তালেবানের ভয়ে নথি নষ্ট করে ফেলছে যুক্তরাষ্ট্র!

তালেবান শেষ পর্যন্ত কাবুল দখলে নেবে, মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থার এমন আশঙ্কা আগে থেকেই ছিলো। কিন্তু তালেবান যে এত দ্রুত কাবুল পৌঁছে যাবে, সে ব্যাপারে তাদের ধারণার মধ্যে ছিল না। মাত্র ১০ দিনের মধ্যে দেশের উল্লেখযোগ্য ১৮টিরও বেশি প্রদেশ দখল করার পর তালেবান এখন কাবুলের পথে। এ অবস্থায় যুক্তরাষ্ট্র নিজেদের দূতাবাস কর্মীদের গুরুত্বপূর্ণ সব নথি ধ্বংস করে ফেলার নির্দেশ দিয়েছে। ব্লুমবার্গ।

কাবুলে মার্কিন দূতাবাস

যুক্তরাষ্ট্র মনে করছে, দূতাবাসের ওইসব স্পর্শকাতর নথিপত্র তালেবানের হাতে পড়লে তা দিয়ে উদ্দেশ্যমূলক প্রচারণা চালানো হতে পারে। এ জন্যই ওই সব ধ্বংস করে ফেলতে চায় যুক্তরাষ্ট্র। গত শুক্রবার দূতাবাস কর্মীদের এ সংক্রান্ত একটি নোটিশ দিয়েছে মার্কিন প্রশাসন।

এতে দূতাবাসের মালামালের মধ্যে স্পর্শকাতর বিষয় কমিয়ে ফেলার পরামর্শ দিয়ে মার্কিন লোগো, পতাকাসহ যেসব জিনিস তালেবানের প্রচারের কাজে অপব্যবহার করা হতে পারে, তার সবই ধ্বংস করে ফেলতে বলা হয়।

বিশ্রাম নিচ্ছে তালেবানের একটি দল

একটি ইমেইলে কীভাবে এসব জিনিস ধ্বংস করতে হবে তার উপায়ও বলে দেয়া হয়েছে। এতে কাগজের জন্য বার্ন বিন ও শ্রেডার, ইলেকট্রনিকসের জন্য ডিসইনটেগ্রাটর (বিভাজক), চিকিৎসা বর্জ্যের জন্য চুল্লি এবং বড় বড় জিনিস চূর্ণ করতে কম্প্যাক্টর ব্যবহারের পরামর্শ দেয়া হয়। তবে ধ্বংসের এ পদ্ধতিগুলো অস্ত্র, গোলাবারুদ ও অনুরূপ সামগ্রীর জন্য উপযুক্ত নয় বলেও সতর্ক করে দেয়া হয়েছে।

সেনা প্রত্যাহারের পর তালেবানরা আবার সক্রিয় হয়ে উঠতে পারে এমন আশঙ্কা যুক্তরাষ্ট্রের আগে থেকেই ছিলো। কিন্তু এতো দ্রুত হবে সেটা তাদের ধারণাতে ছিলো না। দেশটির গোয়েন্দারা পর্যন্ত যেখানে রিপোর্ট দিয়েছো, কাবুলে পৌঁছতে তালেবানের মাসাধিক কাল লেগে যাবে এবং তা আয়ত্তে নিতে আরো দুই মাসের মতো সময় লাগবে, সেখানে ১০ দিনের মধ্যেই তালেবানরা কাবুলের একেবারে কাছে পৌঁছে গিয়েছে।

আর সব জায়গায় যে তালেবানকে লড়াই করে বিজয় অর্জন করতে হচ্ছে তা নয়, বরং অনেক স্থানেই তাদের উপস্থিতিই বিজয়ের জন্য যথেষ্ট বিবেচিত হচ্ছে। তালেবান গিয়ে সমঝোতার বার্তা দিতেই অনেক স্থানে সরকারি বাহিনীর যোদ্ধারা আত্মসমর্পণ করে বিনা বাক্য ব্যয়ে তালেবানের বশ্যতা স্বীকার করে নিচ্ছে।

এসব কারণেই নিজেদের নিরাপত্তা ও গোপনীয় বিষয় নিয়ে আতঙ্কে ভুগছে মার্কিন প্রশাসন।