দোহায় সংলাপ: তালেবানকে বুঝ দিলো কাতার

দোহায় তালেবানের সঙ্গে এক সংলাপে আফগানিস্তানে যুদ্ধবিরতি কার্যকর করার জন্য তালেবানকে আহ্বান জানিয়েছে কাতার কর্তৃপক্ষ। শনিবার (১৪ আগস্ট) কাতারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং তালেবানের শীর্ষ প্রতিনিধিদলের মধ্যে এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠক শেষে বিবৃতিতে একটি ঘোষণা দেওয়া হয়। সেখানে বলা হয়, সামরিক শক্তি ব্যবহার করে আফগানে কোনো সরকার গঠিত হলে তাতে স্বীকৃতি দেওয়া হবে না।

কাতারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ বিন আবদুল রহমান আল থানি

বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন কাতারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ বিন আবদুল রহমান আল থানি এবং তালেবানের পলিটিক্যাল ব্যুরোর প্রধান মোল্লা আবদুল ঘানি বারদার।

আফগানিস্তানে শান্তি ফেরাতে কাতারের মধ্যস্থতায় তালেবানের সঙ্গে ধারাবাহিক যে সংলাপ হচ্ছে এই বৈঠকটি তারই একটি অংশ। বৈঠকে তালেবানকে কাতারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সংঘাত না বাড়াতে এবং একটি কার্যকর যুদ্ধবিরতিতে আসার প্রস্তাব দেন।

এর আগে ১২ আগস্ট দোহায় তালেবান প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক করেন যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূতরা। চীন, পাকিস্তান, জাতিসংঘ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং অন্যান্য দেশ ও সংস্থার প্রতিনিধিরা তালেবান নেতাদের সঙ্গে কথা বলেন।

এর আগে গত মাসে তালেবানের সঙ্গে সমঝোতায় বসে আফগান সরকারি প্রতিনিধি দল। ওই বৈঠকেও বলা হয়, আফগানের শান্তি প্রক্রিয়ার সমাধান হতে হবে রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে।

সামরিক বা জোর করে ক্ষমতা দখল করলে তা শান্তি ফেরাতে পারবে না। তালেবান প্রতিনিধি দলও রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় আগাতে চায় বলে জানানো হয়। তবে তালেবানের শর্ত হলো, ঘানি সরকারকে পদত্যাগ করলে তবেই রাজনৈতিক সমাধানে আসবে তালেবান।

ওই সংলাপে তালেবান আরো জানিয়েছিল, তারা আফগানিস্তানেএকটি কল্যাণমূলক ইসলামি সরকার গঠন করতে চায়। বৈঠকে যুদ্ধবিরতির ব্যাপারে কোনো আলোচনা হয়নি। ঘানি সরকার তালেবানের অগ্রগতি ঠেকাতে চেষ্টা করলেও তারা পারেনি।

এদিকে তালেবান একের পর এক প্রাদেশিক রাজধানী দখল করে নিচ্ছে। সর্বশেষ খবরে তালেবান আফগানিস্তানের ৩৪টি প্রদেশের মধ্যে ২৩টি দখলে নিয়েছে বলে জানা গেছে। তারা কাবুল শহরকে চারপাশ থেকে ঘিরে ফেলেছে। কাবুলের ওপর এখন তালেবানের তপ্ত নিঃশ্বাস।

এদিকে ইরানভিত্তিক পার্সটুডের এক খবরে বলা হয়েছে, আফগানিস্তানে ঘানি সরকার শিগগির সরে দাঁড়াতে পারে এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র একটি বেসামরিক কর্তৃপক্ষের হাতে ক্ষমতা বুঝিয়ে দিয়ে আফগান ত্যাগ করবে।

আল অ্যারাবিয়ার বরাত দিয়ে ওই খবরে বলা হয়েছে, আফগানিস্তানে তালেবানবিরোধী আরেকটি সরকার যুক্তরাষ্ট্র কায়েম করতে চায়।