স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী: বরিশালের ঘটনা ‘তেমন কিছু না’

বরিশাল সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুনিবুর রহমানের বাসভবনে হামলা এবং সংঘর্ষের ঘটনায় মুখোমুখি অবস্থানে চলে গিয়েছিল স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও প্রশাসন। এ নিয়ে দেশব্যাপী ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি হয়। তবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বিষয়টিকে বড় করে দেখতে নারাজ। তিনি বলছেন, বরিশালের ঘটনা ‘তেমন কিছু না’।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল

আজ সোমবার (২৩ আগস্ট) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে একটি আলোচনা সভার আয়োজন করে ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রলীগ। সেই অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিতে গিয়ে এমন মন্তব্য করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, রাজনীতি করতে গেলে প্রশাসনের সঙ্গে এমন ভুল বোঝাবুঝি হতেই পারে। এটা নতুন কিছু নয়।

এদিকে বরিশালের আলোচিত-সমালোচিত এই ঘটনা অবশেষে সমঝোতার মধ্য দিয়ে সুরাহা হয়েছে। গতকাল রোববার রাত সোয়া ৯টার দিকে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয় বরিশাল বিভাগীয় কমিশনার সাইফুল ইসলাম বাদলের সরকারি বাসভবনে। রাত পৌনে ১১টায় বৈঠক শেষ করে হাসিমুখে বেরিয়ে আসেন সবাই। জানা যায়, ঘটনাটি মিটমাট হয়ে গেছে। উভয়পক্ষ থেকেই মামলাগুলো তুলে নেওয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হয়েছে।

ইউএনওর বাসভবনে হামলা ও সংঘর্ষ

সমঝোতা শেষে বাইরে এসে সবাই ফটোসেশনে অংশ নেন। বৈঠকে অংশ নেওয়া মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট এ কে এম জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, ঘটনাটিকে যতটা বড় করে দেখা হয়েছে, আসলে বিষয়টা ততটা বড় নয়। সামান্য ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হয়েছিল, আলোচনার মাধ্যমে সেটার সমাধান হয়েছে। নান্দনিক বরিশাল গঠনে আবার সবাই একত্রে কাজ করবেন।

জানা যায়, গত ১৮ আগস্ট রাতে বরিশাল সদর উপজেলা পরিষদ কম্পাউন্ডে ব্যানার সরাতে যায় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এসময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বাসার নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা লোকজন রাতে ব্যানার সরাতে নিষেধ করেন। এর পরও তারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বাসার দিকে অগ্রসর হতে চাইলে পুলিশ বাধা দেয়। এতে হট্টগোল এবং এক পর্যায়ে সংঘর্ষ বেধে যায়।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ফাঁকা গুলি ছোড়ে। সেইসঙ্গে দফায় দফায় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী ও স্থানীয়দের সঙ্গে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। ওই সময় নিরাপত্তার স্বার্থে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বাসার আনসার সদস্যরা ফাঁকা গুলি ছোড়েন। সংঘর্ষে দুই পুলিশ, এক আনসার সদস্যসহ ৩৫ জন আহত হয়েছেন।

ঘটনার পরদিন পৃথক দুটি মামলা করেছেন পুলিশ ও ইউএনও। সেখানে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের ৩০ নেতাকর্মীসহ অজ্ঞাত ৬০২ জনকে আসামি করা হয়। এরপর চারদিনের মাথায় এসে ইউএনও মুনিবুর রহমানের বিরুদ্ধে মামলার আবেদন করা হয় আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে। অভিযোগ করা হয়েছে- বিসিসির কাজে বাধাদান, বিনা উসকানিতে বিসিসির কর্মচারীদের ওপর গুলিবর্ষণের নির্দেশ প্রদান এবং হামলা করেছেন ইউএনও।