়াখালীর আওয়ামী লীগকে ভালবাসি। জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আমি। আমার যতদিন থাকার দরকার আছে বলে দল মনে করবে, আমিও ততদিন থাকব। নিজেকে দলের জন্য বিসর্জন দিব।

নোয়াখালী-৪ আসনের সংসদ সদস্য আরো বলেন, আজকে একটি গুরুত্বপূর্ণ দিন। এই দিনে জন্মগ্রহণ করেছিল শেখ কামাল। আর শেখ কামাল জন্মগ্রহণ করেছিল বলেই স্বাধীন হয়েছে বাংলাদেশ। শেখ কামাল জন্মগ্রহণ করেছিল বলেই আজ দেশ পরিচালনা করছেন শেখ হাসিনা।