উঠানেই দাফন ১৭ মরদেহ, চুরি ঠেকাতে কবরে ঢালাই!

বাড়ির উঠানেই একে একে দাফন করা হয়েছে বজ্রপাতে মৃত ১৭ জনের মরদেহ। এসব কবরের ওপর রীতিমতো দেয়া হয়েছে মজবুত ঢালাইও। আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় এই ঘটনা ঘটেছে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদরের নারায়ণপুরে। লাশ চুরি ঠেকাতে এমন অভিনব কৌশলের আশ্রয় নেয়ার কথা জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

উঠানেই দাফন, কবরে ঢালাই

জানা গেছে, ইউনিয়নের সূর্যনারায়ণপুর গ্রামে গত বুধবার বরযাত্রী নিয়ে পদ্মা নদী পাড়ি দিয়ে যাওয়ার পথে বজ্রপাতে মারা যান ১৭ জন মানুষ। আহত হন আরো ১২ জন, যারা সবাই একই নৌকায় ছিলেন। মৃতদের মধ্যে একই পরিবারের ৬ জন রয়েছেন, যাদের বাড়ির উঠানেই ওই দিন রাতে দাফন করা হয়।

তারা হলেন- বাড়ির মালিক তোবজুল হক, তার স্ত্রী জামিলা বেগম, মেয়ে লাচন, ছেলে বাবুল, সাদিকুল ও তার স্ত্রী টকিয়ারা বেগম। পরদিন গতকাল বৃহস্পতিবার কবরগুলোর চারপাশ খনন করে ঢালাই করা হয়। বাকিরা হলেন- চরবাগডাঙ্গা ঘাটাপাড়ার সাত্তার আলীর ছেলে সহবুল, চর সূর্যনারায়ণপুরের টিপুর স্ত্রী বেলী বেগম, ধুনু মিয়ার ছেলে সজিব, সাহালালের স্ত্রী মৌসুমী, তেররশিয়া দক্ষিণপাড়ার মৃত মহবুলের ছেলে রফিকুল, বাবুডাইংয়ের মকবুলের ছেলে টিপু, কালুর ছেলে আলম, মোস্তফার ছেলে পাতু, সুন্দরপুরের সেরাজুলের ছেলে আতিকুল ইসলাম ডাকু, জনতার হাটের বাবুর ছেলে তামিম ও নৌকার মাঝি শিবগঞ্জের দক্ষিণ পাঁকা গ্রামের রফিকুল ইসলাম।

উঠানেই দাফন, কবরে ঢালাই

এ বিষয়ে মৃত তোবজুলের জামাই মোহাম্মদ আলী বলেন, বজ্রপাতে মারা যাওয়া ব্যক্তিদের মরদেহ কবর থেকে চুরি হয় বলে শুনেছি। তাই বাড়ির সামনে কবর দেয়া হয়, তারপরেও স্বজনদের ভয় দূর না হওয়ায় ছয়টি কবরের চারপাশে তিন ফুট ইটের গাঁথুনি দিয়ে ঢালাই করা হয়।

নারায়ণপুর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য আজিজুর রহমান আজিম বলেন, বজ্রপাতে মৃত ১৭ জকে বাড়ির উঠানে কবর দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে সজিব ছাড়া বাকিদের কবরগুলো ঢালাই করা হয়েছে। সজিবের কবরটিও আগামীকাল ঢালাই করা হবে।

এর আগে একই গ্রামে ৪ বছর আগে বজ্রপাতে মারা যাওয়া এক ব্যক্তির মরদেহ কবর থেকে চুরি হয়েছিল বলে জানা যায়। এর পর থেকে গ্রামটিতে ছড়িয়ে পড়ে যে, বজ্রপাতে মৃতদের দেহ খুব দামি হওয়ায় চুরি হয়ে যায়।