হেমন্ত: অধিকার খর্ব করতে চাই না, কেউ গোমাংস না খেলে খুশি হব

গত শুক্রবার ভারতের আসাম রাজ্যের বিধানসভায় পাস হয় বিতর্কিত ‘আসাম ক্যাটল প্রিজারভেশন বিল ২০২১’। এই আইন পাশের ফলে কোনো মন্দিরের পাঁচ কিলোমিটারের মধ্যে গোমাংস বিক্রি করা যাবে না। তবে আসামের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত বিশ্বশর্মা জানিয়েছেন, যে কেউ চাইলে গোমাংস খেতে পারেন। কারো খাদ্যাভ্যাসে হস্তক্ষেপ করবে না তার সরকার। তবে কেউ যদি না খান আমি খুশি হব। ইন্ডিয়া টুডে।

আসামের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত বিশ্বশর্মা, ফাইল ছবি

এই বিল পাসের ফলে আসামে হিন্দু, জৈন, শিখ ও অন্যান্য ধর্মের কোনো মন্দিরের পাঁচ কিলোমিটার ব্যাসার্ধের মধ্যে গোমাংস বিক্রি করা যাবে না। পাশাপাশি বৈধ কাগজপত্র ছাড়া আসাম থেকে বা আসামের ওপর দিয়ে কোনো গরু পরিবহণও এ আইনে নিষিদ্ধ করে দেয়া হয়েছে।

গত শুক্রবার আসাম বিধানসভায় এই বিল পাসের পরে বিজেপির বেশ কিছু বিধায়ককে ‘ভারত মাতা কি জয়’ ও ‘জয় শ্রী রাম’ স্লোগান দিতে দেখা যায়। তবে বিরোধী দল কংগ্রেস ও অল ইন্ডিয়া ইউনাইটেড ডেমোক্র্যাটিক ফ্রন্টের বিধায়করা ওয়াকআউট করেন।

গরুর সুরক্ষাতেই পাস হয়েছে নতুন এ বিল

বিলটি পাসের পরে হেমন্ত বলেন, যে সব মন্দির আগে থেকে রয়েছে সেখানেই কেবল এই নিয়ম কার্যকর হবে। নতুন করে মন্দির নির্মাণ করলে সেখানে এই নিয়ম কার্যকর হবে না।

তিনি আরো বলেন, গোমাংস খাওয়ার ব্যাপারে আমরা কারো অধিকার খর্ব করতে চাই না। কিন্তু যদি কেউ গোমাংস না খান তা হলে আমি খুশি হব।

গোমাংস বিক্রির ফলে অনেক জায়গায় ধর্মীয় সঙ্ঘাত হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন হেমন্ত। বরাক উপত্যকা ও লোয়ার অসমে গোমাংসের ফলেই ধর্মীয় সংঘাত ছড়িয়েছিল দাবি করে তিনি বলেন, তাই আমার মনে হয় ধর্মীয় শান্তি বজায় রাখার জন্য মন্দিরের কাছে গোমাংস বিক্রি বন্ধ এক উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ।

এই বিলে বলা হয়েছে, শুধুমাত্র সরকারি অনুমতিপ্রাপ্ত দোকানেই গোমাংস বিক্রি করা যাবে। পশু চিকিৎসকরা গরুদের পরীক্ষা করে প্রশংসাপত্র দেবেন। অনুমতি ছাড়া কোনো দোকানে গোমাংস বিক্রি করলে ৫ লক্ষ টাকা জরিমানা বা সর্বাধিক আট বছর পর্যন্ত জেল হতে পারে।

তবে বিরোধীপক্ষ দাবি করছেন, কোনো মন্দিরের পাঁচ কিলোমিটারের মধ্যে গোমাংস বিক্রি করা যাবে না- এটি একটি আইওয়াশ। কারণ আসামের বেশিরভাগ জায়গাতেই এ ব্যবধানের মধ্যেই একাধিক মন্দির রয়েছে। এ আইনে আসলে একটু পরোক্ষভাবে গোমাংস বিক্রি পুরোপুরিই উঠিয়ে দেয়া হয়েছে।