তালেবানকে স্বীকৃতি: কোন দেশ কী বলছে
- Details
- by আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আজ থেকে দুই দশক আগে অর্থাৎ ২০০১ সালে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার আগে তালেবান পাঁচ বছর আফগানিস্তানের শাসনক্ষমতায় ছিল। সে সময় তাদের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে মতবিরোধ থাকায় সে সরকারকে অনেকেই স্বীকৃতি দেয়নি। এর ফলে আন্তর্জাতিকভাবে বিভিন্ন বিধিনিষেধের মুখে পড়তে হয়েছিল তাদের। ২০ বছর পরে এসে অনেকটাই পরিপক্ক আচরণ করছে তালেবান। সব বিষয়ে তাড়াহুড়ো পরিত্যাগ করে ধীরে সুস্থে এগুতে চাইছে তারা। সমালোচনার ইস্যুগুলোতে নজর দিয়ে ভিন্ন পদক্ষেপ নিচ্ছে। ফলে কড়া সমালোচক দেশগুলোর পক্ষ থেকেই স্বীকৃতির আভাস মিলতে শুরু করেছে।
নিজেদের মধ্যে বৈঠক করছেন তালেবান নেতারা
আগস্টের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে তালেবান যখন দ্রুতগতিতে বিভিন্ন শহর-প্রদেশ দখল করে রাজধানীর দিকে এগুচ্ছিল, তখন বিভিন্ন দেশ এক যৌথ বিবৃতিতে জানিয়েছিল, অস্ত্রের মুখে বা সংঘাতের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করলে তালেবানকে স্বীকৃতি দেয়া হবে না। বিষয়টি খুবই গুরুত্বের সাথে নিয়েছিল তারা। ফলে কাবুল, জালালাবাদ, মাজার-ই-শরীফসহ গুরুত্বপূর্ণ বেশ কিছু এলাকা বিনা রক্তপাতেই দখলে নেয় তালেবান। একই সাথে স্বীকৃতি পাওয়ার পথে প্রথম বাধাটি অপসারণে সক্ষম হয় দলটি।
দ্বিতীয় পর্যায়ে অন্তর্ভুক্তিমূলক সরকার গঠনের চাপ আসে পাকিস্তানসহ বিভিন্ন দেশ থেকে। এখন পর্যন্ত যতটুকু খবর পাওয়া গেছে, তাতে দেখা যায়, বিভিন্ন স্থানীয় দল, প্রভাবশালী নেতৃবৃন্দের সাথে এ ব্যাপারে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে তালেবান। গোষ্ঠীটির একজন মুখপাত্র এ-ও জানান, দেশে উপস্থিত প্রায় সকলের সাথেই তারা আলোচনা করছেন। তবে যেহেতু এখন পর্যন্ত তালেবান সরকার গঠন করেনি, তাই স্বীকৃতি দেয়ার প্রশ্নও আসেনি।
আফগানিস্তানের সাবেক প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাই এবং সদ্য সাবেক সরকারের প্রধানমন্ত্রী আব্দুল্লাহ আব্দুল্লাহর সঙ্গে বৈঠকে তালেবান প্রতিনিধি দল
বিভিন্ন দেশ অবশ্য হবু তালেবান সরকারকে স্বীকৃতি দেয়ার জন্য কিছু শর্তারোপ করেছে। যেমন- ব্রিটিশ সরকারের পক্ষ থেকে দেয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, তালেবানদের যেকোনো স্বীকৃতি এবং তাদের সাথে যেকোনো চুক্তি অবশ্যই দেশ ছাড়তে ইচ্ছুকদের নিরাপদ প্রবেশের অনুমতি এবং মানবাধিকারের প্রতি তাদের (তালেবানের) সম্মানের ওপর নির্ভর করবে।
যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন মঙ্গলবারের মধ্যে কাবুল থেকে তার দেশের রাষ্ট্রদূত ও কূটনীতিকদের প্রত্যাহারের পরিকল্পনা করছেন। এক্ষেত্রে তালেবান সরকারকে স্বীকৃতি দেয়ার বিষয়ে তার প্রশাসনের সিদ্ধান্তে কিছু সময় লাগতে পারে।
তালেবানকে স্বীকৃতি দিতে রাশিয়ার অবস্থান সম্পর্কে দেশটির প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বিশেষ দূত জমির কাবুলভ বলেন, মস্কোকে আফগানিস্তানের নতুন সরকারের সাথে সম্পর্ক গড়ে তুলতে হবে। দীর্ঘদিন ধরে তারা এর জন্য অপেক্ষা করছে।
এদিকে তুরস্কের সাথে কাবুল বিমানবন্দর বিষয়ক যে চুক্তি হয়েছে, তার অন্যতম প্রধান শর্ত হচ্ছে- আঙ্কারা তালেবানকে স্বীকৃতি দিবে। চুক্তিটির খসড়া অনুমোদন হয়ে গেছে, এখন চূড়ান্ত হওয়ার অপেক্ষা। আর তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান রোববার বলেছেন, তার দেশের লক্ষ্য হচ্ছে আফগানিস্তানকে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সমস্যা থেকে উদ্ধার করা। আঙ্কারা এক্ষেত্রে সব ধরনের সহায়তা দিতে প্রস্তুত। উল্লেখ্য, এ চুক্তিতে কাতারও রয়েছে। ফলে ধারণা করা হচ্ছে, কাতারের স্বীকৃতিও তালেবানের অধরা থাকবে না।
তালেবানের সবচেয়ে বড় মিত্র পাকিস্তানকে তারা পাশে পাবে বলেই ধারণা করছে। পাকিস্তানের পক্ষ থেকে শুরু থেকেই বলা হচ্ছিল, আফগান জনগণ যাদের মেনে নেবে, ইসলামাবাদের সেক্ষেত্রে ভিন্ন কোনো পছন্দ নেই। তালেবানরা সব গোষ্ঠীর অংশগ্রহণে যে অন্তর্ভুক্তিমূলক সরকার গঠনের পথে হাঁটছে, তা এক হিসেবে পাকিস্তানের পরামর্শ ছিল।
যেকোনো দেশের এগিয়ে চলার ক্ষেত্রে প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলোর ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। আফগানিস্তানের চার পাশে থাকা দেশগুলো তালেবানকে খোলাখুলিভাবে সমর্থন না করলেও অসহযোগিতার কথাও তেমন শোনা যায়নি। ফলে পরিস্থিতি বুঝে তারাও তালেবান সরকারকে মেনে নিতে তথা স্বীকৃতি দিতে পারে। সূত্র: আলজাজিরা।
গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...
খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর
Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.
Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.