তালেবানের আহ্বানে দেশ ছেড়েছে কিছু বাংলাদেশি

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, আফগানিস্তানের সশস্ত্র গোষ্ঠী তালেবানের আহ্বানে সাড়া দিয়ে কিছু বাংলাদেশি ঘর ছেড়ে ‘হিজরতে’ বেরিয়েছেন। রাজধানীর ধানমন্ডিতে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর এলাকা পরিদর্শন শেষে আজ শনিবার দুপুরে সাংবাদিকদের এমন তথ্য জানান তিনি।

ডিএমপি কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম

তিনি বলেন, বর্তমানে সাইবার ওয়ার্ল্ডে বন্দি সমগ্র পৃথিবী। জঙ্গিরাও এই সুযোগ কাজে লাগাচ্ছে। তারাও এই মিডিয়ায় তাদের রিক্রুট ও উদ্বুদ্ধ করছে। তালেবানরা সম্প্রতি আফগানিস্তানে গিয়ে যুদ্ধে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। সেই আহ্বানে সাড়া দিয়ে বাংলাদেশের কিছু মানুষ ‘হিজরতে’ বেরিয়েছে। তাদের মধ্যে ভারতে কিছু গ্রেপ্তার হয়েছে, আবার অনেকে পায়ে হেঁটে আফগানিস্তান যাওয়ার চেষ্টা করছে।

ডিএমপি কমিশনার বলেন, সরকারের সব গোয়েন্দা সংস্থা জঙ্গিদের বিষয়ে তৎপর রয়েছে। এটা বলা যায় না যে, জঙ্গিরা থেমে আছে। তবে আমরাও সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি, যাতে কোনো ধরনের অঘটনা না ঘটে। এরই অংশ হিসেবে চলতি মাসে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক জঙ্গিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

তিনি বলেন, কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিট গত পরশু অনলাইনে বোমা তৈরির লিডিং পর্যায়ের জঙ্গি সংগঠনের একজনকে গ্রেপ্তার করেছে। সে একজন বোমা বিশেষজ্ঞ এবং অনলাইনে অন্যদের বোমা বানানোর প্রশিক্ষণ দিতো। তারা তাদের কার্যক্রমে ধাপে ধাপে উন্নতি করছিল, তবে তাদের পুরো গ্যাংটাকে গ্রেপ্তার করতে পেরেছি আমরা।

ডিএমপি কমিশনার বলেন, আন্তর্জাতিক মিডিয়ার দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলো জঙ্গিদের প্রধান টার্গেট। এ জন্য তারা ১৫ আগস্টকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মনে করে। ১৫ আগস্ট অনুষ্ঠানস্থল না হলেও এর দুই কিলোমিটারের মধ্যেও যদি কোনো অঘটনা ঘটাতে পারে জঙ্গিরা, তাহলে আন্তর্জাতিক মিডিয়ার দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পারবে তারা। এ বিষয়ে আমরা সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় আছি। আমরা মনে করি না যে, এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটবে। তবে আমরা একেবারে কোনো ধরনের আশঙ্কা উড়িয়ে দিচ্ছি না, শঙ্কা তো রয়েছে। তবে যেকোনো ধরনের দুর্ঘটনা এড়াতে সর্বোচ্চ মেধা দিয়ে চেষ্টা করছি আমরা।

আগামীকাল ১৫ আগস্টের নিরাপত্তার বিষয়ে মোহা. শফিকুল ইসলাম বলেন, এদিন ধানমন্ডি ৩২ ও বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করতে যারা আসবেন তাদের প্রত্যেককে হ্যান্ড মেটাল ডিটেকটর দিয়ে তল্লাশি করে আর্চওয়ের ভেতর দিয়ে প্রবেশ করতে হবে। পুলিশের পক্ষ থেকে দর্শনার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে তল্লাশি, ব্লক রেইড ও চেকপোস্টের কার্যক্রম অব্যাহত আছে। ইতোমধ্যে আমরা গোয়েন্দা নজরদারি বাড়িয়েছি। একই সঙ্গে পর্যাপ্ত সংখ্যক পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। ডগ স্কোয়াড ও বোম ডিসপোজাল ইউনিট দিয়ে সুইপিং করা হয়েছে। সিসি ক্যামেরার আওতায় রয়েছে ধানমন্ডি ৩২, বনানী কবরস্থান কেন্দ্রিক অনুষ্ঠানস্থল এবং আশপাশের এলাকা।

ডিএমপি কমিশনার জানান, প্রধানমন্ত্রী সকাল সাড়ে ৭টা পর্যন্ত থাকবেন। এর পর প্রবেশ করবেন আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ। যেহেতু এটা একটা আবেগের জায়গা, তাই পরে জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে। তবে করোনার মহামারির কারণে জনসাধারণকে সেলফি না তুলে দ্রুত স্থান ত্যাগ করার অনুরোধ জানান ডিএমপি কমিশনার। একই সঙ্গে ১৫ আগস্টের কর্মসূচি সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে দোয়া চেয়েছেন তিনি।