আসিফ নজরুলের কক্ষে তালা

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুলকে হুমকির পর এবার তার কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে ছাত্রলীগ। আজ বুধবার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এক কর্মসূচি শেষে সংগঠনটির নেতাকর্মীরা এ ঘটনা ঘটান বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন। তবে বিষয়টি নিশ্চিত করলেও ছাত্রলীগ বা কর্তৃপক্ষের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

আসিফ নজরুলে কক্ষে তালা

গত মঙ্গলবার নিজের ফেসবুক ভেরিফাইড পেজে আসিফ নজরুল লিখেছিলেন, ‘সুষ্ঠু নির্বাচন হলে বাংলাদেশেও হতে পারে কাবুল বিমানবন্দরের মতো দৃশ্য।’ এ ঘটনায় রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগ এনে যেকোনো মূল্যে তাকে বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়া করতে প্রশাসনের প্রতি দাবি জানিয়েছে ছাত্রলীগ।

এদিন ১৭ আগস্ট সিরিজ বোমা হামলা দিবস উপলক্ষে কালো পতাকা উত্তোলন ও এক মিনিটের নীরবতা পালন করে ছাত্রলীগ। এতে সংগঠনটির সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় বলেন, আসিফ নজরুলকে যেকোনো মূল্যে বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়া করতে হবে। তিনি দেশের উন্নয়নের পক্ষে অবস্থান না নিয়ে নুরু ও শিবির গং এবং জঙ্গিগোষ্ঠীর পক্ষে দাঁড়িয়েছেন। ৫০ লাখ নেতাকর্মীর ছাত্রলীগ ধাওয়া করলে পাকিস্তানে পালানোর সময় পাবেন না।

কর্মসূচিতে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা

আসিফ নজরুলকে ‘শিক্ষক নামের কলঙ্ক’ আখ্যা দিয়ে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য বলেন, বিভিন্ন সময় জামায়াত-শিবির ও জঙ্গিদের নিয়ে উস্কানিমূলক কথা বলেছেন তিনি। গণপিটুনি দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাটি থেকে বিতাড়িত করা হবে তাদের।

এর আগেও শিবির করলে মারতে হবে কেন, প্রশ্ন তুলেছিলেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, এবার তালেবানি আদর্শপুষ্ট বিএনপি-জামায়াতের দালালি করতে ফেসবুকে দুঃসাহস দেখিয়েছেন। আমরা বলে দিতে চাই, ধর্মীয় উগ্রবাদী কোনো গোষ্ঠীর এদেশে রাজনীতি করার অধিকার নেই, শিবির করলেই মারতে হবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের উদ্দেশে ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, যেকোনো মূল্যে তাকে বিতাড়িত করুন। প্রশাসন ব্যবস্থা না নিলে আমরাই দায়িত্ব হাতে তুলে নেব। এদের কীভাবে শায়েস্তা করতে হয়, তা আমরা ভালো করেই জানি। অনেক বড় রাঘববোয়ালরাও লেজ গুটিয়ে পালিয়েছে, দুঃসাহস দেখানোর অবকাশ নেই। আমরা তাদের রুখে দাঁড়াবোই।

আসিফ নজরুলের ফেসবুক পোস্ট

এর আগে গতকাল মঙ্গলবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে আসিফ নজরুলের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ (একাংশ)। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে চাকরিচ্যুতসহ তাকে দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি করা হয়। অধ্যাপক আসিফ নজরুলের কুশপুত্তলিকাদাহ করার পাশাপাশি তার কক্ষে তালা লাগিয়ে দেন সংগঠনটির নেতাকর্মীরা।

এর ফলে অধ্যাপক আসিফ নজরুলের কক্ষে ঝুলছে ছাত্রলীগ ও মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের দেয়া অতিরিক্ত দুটি তালা। এ ছাড়া কক্ষটির দরজায় ও দেয়ালে বিভিন্ন দাবি সংবলিত পোস্টার শোভা পাচ্ছে। এগুলোতে আসিফ নজরুলকে জামায়াত-শিবিরের এজেন্ট, আইএসআই’র পেইড এজেন্ট, দেশদ্রোহী, জঙ্গিবাদের মদদদাতা এবং তালেবানদের দালাল আখ্যায়িত করে বিচার চাওয়া হয়েছে।